২০১৩ সালের ৫ মে রাতে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নৃশংস যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল সেটার স্মরণে ৫ মে ‘শাপলা চত্বর গণহত্যা দিবস’ রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। এছাড়া সংগঠনটির অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা বাতিল করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা জারি এবং পবিত্র কোরআন ও ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইন করা।
এছাড়া জুলাই সনদেও ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা গণহত্যাকাণ্ড এবং ২০২১ সালের মোদিবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ রাখার কথা বলেছে সংগঠনটি।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ সাজিদুর রহমানের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সম্প্রতি শহীদ আবরার ফাহাদ হত্যা ও পিলখানা ট্রাজেডি স্মরণে নতুন দুটি জাতীয় দিবস করা হলেও ৫ মের গণহত্যার দিনকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করা হয়নি। আমরা মনে করি, সচেতনভাবে এটি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের একটি সেকুলার চক্র ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে এদেশের আলেম-ওলামা, মাদরাসা শিক্ষার্থী ও ধর্মপ্রাণ জনতার ত্যাগ-তিতিক্ষাকে আমাদের জাতীয় জীবনে স্থান দিতে চায় না। এটি হতে দেওয়া যাবে না। সরকারকে অবিলম্বে ৫ মে দিনটিকে শাপলা চত্বর গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে। তা নাহলে আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে আমরা ধরে নেবো এবং বঞ্চনার বিরুদ্ধে আমরা রুখে দাঁড়াবো ইনশাআল্লাহ।
হেফাজতের দাবি-দাওয়া ও কর্মসূচিগুলো হলো-
১. অনতিবিলম্বে সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা বাতিল করে পুরনো গণদাবি ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা জারি করতে হবে।
২. কুরআন অবমাননার দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া দীর্ঘ বিচারহীনতাপ্রসূত আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ঠেকাতে মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ সব ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় অনুভূতির সুরক্ষায় ধর্ম অবুমাননার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর আইন করতে হবে। কাঠামোগত ইসলামবিদ্বেষ দূর করতে হলেও কঠোর আইন জরুরি।
৩. রাষ্ট্রীয়ভাবে ৫ মে তারিখকে শাপলা চত্বর গণহত্যা দিবস ঘোষণা করতে হবে।
এ সময় হেফাজত মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, কোনো অভিভাবক তার সন্তানকে নাচ-গান শেখাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেন না। সংগীতের চেয়ে মুসলমানদের সন্তানদের ধর্ম শিক্ষা জরুরি। কোরআন আবমাননার জন্য শাস্তিযোগ্য আইন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে দোয়া ও মোনাজাত করেন হেফাজতের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির মুফতি জসিম উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, সহকারী মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি প্রমুখ।
এলএইস/