বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৬ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
এক লাফে ভরিতে ৮৩৮৬ টাকা কমল স্বর্ণের দাম জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াতে ইসলামী ১৮তম জাতীয় তাফসিরুল কুরআন মাহফিল ২০ ও ২১ নভেম্বর ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বিশ্বের প্রভাবশালী ইহুদিদের চিঠি  গণভোট নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে জটিলতা তৈরির অভিযোগ জামায়াতের ‘পাঁচ দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে’ জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে বিশেষজ্ঞদের সাথে ঐকমত্য কমিশনের সভা শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা দিতে ছয় দফা সুপারিশ চিকিৎসকদের  ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, কারাগারে অভিযুক্ত বুয়েট শিক্ষার্থী  ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান উপদেষ্টা রিজওয়ানার

‘নুকতাবিহীন ৪০০ পৃষ্ঠার সিরাতগ্রন্থ লেখার অনন্য কৃতিত্ব আমার সপ্তম ভাইয়ের’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

[জামিয়া দারুল উলুম করাচির মুখপাত্র ‘ماہنامہ البلاغ মাহনামা আল-বালাগ’ এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত বিশ্বনন্দিত আলেম, স্কলার আল্লামা তাকি উসমানির আত্মজীবনী আওয়ার ইসলামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ।

এ বিষয়ে আল্লামা তাকি উসমানি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ার ইসলামকে ভাষান্তর করে প্রকাশের অনুমতি দিয়েছেন। গত ২ জানুয়ারি জামিয়া দারুল উলুম করাচির তাখাসসুস ফিল ইফতার শিক্ষার্থী, আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমের শুভাকাঙ্ক্ষি উমর ফারুক ইবরাহীমীর মাধ্যমে আল্লামা তাকি উসমানি ও পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মজীবনী ‘ইয়াদে’ অনুবাদের অনুমতি চাওয়া হলে তারা খুশি মনে রাজি হন এবং আওয়ার ইসলামকে ধন্যবাদ জানান বাংলাভাষায় ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য।

আল্লামা তাকি উসমানির নতুন ধারাবাহিক আত্মজীবনী “یادیں ইয়াদেঁ ” মাহনামা আল-বালাগে সফর ১৪৩৯ হিজরি, নভেম্বর ২০১৭ ইংরেজি মাস থেকে। আওয়ার ইসলামে লেখাটি সপ্তাহে দুদিন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হচ্ছে। আজ প্রকাশ হলো ১২ তম কিস্তি। অনুবাদ করেছেন মাওলানা  উমর ফারুক ইবরাহীমী।]

আমাদের ভাইবোনদের মধ্যে সপ্তম নাম্বারে, মুহাম্মদ ওলি রাজি মাদ্দাযিল্লুহুম। দেওবন্দে থাকাকালীন তিনি দারুল উলুমের হিফজ বিভাগে পড়তেন। আল্লাহ তা'আলা তাকে অস্বাভাবিক মেধা, মননশক্তি এবং উপস্থিত জবাবের যোগ্যতা দান করেছেন।

তিনি অত্যন্ত অমায়িক আচরণের অধিকারী এবং এসব তাঁর খোদা প্রদত্ত প্রতিভা। তিনি যখন শের, কবিতার ময়দানে পা রাখলেন, সেখানে তিনি একজন অনন্য কবির ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন।

শিক্ষকতার পেশায় আসলেন, সেখানে করাচি গ্রামার স্কুল এবং করাচি ইউনিভার্সিটিতে ইসলামিয়াত পড়ানোর কালে অসংখ্য লোকের জীবনের মোর ঘুরিয়ে দিয়েছেন। ইংলিশে এম এ (মাস্টার্স) করেছেন, সে যোগ্যতা বলে বিভিন্ন দীনি কিতাবের ইংরেজি অনুবাদের খেদমত আঞ্জাম দিয়েছেন।

একুশে বইমেলায় প্রকাশিত সব বইয়ের তালিকা দেখুন এখানে

‘বাইবেল ছে কুর'আন তক’ এবং মির্জাদের ব্যাপারে ‘উম্মাতে মুসলিমা কা মাওকিফ’ কিতাবদুটির ইংরেজি অনুবাদ তার হাত ধরেই হয়েছে। আল বালাগের ইংরেজি সংখ্যা আজ অবধি তার ব্যবস্থাপনায় বেরোচ্ছে।

তার অনন্য মেধা, মননশীলতার জ্বলন্ত উদাহরণ, তার লেখা ‘হাদিয়ে আ'লম, সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ এখন বিশ্বব্যাপী শুহরত ও খ্যাতি লাভ করেছে।

এ কিতাবে তিনি রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পুরো জীবনবৃত্তান্ত নুকতাবিহীন শব্দে লিখেছেন। প্রায় চারশো পৃষ্ঠা ব্যাপী এই সিরাত গ্রন্থ পুরোটাই নুকতাশূন্য।

এটা এমন একটি বৈশিষ্ট্য, যদি বিশ্বরেকর্ড বলি, ভুল হবে না। নুকতাবিহীন উর্দুতে কোন লম্বাচূড়া বিষয়বস্তু লেখা, বিশেষত রাসুলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র সিরাত লেখাটা কতোটা দুর্বোধ্য ব্যাপার, সেটি আমি এই কিতাবের ভূমিকায় বয়ান করেছি। আল্লাহ তা'আলার বেহেরবানিতে তিনি মাত্র কয়েক মাসে এই অসাধ্য সাধন করে একটি রেকর্ড গড়েছেন।

এছাড়াও তার লেখা আরো অনেক কিতাব, প্রবন্ধ, নিবন্ধ এবং কলাম রয়েছে, যেগুলো তার ব্যক্তিগত অধ্যয়ন ও ইলমি, দ্বীনি এবং সাহিত্যপ্রেমের প্রমাণ বহন করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে অত্যধিক বিনয়ী, নম্র এবং নিরহংকারের মূর্তপ্রতিক বানিয়েছেন।

যশাকাঙ্ক্ষাকে পদদলিত করে তিনি আজ অবধি লেখালেখির মাধ্যমে দীনি খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।

অষ্টম নাম্বারে আমার বড়ভাই, হজরত মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ রফি উসমানি মাদ্দাযিল্লুহুম।

বয়সে তিনি আমার চেয়ে সাতবছরের বড়। কিন্তু আল্লাহ্‌ তা'আলা আমাদের বাল্যকাল থেকে আজ অবধি এভাবে সাথে রেখেছেন যে, শুধু ঘরোয়া পরিবেশেই নয়, বরং দ্বীনি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আমাদের দুজনের নাম ওতপ্রোতভাবে নেয়া হয়।

ভাইবোনদের মধ্যে আমার সবচে বেশি উঠাবসার সৌভাগ্য তার সাথেই হয়েছে। তার কাছ থেকে আমি অনেক কিছুই শিখেছি। তবে আমার স্বভাবজাত চলার ভঙ্গি আমাকে তদানুসারে আমলের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে।

তিনি অত্যধিক পরিপাটি এবং সুশৃঙ্খল জীবনের অধিকারী। অথচ আমি অনুভূতিশূন্য এবং অগোছালো। তিনি সবকাজ ধীরস্থির, আর আমি তাড়াহুড়োকারী। তার বাসা থেকে অফিস পর্যন্ত প্রতিটি জিনিস সুবিন্যস্ত। আর আমার অবিন্যস্ত।

মোটকথা আমার সকল নিৰ্বদ্ধিতাকে তিনি যেভাবে সয়েছেন, এটা তারই কৃতিত্ব। তবিয়তের ভিন্নতার দরুন আমার সকল প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়াবলি, অবশ্যই আমার অগোছালো জীবনযাপনের কারণেই ছিলো।

তবুও কখনো এগুলো তার ধৈর্যে, সহ্যে উল্লেখযোগ্য বিতৃষ্ণার সৃষ্টি করেনি। এ ব্যাপারে সব কৃতিত্বই তার। আলহামদুলিল্লাহ! শিক্ষাজীবন থেকে শুরু করে শিক্ষকতা, ইফতা এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন ক্ষেত্রেও ওতপ্রোতভাবে তার সঙ্গ পেয়েছি এবং সবসময় তার স্নেহশীলতার চাক্ষুষ প্রমাণ দেখেছি।

দেশে এই প্রথম আধুনিক চিকিৎসার সমন্বয়ে নববি চিকিৎসা হিজামা

হজরত মুফতি ওলি হাসান রহ. এর পর উলামায়ে কেরাম তাকে ‘মুফতিয়ে আ'যম পাকিস্তান’ উপাধিতে ভূষিত করেছেন। তার উর্দু, আরবিতে লেখা গ্রন্থাদি, ফতোয়া এবং তার দরসের উপস্থাপনাভঙ্গি, স্পষ্ট এবং হৃদয়গ্রাহী বক্তব্য এবং ওয়াজ, নসিহত এই উপাধির জলজ্যান্ত প্রমাণ।

আজ পুরো দেশে যদি একনিষ্ঠ চিন্তাবিদ, সাহেবে রায় (সময়োচিত সঠিক সিদ্ধান্তগ্রহণকারী) মু'তাদিল (মধ্যপন্থি) এবং মুখলিস উলামায়ে কেরামের কোন লিষ্ট বানানো হয়, আলহামদুলিল্লাহ! তার নাম সবার উপরে স্থান পায়।

দারুল উলুমের নির্মাণকাজ এবং উন্নতির জন্য তিনি নিজের শারীরিক, মানসিক শক্তিসামর্থ্য যেভাবে বিলীন করে দিয়েছেন, আজ দারুল উলুমের প্রতিটি দোর, দেয়াল তার নীরব সাক্ষী।

যদি আমি বলি- দারুল উলুমের এক, দুটি ছাড়া সমস্ত ভবন তার প্রত্যক্ষ নেগরানিতে বনেছে এবং প্রতিটি ইট, পাথরে তার ঘাম মিশে আছে- তবে এটা অতিরিক্ত হবে না।

আল্লাহ তার রহমতের ছায়া, সুস্থতা ও আফিয়াতের সাথে আমাদের উপর দীর্ঘ করুন। তিনি শুধু আমার জন্যই নয়, বরং আমাদের পুরো খান্দান এবং দারুল উলুমের জন্য একজন দয়ালু বাবার ভূমিকা রাখেন এবং দেশ ও জাতির জন্য তার খেদমত অনস্বীকার্য। চলবে ইনশাআল্লাহ...

আগের পর্ব: ‘ছোটবেলায় কবুতর ছিল আমার খুব প্রিয়’


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ