বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫ ।। ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ৮ মহর্‌রম ১৪৪৭

শিরোনাম :
গুমের সঙ্গে জড়িত সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সেনাবাহিনী জাতিসংঘের সমকামী দূত ও কার্যালয় স্থাপন বাতিলের দাবি খেলাফতের ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত তাবেলা সিজার হত্যা : তিনজনের যাবজ্জীবন, চারজন খালাস হযরত মুহাম্মদ (সা.) -এর অবমাননা একটি উসকানিমূলক ও ঘৃণিত কাজ জামেয়া ইসলামিয়া মুনশীবাজারে প্রয়াত শিক্ষকদের স্মরণে আলোচনা সভা ১২ জুলাই মুহতামিম সম্মেলন সফল করতে মানিকছড়িতে মতবিনিময় সভা শুটকি মাছের পুষ্টিগুণ ইরানে বিভাজন সৃষ্টির কৌশল ব্যর্থতার পথে: আমেরিকান ওয়েবসাইট গণঅভ্যুত্থান সরকারের কেউ কেউ ‘লুটপাট’ করে বেহুঁশ হওয়ার দশা: ইশরাক হোসেন

নবির দেশে তার মৃত্যুর প্রবল ইচ্ছাই তাকে নিয়ে গেছে মক্কায়, সেখানেই ইন্তেকাল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুশতাক আহমাদ।। বাইতুল্লাহতে জানাযার জন্য অপেক্ষমান সাদা কাফনের তিনটি লাশের মাঝেরটা একজন বাঙালীর। চার হাফেয সন্তানের পিতা তিনি। প্রায় এক যুগের বেশি সময় মক্কাতে বসবাস করার পর কয়েক বছর আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন।
দেশে আসার এক দুই বছরের মাথায় তার কোলন ক্যান্সার ধরা পরে।

ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য তাকে যখন ভারতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়, তিনি প্রথমে কিছুতেই রাজী হচ্ছিলেন না। সেই দেশের মাটিতে তার মৃত্যু হলে, সেখানেই তাকে কবর দেয়া হবে, তিনি সেটা মানতে পারতেন না। ক্যামো শুরুর আগেও ক্যামো দিতে চান নি, তার দাড়ী পড়ে যেতে পারে, এই ভয়ে।

তার সবচেয়ে ছোট ছেলের ১৯/২০ পারা হিফয হওয়ার পর পড়া আগাচ্ছিল না। তিনি প্রায়ই তখন তার আশেপাশের মানুষদের বলতেন, আমার সব ছেলে মেয়েদের হাফিয হিসেবে দেখা পর্যন্ত যেন আল্লাহ আমাকে হায়াত দেন। আল্লাহ তাআলা তার সেই ইচ্ছাকে পুর্ন করে দেন। তার ছোট ছেলে আব্দুর রহমান তারই উপস্থিতিতে হিফযের শেষ সবক শোনায়।

তার মৃত্যুর এক মাস আগে…. অসুস্থতার মাত্রা অন্য সময়ের মতই। ক্যান্সার আস্তে আস্তে গোটা শরিরে ছড়িয়ে যাচ্ছে, একজন ফার্মাসিস্ট হওয়ার সুবাদে ডাক্তারি রিপোর্টগুলো তিনি দেখেই বুঝতেন। এরকম সময় হঠাৎ তিনি জানতে পারলেন, তার পরিচিত একটি গ্রুপ উমরাহতে যাচ্ছে। তিনি তার স্ত্রীকে জানালেন, তিনিও যেতে চান। সবাই মানা করলো। এই অসুস্থতা নিয়ে অনেক কষ্ট হবে। তিনি নাছোড়বান্দা, যাবেনই।
তার পাসপোর্টের মেয়াদ ছিল না, রিনিউ করতে হবে। অবশেষে মাত্র দুই দিনে সেই পাসপোর্ট রিনিউ করা হয়, ভিসা হয়ে যায়, তিনি গায়ে জড়ান ইহরামের চাদর।

উমরাহ ঠিকঠাক ভাবে শেষ করার পর একদিন পর্যন্ত তিনি কথা বার্তা বলেছেন। এরপর তার যবান বন্ধ হয়ে যায়। আসরের আযান চলাকালিন সময় মক্কাতেই তার ইন্তেকাল হয়।

একজন মানুষ তার জীবনকে যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে পরিচালিত করে, তার মৃত্যুটাও তেমন সুন্দরভাবেই হয়। উমরার টাইমিংটা, অসম্ভব দ্রুততার সাথে ভিসা পাসপোর্ট হয়ে যাওয়া, ভাল ভাবে উমরা শেষ করতে পারা, এসব কিছু একটা দিকেই ইশারা করে, আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাকে তার প্রিয় করেই নিয়েছেন। আমরা অনেকে মনে করি, মৃত্যুর পুর্বে কালিমা বলতে পারলেই কেবল সেটা সৌভাগ্যের মৃত্যু। অথচ হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, যে কোন নেক কাজ করার পর যদি কেউ মারা যায়, সেই মৃত্যুও মুবারক।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবার অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন কাজী মনসুর সাহেবের কবরকে জান্নাতের বাগান বানিয়ে দিন। জান্নাতুল ফিরদাউসে তাকে স্থান দান করুন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ