রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ ।। ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ।। ১১ জিলকদ ১৪৪৫


যে কারণে ইসলামে অপচয় নিষিদ্ধ করে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি শরিফুল ইসলাম নাঈম।।

মহান রাব্বুল আলামীন মানবজাতিকে সৃষ্টি করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তাদের সেবার জন্য তৈরি করেছেন হাজারো মাখলুকাত। অসংখ্য নিয়ামত দিয়ে ঘিরে রেখেছেন তাদের জীবন।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, যদি তোমরা আমার নিআমত গণনা করতে শুরু করো তাহলে গুনে তা শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয়ই মানুষ অত্যন্ত যালেম ও অকৃতজ্ঞ। (ইবরাহিম:৩৪)

আল্লাহ তাআলা প্রতিটি নিয়ামত দান করেছেন মানুষের ভোগ ও উপভোগের জন্য। অপচয় করেছেন নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, তোমরা পানাহার করো; অপচয় করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না। (আ'রাফ:৩১) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই। (বনী ইসরাঈল:২৭)

অপচয় সম্পর্কে আমাদের মধ্যে ভুল ধারণা রয়েছে। যখন কোনো জিনিস অপ্রতুল থাকে, স্বল্প থাকে সে জিনিস বেশি ব্যবহার করলেই আমরা সেটাকে অপচয় ভাবি। অঢেল বস্তুর যথেচ্ছা ব্যবহারকে আমাদের কিছু মনেই হয় না।

অথচ অপচয় বলতে বুঝায়, কোনো জিনিস প্রয়োজনাতিরিক্ত খরচ করা। হোক সে জিনিস সীমিত কিংবা অসীম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক হাদীসে বলেছেন, সমুদ্রতীরে ওযু করতে গিয়ে (অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করলে) অপচয় হবে। (ফাতহুল বারী,১/২৮২)

তাছাড়া অপচয়ে নিয়ামতের অকৃতজ্ঞতা হয়। কারণ, কৃতজ্ঞতা আদায়ের অন্যতম পদ্ধতি হল, নিয়ামতকে তার যথাস্থানে কাজে লাগানো।

তবে তিক্ত বাস্তবতা হলো, অনাচারের এই যুগে অপচয় ব্যপকতা লাভ করেছে। স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত হয়েছে। ঢাকা শহরে গ্যাস থেকে শুরু করে প্রতিটি জিনিসে মানুষের অপচয় রীতিমতো অবাক করা। গ্রামের মানুষগুলো এসবে বেশ হিসেবী। ব্যক্তি ও পরিবার তো বটেই; ক্ষেত্রবিশেষে এই অপচয় প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করেছে। রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে যে অর্থ অতিরিক্ত খরচ করা হয় তা দিয়ে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প সুচারুরূপে সম্পন্ন হতে পারতো।

অপচয় থেকে উত্তরণের জন্য ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে উদ্যোগী হতে হবে। মানুষের মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ তৈরি করতে হবে। আল্লাহ আমাদের অপচয় মুক্ত জীবন গড়ার তাওফীক দান করুন।

লেখক: উস্তাদ, এরাবিক মডেল মাদ্রাসা উত্তরা, ঢাকা।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ