মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের বরুণা মাদরাসা মসজিদে আবু বকর (রহ.) প্রাঙ্গণে বৃটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত ইলহামী, ইসলাহী ও অরাজনৈতিক দ্বীনি সংগঠন আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর বার্ষিক ইসলাহী জোড় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল শনিবার (১১ অক্টোবর ২০২৫) সকাল ১১টা থেকে শুরু হয়ে পরদিন বাদ ফজর আমীরে আঞ্জুমান হযরত মুফতি মুহাম্মদ রশীদুর রহমান ফারুক বর্ণভী (পীর সাহেব বরুণা)-এর অশ্রুসিক্ত আখেরী মুনাজাতের মধ্য দিয়ে জোড়ের আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি হয়।
সমাপনী অধিবেশনে আমীরে আঞ্জুমান বলেন, “আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ একটি ইলহামী, ইসলাহী ও অরাজনৈতিক দ্বীনি সংগঠন। দ্বীনবিমুখ মানুষকে দ্বীনের পথে ফিরিয়ে আনা এবং সাধারণ মুসলমানদের মাঝে জরুরিয়াতে দ্বীনের শিক্ষা পৌঁছে দেওয়াই আমাদের উদ্দেশ্য। প্রতিটি মুসলমানের উচিত নিজের ও পরিবারের ঈমান-আমলের পরিশুদ্ধির জন্য ঘরে ঘরে দ্বীনি তালীমের ব্যবস্থা করা।”
তিনি আরও বলেন, “আঞ্জুমানের ইসলাহী কার্যক্রম দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সংগঠনের শাখা কমিটি গঠনের কাজ চলছে। আল্লাহর ওলীদের দোয়া ও বরকতে এই দ্বীনি দাওয়াত সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ুক—এটাই আমাদের কামনা।”
জোড়টি যৌথভাবে পরিচালনা করেন আঞ্জুমানের যুগ্ম মহাসচিব হাফিজ মাওলানা শেখ সা‘দ আহমদ আমীন বর্ণভী এবং প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা শাব্বীর আহমদ ফতেহপুরী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ওলামা-মাশায়েখ—মাওলানা আবু সাবের আব্দুল্লাহ, মাওলানা সাইদুর রহমান বর্ণভী, মাওলানা আহমদ মায়মুন, মাওলানা ওলীউর রহমান বর্ণভী, মাওলানা মুসা আল হাফিজ, মাওলানা আব্দুল কাদির বাগেরখালী, মাওলানা ইয়াকুত বর্ণভী, মাওলানা আব্দুল খালিক চলিতাতলী, মাওলানা আব্দুল হাই, মাওলানা মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, মাওলানা হুসাইন আহমদ নূরী চৌধুরী, অধ্যাপক আব্দুস সবুর, মাওলানা নজমুল হুদা চৌধুরী, মাওলানা রশীদ আহমদ হামিদী, মাওলানা আবদাল হোসেন খান, মুফতি ফয়জুল্লাহ আশরাফী, মাওলানা শেখ আহমদ আফজল বর্ণভী, মাওলানা গিয়াস উদ্দীন, মাওলানা সাইফুর রহমান মক্কী, মাওলানা শেখ আব্দুর রহমান আসজাদ বর্ণভী, মুফতি আব্দুল্লাহ ফিরোজী প্রমুখ।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে দিন-রাতব্যাপী এই ইসলাহী জোড় আত্মশুদ্ধি, আমল ও তাকওয়ার দাওয়াতে মুখরিত হয়ে ওঠে।
আখেরী মুনাজাতে আমীরে আঞ্জুমান দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে আবেগভরা দোয়া পরিচালনা করেন। তাঁর মুনাজাতের সময় প্রাঙ্গণ জুড়ে প্রতিধ্বনিত হয় হাজারো মুসল্লির কণ্ঠে “আমিন, আমিন”—অনেকে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।