কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে স্থানীয় একটি মসজিদের মুয়াজ্জিনকে বেধড়ক মারধর করে সাদমান সাকিব অর্ক (২৩) নামে এক যুবক। পরে স্থানীয় মুসল্লিরা ভুক্তভোগী মুয়াজ্জিনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগীর বাড়ি লক্ষ্মীপুরের কমলনগর থানার চরমার্টিন গ্রামের বাসিন্দা।
অভিযুক্ত অর্ক উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের ছাতিয়ানী উত্তরপাড়ার মো. আব্দুল খালেকের ছেলে। অর্ক নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজধানীর মিরপুর এলাকার সমন্বয়ক দাবি করে বলে জানা গেছে।
ন্যাক্কারজনক এ ঘটনাটি ঘটেছে একই গ্রামের উত্তরপাড়া বায়তুন নূর জামে মসজিদের ভেতরে। ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগী মুয়াজ্জিন মো. ইমরান হোসাইন কথিত সমন্বয়ক সাদমান সাকিব অর্ক ও তার বাবা মো. আব্দুল খালেকের নামে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া যুবক ও তার বাবা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে আছেন বলে জানা গেছে।
থানায় দায়ের অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (১৮ জুন) বাদ মাগরিব উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের ছাতিয়ানী উত্তরপাড়া বায়তুন নূর জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. ইমরান হোসাইন স্থানীয় একজন মুসল্লির সাথে খাবার আনার বিষয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় আব্দুল খালেক নামে অপর একজন মুসল্লি বিনা কারণে তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। গালমন্দের কারণ জানতে চাইলে আব্দুল খালেক মুয়াজ্জিনের ওপর চড়াও হন এবং তাকে মারধর করতে উদ্ধত হন। পরে মুসল্লিদের প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ সময় আব্দুল খালেক মুয়াজ্জিনকে দেখে নেওয়ার হুমকি-ধমকি দিয়ে বাড়ি চলে যান। বিষয়টি নিয়ে রাতেই ভুক্তভোগী মুয়াজ্জিন মসজিদ কমিটির সাথে আলাপ করেন। তাকে অযথা গালমন্দ করাসহ হেনস্থার বিষয়ে বিচার প্রার্থী হয়। ওইদিন বাদ এশা মসজিদ কমিটির সদস্যসহ মুসল্লিরা মসজিদের ভেতরে বসে মুয়াজ্জিনের সাথে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছিলেন। মসজিদে বিচার হচ্ছে এমন খবর শুনে বুধবার রাত অনুমান সাড়ে নয়টায় আব্দুল খালেক ও তার ছেলে সাদমান সাকিব অর্ক দৌড়ে এসে মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে। পুনরায় মুয়াজ্জিনকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে এবং বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে অর্ক ও তার বাবা মুসল্লিদের সামনেই মুয়াজ্জিনকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুসি ও লাথি মারতে থাকে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে মুসল্লিদের প্রতিবাদের মুখে হামলাকারীরা মসজিদ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করে। যাওয়ার সময় মুয়াজ্জিনকে চাকরিচ্যুত ও দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।
পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত মুয়াজ্জিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ করেন এবং হামলাকারীদের বিচার চেয়ে পরদিন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।