ভারতের কেরালার পর উড়িষ্যায় কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার এক মুসলমান শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে কট্টরপন্থী উগ্র হিন্দু মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে। নৃশংস ও মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে রাজ্যের সম্বলপুর জেলায়।
মৃত যুবকের নাম জুয়েল শেখ (২১)। তার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সুতি থানার চকবাহাদুরপুর এলাকায়।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাজের সন্ধানে কয়েকদিন আগেই উড়িষ্যার সম্বলপুরে গিয়েছিলেন জুয়েল। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাওয়া অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে নির্মাণকাজে যুক্ত ছিলেন তিনি।
জানা গেছে, স্থানীয় কিছু কট্টরপন্থী তাদের বাংলাদেশি সন্দেহে ঘরে প্রবেশ করে বেধড়ক মারধর করে। নির্মম মারধরের জেরেই গুরুতর আহত হন জুয়েল শেখ। অমানবিক প্রহারের পরে তার মৃত্যু ঘটে। শুধু জুয়েলই নন, তার সঙ্গে থাকা আরও কয়েকজন শ্রমিককেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই মৃত যুবকের গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরিবারের একমাত্র ছেলে সন্তানের এমন অকাল মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজনেরা।
দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ন্যায়বিচারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে, সেই দাবিও তুলেছেন তারা।
এমন ঘটনা পুনরায় সামনে আসার পর সাধারণ মানুষের মধ্যেও তীব্র ক্ষোভ দেখা গেছে। ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম ও বাংলাভাষী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।
প্রশাসনের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও তথ্য না মিললেও পরিবারের পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
পশ্চিমবঙ্গের আরও এক বাংলাভাষী যুবককে বাংলাদেশি সন্দেহে গত সপ্তাহে দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
আরএইচ/