শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪ ।। ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ২ জিলকদ ১৪৪৫


নুরানী মাদরাসাগুলো আমাদের গৌরব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ আল ফারুক।।

আজ থেকে বিশ-পঁচিশ বছর আগেও ফজর নামাযের পর দেশের সকল মসজিদে মক্তব বসতো। পাড়ার শিশুরা দলবেঁধে সেই মক্তবে হাজির হতো। সেখানে তারা আরবি বর্ণমালার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ছোট ছোট সূরা ও হাদিস-মাসআলা শিখতো।

কিন্তু কিছু দিন পর কিন্ডারগার্টেন এসে সেই মসজিদভিত্তিক মক্তবকে প্রায় ধ্বংস করে দেয়। ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন শহর ও উপশহরগুলোর মসজিদ থেকে সুবাহি মক্তব বিদায় নিতে বাধ্য হয়।

এই সংকটের কারণে বাংলাদেশের উলামায়ে কেরাম ভাবনায় পড়েন। তারা তখন অনেক চিন্তা-ভাবনা করে সময়ের দাবি পূরণ করে নুরানি মাদরাসার নতুন কাঠামো বের করেন। এখানে তারা একসঙ্গে প্রাইমারি লেভেলের জেনারেল সাবজেক্টগুলোর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় দ্বীনি শিক্ষার ব্যবস্থা করলেন।  আলহামদুলিল্লাহ, এই নুরানি মাদরাসাগুলো দেশের দৃশ্যপট আগাগোড়া বদলে দিয়েছে। এটি বাংলাদেশি উলামায়ে কেরামের আবিষ্কার। এটি আমাদের গৌরব।

আলহামদুলিল্লাহ, এখন আপনি শহর, নগর, গ্রাম-গঞ্জের সর্বত্রই দেখতে পাবেন যে, বর্তমান সময়ের শিশুরা দলে দলে নুরানি মাদরাসায় ভর্তি হচ্ছে। যেখানেই নুরানি মাদরাসা চালু হচ্ছে, ছাত্র সংকটের কারণে ধীরে ধীরে সেখান থেকে কিন্ডারগার্টেন উঠে যাচ্ছে।

আশুলিয়ার যে অঞ্চলটিতে আমি বাস করি, গত চার বছরে সেখানে অন্তত দুটি কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে। তার স্থলে চারটি নুরানি মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এই মাদরাসাগুলোতে ক্রমশ ছাত্রসংখ্যা বাড়ছে।

তার প্রধান কারণ, নুরানির সিলেবাস ও শিক্ষকদের পাঠদানের যোগ্যতা। আমি আমাদের মহল্লার একটি নুরানি মাদরাসার উপদেষ্টা হিসেবে সময় দিচ্ছি। সেদিন এক অভিভাবক শুকরিয়া জানিয়ে আমাদের বললেন, ‘আপনারা তৃতীয় শ্রেণিতেই ছাত্রদেরকে জেনারেল সাবজেক্টগুলোতে এতো পাকা করে তোলেন যে, প্রাইমারির পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রদেরও ততটা যোগ্যতা থাকে না।’

নুরানি মাদরাসার উত্থান ও প্রাইমারি স্কুলগুলোর পতন নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ইতোমধ্যে লেখালেখি শুরু হয়ে গেছে। যার অর্থ হলো, শিশু লেভেলে মাদরাসা শিক্ষার এই উত্থানকে দেশের কায়েমি স্বার্থবাজরা ভালো চোখে দেখছে না। অনাগত দিনগুলোতে তারা প্রতিবন্ধকতার জাল ছড়িয়ে দিতে পারে। এজন্যে আমাদের চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।

আল্লাহ তাআলা দ্বীনের এই মারকাজগুলোকে নিরাপদ রাখুন। সুশিক্ষার আলো পুরো দেশের সকল জনপদে ছড়িয়ে দিন। আমিন।

এনটি


সম্পর্কিত খবর