বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫ ।। ১২ ভাদ্র ১৪৩২ ।। ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ফের শাহবাগ অবরোধ আলোকিত সাইকেল পথ: পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে পোল্যান্ডের অনন্য উদ্যোগ ডাকসুতে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি প্রেশার কখন মাপা উত্তম: স্বাস্থ্য সচেতনতায় সঠিক সময়ের গুরুত্ব ‘তরুণদের মধ্যে প্রবীণদের উপেক্ষার প্রবণতাটা খারাপ’  নওমুসলিমের হৃদয়ছোঁয়া গল্প : আলোকের পথে আত্মিক যাত্রা (প্রথম পর্ব) মরচে পড়া লোহা ও টিটেনাস: আতঙ্কের কারণ কী? আবদুল্লাহপুর-টঙ্গী সড়কে বেইলি ব্রিজ  স্থাপন ও দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন নজরুলের ইসলামি চেতনার পাঁচটি কবিতা জেদ্দায় খেলাফত মজলিস আমিরের সংবর্ধনা ও দোয়া মাহফিল

নবির দেশে তার মৃত্যুর প্রবল ইচ্ছাই তাকে নিয়ে গেছে মক্কায়, সেখানেই ইন্তেকাল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুশতাক আহমাদ।। বাইতুল্লাহতে জানাযার জন্য অপেক্ষমান সাদা কাফনের তিনটি লাশের মাঝেরটা একজন বাঙালীর। চার হাফেয সন্তানের পিতা তিনি। প্রায় এক যুগের বেশি সময় মক্কাতে বসবাস করার পর কয়েক বছর আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন।
দেশে আসার এক দুই বছরের মাথায় তার কোলন ক্যান্সার ধরা পরে।

ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য তাকে যখন ভারতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়, তিনি প্রথমে কিছুতেই রাজী হচ্ছিলেন না। সেই দেশের মাটিতে তার মৃত্যু হলে, সেখানেই তাকে কবর দেয়া হবে, তিনি সেটা মানতে পারতেন না। ক্যামো শুরুর আগেও ক্যামো দিতে চান নি, তার দাড়ী পড়ে যেতে পারে, এই ভয়ে।

তার সবচেয়ে ছোট ছেলের ১৯/২০ পারা হিফয হওয়ার পর পড়া আগাচ্ছিল না। তিনি প্রায়ই তখন তার আশেপাশের মানুষদের বলতেন, আমার সব ছেলে মেয়েদের হাফিয হিসেবে দেখা পর্যন্ত যেন আল্লাহ আমাকে হায়াত দেন। আল্লাহ তাআলা তার সেই ইচ্ছাকে পুর্ন করে দেন। তার ছোট ছেলে আব্দুর রহমান তারই উপস্থিতিতে হিফযের শেষ সবক শোনায়।

তার মৃত্যুর এক মাস আগে…. অসুস্থতার মাত্রা অন্য সময়ের মতই। ক্যান্সার আস্তে আস্তে গোটা শরিরে ছড়িয়ে যাচ্ছে, একজন ফার্মাসিস্ট হওয়ার সুবাদে ডাক্তারি রিপোর্টগুলো তিনি দেখেই বুঝতেন। এরকম সময় হঠাৎ তিনি জানতে পারলেন, তার পরিচিত একটি গ্রুপ উমরাহতে যাচ্ছে। তিনি তার স্ত্রীকে জানালেন, তিনিও যেতে চান। সবাই মানা করলো। এই অসুস্থতা নিয়ে অনেক কষ্ট হবে। তিনি নাছোড়বান্দা, যাবেনই।
তার পাসপোর্টের মেয়াদ ছিল না, রিনিউ করতে হবে। অবশেষে মাত্র দুই দিনে সেই পাসপোর্ট রিনিউ করা হয়, ভিসা হয়ে যায়, তিনি গায়ে জড়ান ইহরামের চাদর।

উমরাহ ঠিকঠাক ভাবে শেষ করার পর একদিন পর্যন্ত তিনি কথা বার্তা বলেছেন। এরপর তার যবান বন্ধ হয়ে যায়। আসরের আযান চলাকালিন সময় মক্কাতেই তার ইন্তেকাল হয়।

একজন মানুষ তার জীবনকে যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে পরিচালিত করে, তার মৃত্যুটাও তেমন সুন্দরভাবেই হয়। উমরার টাইমিংটা, অসম্ভব দ্রুততার সাথে ভিসা পাসপোর্ট হয়ে যাওয়া, ভাল ভাবে উমরা শেষ করতে পারা, এসব কিছু একটা দিকেই ইশারা করে, আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাকে তার প্রিয় করেই নিয়েছেন। আমরা অনেকে মনে করি, মৃত্যুর পুর্বে কালিমা বলতে পারলেই কেবল সেটা সৌভাগ্যের মৃত্যু। অথচ হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, যে কোন নেক কাজ করার পর যদি কেউ মারা যায়, সেই মৃত্যুও মুবারক।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবার অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন কাজী মনসুর সাহেবের কবরকে জান্নাতের বাগান বানিয়ে দিন। জান্নাতুল ফিরদাউসে তাকে স্থান দান করুন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ