বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৬ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
এক লাফে ভরিতে ৮৩৮৬ টাকা কমল স্বর্ণের দাম জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াতে ইসলামী ১৮তম জাতীয় তাফসিরুল কুরআন মাহফিল ২০ ও ২১ নভেম্বর ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বিশ্বের প্রভাবশালী ইহুদিদের চিঠি  গণভোট নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে জটিলতা তৈরির অভিযোগ জামায়াতের ‘পাঁচ দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে’ জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে বিশেষজ্ঞদের সাথে ঐকমত্য কমিশনের সভা শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা দিতে ছয় দফা সুপারিশ চিকিৎসকদের  ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, কারাগারে অভিযুক্ত বুয়েট শিক্ষার্থী  ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান উপদেষ্টা রিজওয়ানার

মোঘল স্থাপত্যশৈলিতে নির্মিত আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ। সেখানে দশ হাজার মুসল্লী এক সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।

মোঘল স্থাপত্যশৈলিতে নির্মিত এ মসজিদটি সমতল ভুমি থেকে প্রায় ত্রিশফুট উপরে পাহাড় চূড়ায় অবস্থিত। যে মসজিদটিকে সাহিত্যবিশারদ আব্দুল করিম তার ইসলামাবাদ বইয়ে আন্দরকিল্লা টিলার উপর অবস্থিত চট্টগ্রামের আদি মসজিদ বলে উল্লেখ করেছেন।

মূল মসজিদের নকশা অনুযায়ী এটি ১৮ গজ দৈর্ঘ্য, সাড়ে ৭ গজ প্রস্থ। মসজিদের প্রতিটি দেওয়াল প্রায় আড়াই গজ পোড়ো। পশ্চিমের দেওয়াল পোড়ামাটির এবং তিনটি দেওয়াল পাথরের তৈরি। মসজিদটির পূর্বে তিনটি, উত্তর এবং দক্ষিণে একটি করে মোট ৫টি প্রবেশদ্বার রয়েছে। মসজিদটিতে তিনটি মেহরাব থাকলেও সাধারণত মাঝের সর্ববৃহৎ মেহরাবটিই ব্যবহৃরিত হয়ে থাকে।

মাঝখানে একটি বড় ও এর দুপাশে দুটি ছোট্ট গম্বুজ দ্বারা নির্মিত মসজিদটি কৌশলগত দিক থেকে দিল্লির ঐতিহাসিক শাহী জামে মসজিদের প্রতিচ্ছবি। দিল্লির জামে মসজিদের আদলে বড় বড় পাথরের ব্যবহারে নির্মিত বলে এ মসজিদকে পাথরের মসজিদ বলা হয়। মসজিদটি চট্টগ্রাম অঞ্চলে মুসলিম স্থাপত্য অঙ্গনে নতুনত্ব দিয়েছে। যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে মোঘল সম্রাজ্যের এক গর্বের ইতিহাস।

এ মসজিদের দৈনিক দুই হাজার এবং শুক্রবার ৮ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। প্রতি জুমার দিন এখানে নামাজ পড়তে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা উপস্থি হন। তবে রমজান মাসে এ সংখ্যা বেড়ে যায় অনেক। এছাড়াও রোজা ফিরতা এবং ঈদের চাদ দেখার ক্ষেত্রে চট্টগ্রামবাসি আন্তরিকভাবে মেনে চলেন।

মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি ব্যবসায়ী ইউসুফ হোসেন বলেন, আমি এই মসজিদে নিয়মিত ওয়াক্ত ও জুমার নামায় পড়ি। এখানে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ নামাজ পড়তে আসেন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার যে, এখানে নামাজ পড়লে আত্নার একটা শান্তি যাওয়া যায়।

অনেকে আবার শখের বসে নামাজ পড়তে আসে। এখানে চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে বলেন জানান মুসল্লিরা।

মসজিদটির প্রধান ইমাম মাওলানা মো. আনোয়ারুল হক আজহারী জানান, এ মসজিদ একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে সকলের কাছে প্রসিদ্ধ। ইংরেজরা এসে মসজিদের ভিতরের উচু স্থানকে কেল্লা ও অস্ত্রাগার হিসেবে ব্যবহার করেছিল অনেক দশক যাবৎ। পরে এটি শায়েস্তা খাঁর পরিবার ইংজেরদের থেকে দখল করে মুসলমাদের ইবাদতের জন্য তীর্থ স্থানে পরিণত করেন।

জানা যায়, চট্টগ্রাম বিজয়কে স্মরণীয় রাখতে মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের নির্দেশে ১৬৬৭ সালে বাংলার সুবেদার শায়েস্তা খাঁর পুত্র বুজুর্গ উমেত খাঁ আন্দরকিল্লার উচ্ছ একটি স্থানে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৭৬১ সালে এ মসজিদটি ইংরেজদের দখলে চলে যায়। তারা প্রায় ৯৪ বছর পর্যন্ত নিজেদের দখলে রাখে এ মসজিদ। যার ফলে এখানে ইবাদত বন্দেগী করা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেনন অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান।

১৮৫৩ সালে প্রথম এবং ১৮৫৫ সালে দ্বিতীয়বার চট্টগ্রামের মুসলমানরা তৎকালিণ জমিদার হামিদুল্লাহ খাঁ নেতৃত্বে মসজিদটি ফিরে ফেতে সেসময়ের বঙ্গরাজ্যের গভর্নরের কাছে আবেদন জানান। আবেদন মঞ্জুর হলে হামিদুল্লাহ খাঁ ১৮৫৬ সালে প্রয়োজনীয় মেরামত ও একটি শিলালিপি স্থাপন করে ১৩৩ বছর পর এ স্থাপত্যকে পুনরায় মসজিদে পরিণত করেন। কালের বিবর্তনে বর্তমানে এটি মুসলমানদের এক ঐতিহাসিক নিদর্শন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ