সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ।। ১০ কার্তিক ১৪৩২ ।। ৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
বরগুনার ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের বিএনপিতে যোগদানের খবরটি মিথ্যা নবীজির জীবনাদর্শ অনুসরণে জীবন আলোকিত হবে: ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশ-পাকিস্তান একে অপরকে সহযোগিতা করে যাবে–ড. ইউনূসকে জেনারেল সাহির ‘আলেম সমাজকে প্রকৃত ভূমিকা পালনে অগ্রণী হতে হবে’ ভাগ্যের পরিবর্তন চাইলে ইসলামকে ক্ষমতায় নিতে হবে: শায়খে চরমোনাই মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পথচারীর মৃত্যু, কারণ অনুসন্ধানে কমিটি গঠন ফেব্রুয়ারি নয়, জানুয়ারিতেই নির্বাচনের দাবি গণঅধিকার পরিষদের মনিগাঁও মাদরাসার প্রাক্তন ছাত্রদের পুনর্মিলনী ২৯ নভেম্বর কোনোভাবেই পতিত ফ্যাসিবাদকে সুযোগ দেওয়া যাবে না: পীর সাহেব চরমোনাই ৫ দফা দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জামায়াতের

কারবালায় কাবার প্রতিকৃতি, বিশ্ব মুসলিমদের নিন্দা, যে ব্যখ্যা দিলো কর্তৃপক্ষ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইয়াহইয়া বিন আবু বকর।।

ইরাকের কারবালায় হুসাইন ইবনে আলী রা. র মাজারের নিকটে পবিত্র কাবার প্রতিকৃতি নির্মিত একটি প্রতিকৃতির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷ এতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মাঝে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি করে৷ নিন্দা জানায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলিমরা।

দৈনিক সংবাদপত্র আলবালাদ নিউজ গত (১৯ ফেব্রুয়ারি) শুক্রবার এক বিবৃতিতে ঘটনাটি জানায়৷

পত্রিকার তথ্যানুসারে, ইরাকের কারবালায় হুসাইন ইবনে অলী রা. র মাজারের নিকটে পবিত্র কাবার অনুরূপ আকৃতিতে নির্মিত একটি ভাস্কর্যের চিত্রায়িত ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে, যা ইরাকসহ বিশ্বের মুসলমানদের মাঝে প্রচন্ড ক্ষোভ সৃষ্টি করে৷ কারণ এটি মুসলমানদের প্রাণকেন্দ্র কাবা শরিফের সাথে জঘন্য বেয়াদবি৷

ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সাধারণ কিছু পর্যটক আগ্রহভরে তা দেখছে৷ কেউ কেউ সম্মান প্রদর্শনের জন্য ভক্তিভরে চুম্বনও করছে৷

মাজারের একজন দায়িত্বশীল জানায়, ভাস্কর্যটি দুদিনের জন্য এখানে রাখা হয়, এরপর তা আবার অপসারণ করা হয়৷ তিনি আরো জানান, প্রতিবছর আশুরা ও হুসাইন রা.র জন্মদিন উপলক্ষে এটা মাজারের সামনে রাখা হয়৷ এটা কারবালার স্মৃতি ও ঐতিহ্য৷ আগে এটা হুসাইন রা. এর জন্ম এবং তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে বেলুচিস্তানের এক চত্বরে রাখা হতো৷ প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসাইন এ প্রথা বাতিল করে দিয়েছিলো৷ এখন আবার তা চালু করা হয়েছে৷

কারবালা কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা

এ দিকে শিয়াদের পক্ষ থেকে এ প্রতিকৃতি তৈরির ব্যাখ্যা দিয়ে কারবালার অন্যতম মৌকেবের পরিচালক আব্বাস মুসাভী বলেন, পবিত্র কাবাঘরের প্রতিরূপ স্থাপন করা হয়েছ। এটি কারবালার মানুষের প্রাচীন ঐতিহ্য, যা প্রতি বছর ইমাম আলী ইবনে আবু তালিব এর পবিত্র জন্মবার্ষিকীতে নির্মিত হয়। কারবালার বাসিন্দারা প্রাচীন কাল থেকেই আল-বালুশ স্কয়ারে এই মডেলটি নির্মান ও প্রদর্শন করে আসছেন।

তিনি আরো বলেন, শুধুমাত্র কাবার প্রতিরূপ কারবালার বাসিন্দাদের একক রীতিনীতি নয়; বরং প্রতি বছর হযরত আব্বাস রা. এর পবিত্র মাযারের বাবুল ক্বিবলায় জান্নাতুল বাকী’তে শয়িত ইমামগণের রওজা মোবারকের প্রতিরূপও স্থাপন করা হয়। এটি কারবালার স্থপতি মরহুম আবদুল রহমান চালু করেছেন, যা কারবালার জনগণের অন্যতম রীতিনীতি। তবে এই সমস্ত রীতিনীতি শাসক সাদ্দামের সময়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং এখন তা পুনরায় চালু করা হয়েছে।

প্রতিকী কাবা বানানো বিষয়ে আলেমরা কী বলছেন

রাজধানীর বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্স সেন্টারের মহাপরিচালক আল্লাম মুফতি আরশাদ রহমানী প্রতীকি কাবা তৈরি ও প্রশিক্ষণ প্রদান স্পষ্ট হারাম বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কাবা শরিফ পৃথিবীতে একটিই। এমন করে প্রতীকী কাবা তৈরি করে প্রশিক্ষণ দেয়া হারাম।

একই কথা বললেন রাজধানীর শাইখ যাকারিয়া রহ. রিসার্স সেন্টারের পরিচালক ও দেশের অন্যতম বিজ্ঞ আলেম মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ। তার মতে, পৃথিবীতে পবিত্র কাবা একটিই। যে উদ্দেশ্যেই হোক না কেন, পবিত্র কাবার প্রতীকি বানানো জায়েজ নেই।  এমন ঘটনাকে পবিত্র কাবার সাথে একধরণের উপহাস করা বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রতীকী কাবা বানানো নাজায়েজ কেন এমন প্রশ্নে মুফতি মিযানুর রহমান বলেন, কাবা ঘরের একটি সম্মান রয়েছে। আমরা সেই ঘরের প্রতীকী বানালে কাবা শরিফের প্রতি মানুষের সম্মান কমে যাওয়ার আশঙ্খা রয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে কতিপয় বেদাতিরা প্রতীকী কাবা বানিয়ে তাওয়াফ করে থাকে এবং তারা বলে এভাবে তাদের হজ আদায় হয়ে যাবে। সেদিকে লক্ষ্য করলেও প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রতীকী কাবা বানানো ফেতনার সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে তা জায়েজ নেই।

তবে হজ প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে প্রতীকী কাবা বানানোতে কোন সমস্যা নেই বলে জানালেন ঢাকা মানিকনগর মাদরাসার শাইখুল হাদিস, জামিয়া শায়েখ জাকারিয়া কাঁচকুড়া উত্তরখান উত্তরার ইফতা বিভাগের প্রধান, মুফতি মোহাম্মদুল্লাহ সাদেকী

তিনি বলেন, ফিতনার আশংকা না থাকলে শেখার জন্য প্রতীকী কাবাসহ অন্যান্য বিষয়গুরো দেখিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে।

তার মতে, হজের বিধি-বিধান মানুষের বুঝতে একটু কষ্ট হয়। আর এ বিধান অনেকে জীবনে একবারই পালন করার সুযোগ পান। তাই এ বিধান ভালো করে আত্বস্ত করতে এমন কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। হ্যাঁ তবে ফিতনার অশংকা থাকলে, সেটা ভিন্ন বিষয়।

সূত্র: আলবালাদ নিউজ আররি, ইকনা আরবি

ওআই/আবদুল্লাহ তামিম


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ