বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জানিয়েছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানসহ আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলে গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। একইসঙ্গে এসব ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর দ্রুত বিচার কার্যকর এবং শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের পরিবারের জন্য সম্মানজনক পুনর্বাসন ও নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে হবে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও শহীদ পরিবারের সম্মানে বিশেষ অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে খালেদা জিয়া এসব দাবি জানান। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার বক্তব্যে বলেন,
“রক্তস্নাত জুলাই-আগস্ট আমাদের মাঝে এক বছর পর আবার ফিরে এসেছে। দীর্ঘ ১৬ বছর ফ্যাসিস্টদের নির্মম অত্যাচার, নির্যাতন, গ্রেফতার, গুম-খুনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা দীর্ঘস্থায়ী করতে চেয়েছিল আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী।"
তিনি আরও বলেন, "ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে এবং বাংলাদেশকে নতুন করে গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের প্রতি জানাচ্ছি আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং আহতদের প্রতি সমবেদনা। তাদের আত্মত্যাগ জাতি চিরকাল মনে রাখবে।"
খালেদা জিয়া বলেন, “গুম-খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার যারা হয়েছেন, তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে। দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যেকটি পরিবারের জন্য সম্মানজনক পুনর্বাসন এবং নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রিয় দেশবাসী, আমাদের সামনে যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নতুন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার, তা আমাদের দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, এবং সর্বোপরি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে যেকোনো মূল্যে।”
খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে শেষাংশে বলেন, “জুলাইয়ের এই রক্তস্রোত, মায়ের অশ্রুধারা যেন বৃথা না যায়। ঐক্য বজায় রাখতে হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে শহীদ জিয়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করি, এবং কোটি মানুষের বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করি।”
এমএইচ/