বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫ ।। ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ৭ মহর্‌রম ১৪৪৭

শিরোনাম :
জুলাই আন্দোলন দমাতে ছোড়া হয় ৩ লাখ রাউন্ড গুলি বরিশালে গতি ফিরছে নূরানী বোর্ডের কাজে বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিস খারুয়া ইউনিয়নের দাওয়াতি মজলিস অনুষ্ঠিত ফ্যাসিবাদ বন্ধে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন সর্বোত্তম পন্থা: চরমোনাই পীর দ্রুত গুম-খুনের বিচার ও শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি খালেদা জিয়ার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে খেলাফত মজলিসের ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি  জুলাই স্মরণে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন-এর দেশব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা মানবিক-ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার সময় এখনই : তারেক রহমান যেকোনো দিন গাজায় যুদ্ধবিরতি হতে পারে: ট্রাম্প জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসার ইসলাহি মজলিস বৃহস্পতিবার

মাদরাসার জন্য সরকারি অনুদান বন্ধের প্রস্তাব দিলে ফাইলের উপর কী লিখেছিলেন বঙ্গবন্ধু?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: মাদরাসার জন্য সরকারি অনুদান বন্ধ করে দেয়ার একটি প্রস্তাব দেওয়া হলে বঙ্গবন্ধু ফাইলের ওপরে লিখেছিলেন, ‘মাদরাসা শিক্ষার জন্য যে বরাদ্দ এত দিন ছিল সেটাই থাকবে। তবে ভবিষ্যতে এ বরাদ্দ বাড়ানো যায় কি না এবং কতটা বাড়ানো যায় তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।’

একদিন চানখাঁরপুলের আওয়ামী লীগের যুবকর্মীরা আমাকে সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে গেল। তাদের আবেদন, তিনি যে সুস্থভাবে পাকিস্তান থেকে ফিরে এসেছেন, সেজন্য তারা একটি উৎসব করবে। উৎসবের জন্য কিছু টাকা প্রয়োজন।

তিনি তাদেরকে বললেন, ‘পাবি, টাকা আমি দেব, তবে কী করবি?’ ওরা সমস্বরে বলল, ‘আমরা বাজি পোড়াব, গানবাজনা করব।’ তিনি তার ক্রোধের অনবদ্য ভঙ্গিতে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ঐ, মুসলমানরা খুশি হইলে বাজি পোড়ায়, না মিলাদ পড়ায়? যা, মিলাদের ব্যবস্থা কর। আর সৈয়দ সাহেবকে দিয়া মিলাদ পড়াইয়া দে।’

আমি প্রতিবাদ করে উঠলাম, ‘আমি মিলাদ পড়াতে জানি না।’ তিনি একটি ছদ্ম রাগ দেখিয়ে আমাকে বললেন, ‘মিথ্যা কথা কন ক্যান, আপনি পড়াইবেন, যান।’

যাই হোক, মিলাদের অনুষ্ঠান হয়েছিল এবং সেজন্য মৌলভী সাহেব আনা হয়েছিল। মিলাদের পর তেহারি খাওয়া হয়েছিল এবং একেবারে শেষে কিছু বাজিও পোড়ানো হয়েছিল।

টেলিভিশনের তৎকালীন মহাপরিচালক জামিল চৌধুরী আমাকে দিয়ে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কথা রেকর্ড করিয়ে নিল। এগুলো ছিল জীবনযাপনের ন্যায়নীতিসংক্রান্ত কথা। সে আমাকে জানাল, যেহেতু বাংলাদেশ এখন ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, সুতরাং রেডিও-টেলিভিশনের অনুষ্ঠানের শুরুতে কোনো ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হবে না, তার পরিবর্তে কিছু আদর্শগত বাণী পাঠ করা হবে। এই বাণী বোধ হয় এক দিন কী দুই দিন টেলিভিশন থেকে পাঠ করা হয়েছিল।

বঙ্গবন্ধু এ বাণী শুনে ভয়ানক রুষ্ট হয়ে জামিল চৌধুরীকে ডেকে পাঠান। সেখানে এম আর আখতার মুকুল এবং আরো কয়েকজন ছিলেন। সম্ভবত আওয়ামী লীগের নেতা টাঙ্গাইলের আবদুল মান্নান সেখানে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু জামিল চৌধুরীকে লক্ষ করে প্রশ্ন করলেন, ‘একজন মুসলমানের বাড়িতে সকাল বেলা কিসের শব্দ শোনা যায়, গানের না হরিবোলের?’ সবাই তখন তটস্থ হয়ে গেছে। তিনি তখন নিজেই উত্তর দিলেন, ‘মুসলমানের ঘরে কুরআন শরিফের আওয়াজ শোনা যায়। আজ থেকেই রেডিও-টেলিভিশনে অনুষ্ঠানের শুরুতেই আমি কুরআন শরিফের আওয়াজ শুনতে চাই।’

তিনি অবশ্য অবিকল এ ভাষায় বলেননি। তার একটা দেশজ ভঙ্গি ছিল, সেটা সবাই জানেন। তার বলার ভঙ্গিতে একটা স্বাভাবিক বলিষ্ঠ প্রত্যয় ধরা পড়ত। সৈয়দ আলী আহসান এর ‘বঙ্গবন্ধু : যে রকম দেখেছি’ প্রবন্ধ থেকে।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ