আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ২০২১ সালে সারাদেশ ৮১০টি ধর্ষণের, ২২৫টি দলবদ্ধ ধর্ষণের, ১৯২টি ধর্ষণের চেষ্টা, ৯৬টি উত্যক্তকরণ ও যৌন হয়রানি ও ১১৪টি যৌতুকের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
বুধবার (১৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সুফিয়া কামাল ভবন মিলনায়তনে সংগঠনটি আয়োজিত 'বাংলাদেশে নারী ও কন্যা নির্যাতন চিত্র ২০২১: ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা, যৌন হয়রানি ও যৌতুক' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়।
দেশের ১২টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদরে প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পাঠাগার উপ-পরিষদ সমীক্ষা করে। সমীক্ষার তথ্য উপস্থাপন করেন সংগঠনটির গবেষণা কর্মকর্তা আফরুজা আরমান।
তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোর মতো ২০২১ সালেও ধর্ষণের শিকার নারী ও কন্যার সংখ্যা বেশি। নারীদের তুলনায় কন্যারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে বেশি। ১৪-১৮ বছরের কন্যারা ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ও দলবদ্ধ ধর্ষণে শিকার হয়েছে যথাক্রমে ১৮, ১১ ও ৩১ শতাংশ। উত্যক্তকরণ ও যৌন হয়রানির ক্ষেত্রে ১৪-১৩ বছরের শিশুর সংখ্যা ২২ শতাংশ। যৌতুকের ক্ষেত্রে ১৮-২২ বছরের নারীরা সাধারণত বেশি নির্যাতনের শিকার, যার হার ২২ শতাংশ।
কন্যাদের মধ্যে ৬-১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বেশি। ধর্ষণের ক্ষেত্রে এই হার ৪৫ শতাংশ, দলবদ্ধ ধর্ষণের ক্ষেত্রে ৫২ শতাংশ এবং উত্যক্তের ক্ষেত্রে ৬৭ শতাংশ। কর্মজীবী নারীদের তুলনায় গৃহিণীরাই বেশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। যৌতুকের জন্য ৮৩ শতাংশ, ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, উত্যক্তকরণ, ধর্ষণের চেষ্টায় যথাক্রমে ৩৬, ৩৭, ১৭ এবং ৪৬ শতাংশ গৃহিণী নির্যাতনের শিকার হন। এই গবেষণায় ১৮ বছরের কম বয়স্কদের কন্যা এবং ১৮ বছরের বেশি বয়স্কদের নারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা যায়, শিশুরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরিচিত মানুষ, বিশেষ করে নিকট আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে ২৬ শতাংশের বয়স ১১-৩০ বছর। দলবদ্ধ ধর্ষণের ক্ষেত্রে ২৬ শতাংশের বয়স ১৬-৩০ বছর এবং উত্যক্তের ঘটনায় ৮৫ শতাংশের বয়স ১৬-৩০ বছর। কন্যা ও নারী সবচেয়ে বেশি ধর্ষণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে চালক দ্বারা, যা যথাক্রমে ৫ ও ৩ শতাংশ।
অপরদিকে, উত্যক্তকরণ ও যৌন হয়রানি এবং ধর্ষণের চেষ্টা ক্ষেত্রে, নারী ও কন্যা সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হন শিক্ষক দ্বারা, যা যথাক্রমে ১৭ ও ১৩ শতাংশ।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নানা ধরনের গবেষণা করে। তবে এটা ঠিক গবেষণা নয়, সমীক্ষা। সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদ থেকে এই গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই গবেষণা থেকে নারীর প্রতি সহিংসতার ধরন (প্যাটার্ন) বা কোন ধরনের অপরাধ বেশি হয় তা বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে।
-এসআর
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                 
                      
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                        