বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২ জিলকদ ১৪৪৬


রংপুরে বিএনপির ভরাডুবির নেপথ্যে দেওয়ানবাগী পীর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রকিব মুহাম্মাদ
আওয়ার ইসলাম

দলের ভেতরে সমন্বয়ের অভাব ও নেতা-কর্মীদের রেশারেশি ও কোন্দলের পাশাপাশি দেওয়ানবাগী পীরের খলিফা অপপ্রচারেই রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী কাওছার জামান বাবলার ভরাডুবি হয়েছে। বিষয়টি বাবলা নিজেও স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পরিবর্তন ডটকম

জানা গেছে, রংপুর অঞ্চলের ‘দেওয়ানবাগী পীরের খলিফা’ হিসেবে বিএনপি প্রার্থী বাবলার বিরুদ্ধে একটা প্রচার ছিল। যে কারণে ২০ দলীয় জোটের সমমনা ইসলামী দলগুলো তাকে ভোট দেননি। তার নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায়ও অংশ নেননি তারা।

তবে কাওছার জামান গনমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘আমি দেওয়ানবাগীর পীরের মুরিদ নই, রাজারবাগী পীরের মুরিদ।’

তবে,  স্থানীয় নেতাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব আর মূল দলের সঙ্গে অঙ্গদলের কোনো সমন্বয় না থাকায় ফলাফলে এমন ভরাডুবি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন দলের কেউ কেউ। ফলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের শরিক জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতাদর্শের ভোট থেকেও বঞ্চিত হয় ধানের শীষ সমর্থিত প্রার্থী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাবলা বলেন, ‘২০১২ সালের নির্বাচনে আমি একা নির্বাচন করে ২৫ হাজার ভোট পেয়েছিলাম। কিন্তু এবার দলীয় প্রতীক নিয়েও আশানুরূপ ফল পাইনি।’

এজন্য দলীয় সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করে তিনি বলেন, রংপুর সিটিতে জামায়াতের প্রায় ৬০-৬৫ হাজার ভোট আছে। বিএনপির আছে ৪০-৫০ হাজার। আমরা নিজস্ব ভোট ব্যাংক আছে। সমন্বয় না থাকার কারণেই মূলতঃ ফলাফলে প্রভাব পড়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন,  কাউসার জামান বাবলার এই ভরাডুবির পেছনে মূলত কারণ তিনি দেওয়ানবাগীর মুরিদ।  গত ১০ ডিসেম্বর দৈনিক ইত্তেফাকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, “রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মহানগর সহ-সভাপতি কাওসার জামান বাবলা দেওয়ানবাগী পীরের রংপুরের খলিফা পদে থাকায় বিএনপি জোটের জামায়াতে ইসলামী, খেলাফতে মজলিশ, ইসলামী ঐক্যজোট ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা তার পক্ষে কাজ করা তো দূরের কথা তাকে ভোট দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

হেফাজতের মহানগর সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, বাবলা আমাদের সাথে দেখা করে সমর্থন চেয়েছিলেন; কিন্তু দেওয়ানবাগী পীরের মুরিদ ও খলিফা হওয়ায় তার পক্ষে আমরা কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছি। এ কারণে ২০ দলীয় জোটের শরীক ইসলামী দলগুলো বাবলার পক্ষে কাজ করা থেকে বিরত রয়েছে।”

এদিকে এলাকাবাসী বলছে,  মূলত ইসলামপন্থী কোনো দল ও তাদের সমর্থকরা বাবলা ভোট দেননি, এমনকি ভেতরে ভেতরে তার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। নির্বাচনের দিন তাদের কেউ কেন্দ্রে যাননি। অথবা গেলেও অন্যান্য দল জাতীয় পার্টি, ইসলামি আন্দোলন-এর প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। আর এভাবেই ভরাডুবি হয়েছে বিএনপির।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর