রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
পেশীশক্তি ও কালো টাকার দৌরাত্ম বন্ধে পিআর পদ্ধতির প্রয়োজন- আহমদ আবদুল কাইয়ূম জেদ্দায় হজ সম্মেলন ও প্রদর্শনী নভেম্বরে আজ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে যুক্তরাজ্য খেলাফত মজলিস বানিয়াচং উপজেলা শাখার ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন ‘নীলনদের পানি যেমন নীল নয়, তেমনি জামায়াতেও ইসলাম নেই’ কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সম্পাদক মাজহারুল ‘ইসলামি শক্তির মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকুন’ গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপির একীভূত হওয়ার আলোচনা, নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা পিআর সিস্টেমের নির্বাচন নিরাপদ নির্বাচন, আদর্শের নির্বাচন: শায়খে চরমোনাই মসজিদ নিয়ে দ্বন্দ্ব, সড়কে জুমা আদায়

যাকাত সম্পর্কে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রেদোয়ানুল হক : যাকাত শব্দের অর্থ বৃদ্ধি পাওয়া। রিবা (সুদ) অর্থও বৃদ্ধি পাওয়া। তবে যাকাত আর রিবার বৃদ্ধির মাঝে পার্থক্য আছে। যাকাত সম্পদের বরকত ও ক্ষমতা বৃদ্ধি করে; সম্পদকে পবিত্র করে। অপরদিকে রিবা সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি করে, তবে বরকত নষ্ট করে দেয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আল্লাহ রিবার সম্পদ ধ্বংস করে দেন, আর যাকাত-সাদাকাতের সম্পদকে বৃদ্ধি করে দেন।

যাকাত কখন ফরয হয়?
প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিমের ওপর যাকাত ফরয হয়, যদি তার কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর পর্যন্ত থাকে।

নেসাবের ব্যাখ্যা
নেসাব হলো সম্পদের একটি পরিমাপ; সর্বনিম্ন যে পরিমাণ সম্পদ থাকলে ব্যক্তির ওপর যাকাত ফরয হয় এবং তাকে বলা হয় সাহিব-এ-নিসাব।

এক বছর অতিক্রান্ত হওয়া ব্যাখ্যা
যেদিন নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে, সেদিন থেকে এক চান্দ্র বছর পর যাকাত হিসাব করতে হবে। যেমন, কেউ এ বছর রমজানের এক তারিখে নেসাবের মালিক হলো। তাহলে পরের বছর রমজানের এক তারিখ তাকে যাকাত হিসাব করে আদায় করতে হবে।

কোন কোন সম্পদে যাকাত আসে?
ব্যবহারের সম্পদে সাধারণত যাকাত আসে না। রাসূল স. বলেছেন, “একজন মুসলিমের ওপর তার দাস ও তার ব্যবহারের ঘোড়ার ক্ষেত্রে যাকাত নেই”।

এছাড়া ছয় প্রকার সম্পদের ক্ষেত্রে যাকাত আসে। সোনা-রূপা, নগদ অর্থ, ব্যবসার সম্পদ, জীবজন্তু, কৃষিজ উৎপাদন ও খনিজ সম্পদ।

যাকাত কীভাবে হিসাব করব?
প্রথমবার নেসাবের মালিক হওয়ার এক চান্দ্র বছর পর যাকাত আসে এমন সমুদয় সম্পদের মূল্য টাকায় (বা অন্য কোনো মুদ্রায়) রূপান্তর করে নিবে। এরপর সব যোগ করবে। প্রাপ্য ঋণ (receivables) থাকলে তাও যোগ করবে। প্রদেয় ঋণ (loans) থাকলে, তা নগদে পরিশোধ করতে হলে পুরোটা বিয়োগ দিবে। আর কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য হলে কেবল পরবর্তী এক বছরের কিস্তি বিয়োগ দিবে। এরপর বিয়োগফলের ২.৫% যাকাত হিসাব করবে।

যাকাতের সম্পদ + প্রাপ্য ঋণ – প্রদেয় ঋণ (নগদ) – প্রদেয় ঋণ (পরবর্তী এক বছরের কিস্তি) = মোট সম্পদ  X ২.৫% = যাকাত।

যাকাত কাকে দেয়া যায়?
বৈবাহিক সম্পর্ক ও ঔরষজাত সম্পর্কের মানুষকে যাকাত দেয়া যায় না। কাজেই স্বামী-স্ত্রী, পিতা-পুত্র, দাদা-নাতী কাউকে যাকাত দেয়া যাবে না। অনুরূপভাবে রাসূল স. এর বংশের কাউকে যাকাত দেয়া যাবে না।

এছাড়া যেকোনো গরীবকে যাকাত দেয়া যাবে। গরীব বলতে এমন ব্যক্তিকে বুঝায়, যার হয়ত কোনো সম্পদই নেই। কিংবা আছে, তবে তার প্রয়োজনীয় সম্পদ ও জীবনযাপনে প্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিলে তা নেসাবের চেয়ে কম হয়।

আল্লাহ তায়ালা যাকাত আদায়ের সাতটি খাত উল্লেখ করেছেন। ফকীর, মিসকীন, যাকাত উসুল ও আদায়ের কাজে নিয়োজিত, ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য, দাসমুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্তদের জন্য, জেহাদকারীর জন্য এবং মুসাফির।

ট্যাক্স এবং যাকাত
সরকারী ট্যাক্স এবং যাকাত এক নয়। যাকাত একটি ইবাদত। কাজেই ট্যাক্সের টাকাকে যাকাত বলে গণ্য করা যাবে না।

তবে হ্যাঁ, ট্যাক্সে প্রদেয় টাকা যাকাতের হিসাব থেকে বিয়োগ দেয়া যাবে। কারণ এটিও একটি ঋণ, যা ব্যক্তির কাছে রাষ্ট্র পাবে।

আরও পড়ুন : যাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য, বর্তমানে যাকাত ফিতরার পরিমাণ


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ