গাজায় ইসরায়েলের বর্বর গণহত্যায় সহযোগী হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ৪৮টি কোম্পানির নাম প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এ তালিকায় রয়েছে সামরিক, প্রযুক্তি, নির্মাণ, পর্যটন, জ্বালানি ও বিনিয়োগ খাতের বেশ কিছু নামকরা প্রতিষ্ঠান। এসব কোম্পানির সরাসরি সহায়তায় ইসরায়েল গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ জাতিসংঘের।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ ফ্রান্সেসকা আলবানিজ এক প্রতিবেদনে বলেন, ‘এসব কোম্পানির সহায়তা না পেলে ইসরায়েল এত সহজে গণহত্যা চালাতে পারত না।’ বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) জেনেভায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।
সামরিক খাতের সহযোগীরা
যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিন, ইতালির লিওনার্দো এসপিএ—এই দুই প্রতিষ্ঠান গাজায় ব্যবহৃত যুদ্ধবিমান ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
প্রযুক্তি খাত
মাইক্রোসফট, গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট, অ্যামাজন, আইবিএম—এরা ইসরায়েলকে নজরদারি, বায়োমেট্রিক তথ্য ব্যবস্থাপনা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দিয়েছে। প্যালান্টির টেকনোলজিস সরবরাহ করেছে লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণের সফটওয়্যার।
নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাটারপিলার, সুইডেনের ভলভো, দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্ডাইয়ের যন্ত্রপাতি ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও অবৈধ বসতি নির্মাণে ব্যবহৃত হচ্ছে।
পর্যটন ও আবাসন খাত
বুকিং.কম ও এয়ারবিএনবি অবৈধ ইহুদি বসতিতে হোটেল ও সম্পত্তি তালিকাভুক্ত করে মুনাফা করছে।
জ্বালানি সরবরাহকারী
ড্রামন্ড (যুক্তরাষ্ট্র) ও গ্লেনকোর (সুইজারল্যান্ড) ইসরায়েলকে কয়লা সরবরাহ করে তাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়তা করছে।
বিনিয়োগ খাতের বড় নাম
ব্ল্যাকরক ও ভ্যানগার্ড—বিশ্বের দুই বড় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান, যারা অভিযুক্ত কোম্পানিগুলোর অন্যতম প্রধান বিনিয়োগকারী।
আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় বিচার দাবি
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব কোম্পানি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অংশীদার। চাইলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েল নিয়মিতভাবে গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। সরকারি হিসেবে নিহতের সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়েছে, বাস্তব সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
এসএকে/