শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
তুরস্কের যাচ্ছেন হাফেজ্জি হুজুর রহ সেবার নেতৃত্ববৃন্দ ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতা করতে চায় ইরান  ভারত হামলা করলে ‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ হুমকি পাকিস্তানের আখাউড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক আহত সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত ​​বইবে : বিলাওয়াল ভুট্টো হজের সময় ভুয়া ক্যাম্পেইনে জড়িতদের ধরছে সৌদি জামায়াত-শিবিরের প্রশংসা, সন্তোষ শর্মা ইস্যুতে যে ‘নসিহত’ রফিকুল মাদানীর গাজার শিশুরা এখন গল্প শোনে না, শোনে যুদ্ধ আর ক্ষুধার আর্তনাদ পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ । বেশি ক্ষতি হবে এয়ার ইন্ডিয়ার মতো বড় সংস্থার  ভারত-পাকিস্তান সেনাদের মধ্যে আবারও গুলি বিনিময়

তাবলিগ অহিংস ইসলামের প্রতিরূপ: মাওলানা লিয়াকত আলী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

liaqat-aliমাওলানা লিয়াকত আলী। বিদগ্ধ আলেম, গবেষক লেখক ও সাংবাদিক। শিক্ষা, গবেষণা ও সাংবাদিকতার সাথে জড়িত দুই দশক ধরে। বর্তমানে তিনি মাদরাসায়ে দারুর রাশাদের শিক্ষা সচিব ও জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দৈনিক নয়া দিগন্ত-এর সিনিয়র সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। দাওয়াত ও তাবলিগের সাথে রয়েছে তার নিবিড় সম্পর্ক এবং বহুমুখী গবেষণা। আসন্ন ইজতেমা উপলক্ষ্যে তার সঙ্গে আওয়ার ইসলামের পক্ষে কথা বলেন,  মাওলানা আবদুল্লাহ আশরাফ। তাদের আলাপচারিতায় উঠে এসেছে দাওয়াত ও তাবলিগের নানা দিক।

আওয়ার ইসলাম : তাওয়াত ও তাবলিগ দ্বারা দীনের কতটুকু হচ্ছে বলে মনে করেন?

মাওলানা লিয়াকত আলী: যারা মুসলিম তাদের মধ্যে দীনের অনুভূতি ও আমলের আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তো করা যে জরুরি। এ ব্যাপারে দাওয়াত ও তাবলিগ অবদান সবচেয়ে বেশি। এই হিসাবে দাওয়াত ও তাবলিগ যথেষ্ট কাজ করছে।

আওয়ার ইসলাম : তাবলিগের ছয় উসুল দীনের উপর চলার জন্য কী যথেষ্ট?

মাওলানা লিয়াকত আলী : তাবলিগের জন্য ছয় উসুল যথেষ্ট তা কখনো বলা হয় নি। বলা হয়েছে এই ছয়টা উসুল কেউ যদি আমল করে পুরো দীনের উপর তার জন্য সহজ। এ গুলো শুরু। এমন কিছু মৌলিক বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে যে, এর উপর কেউ যদি আমল করে, তবে অন্য বিষয়গুলো মান্য করা সহজ হয়। এটাই পুরো দীন বা এগুলোর উপর আমল করা যথেষ্ট বলার সুযোগ নেই। কেননা এখানে যাকাতের কথা নেই। এখানে জিহাদের কথা নেই। দীনের অপরিহার্য অনেক বিষয়ই এখানে নেই। তাহলে যথেষ্ট বলার সুযোগ কোথায়? কোন মানুষের যখন ঈমান সহিহ হয়ে যায়, দৈনন্দিন জীবনের সুন্নাত সহিহ হয়ে যায়, তখন তার মধ্যে দীনের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। তার মধ্যে মুসলমানের পারস্পরিক যে সম্পর্ক রক্ষা করা আবশ্যক তা সহিহ হয়ে যায়। এই কথা বুঝানোর জন্য তাওয়াতে তাবলিগে পূর্ণাঙ্গ না। বরং সহায়ক।

আওয়ার ইসলাম : অনেকেই ইসলাম সম্পর্কে ভালোভাবে না জেনে সাধারণ মজলিসে বয়ান করে। এ বিষয়টি কিভাবে দেখেন?

মাওলানা লিয়াকত আলী : যতটুকু জানে ততটুকু বয়ান করে। এমন তো না উনি যে বিষয় জানে না সে বিষয় বয়ান করে। তা তো বয়ান করে না। তাতে অসুবিধার কি আছে? বক্তা যে বিষয়ে জানে শ্রোতা কিছুই জানে না, বা কম জানে তা কখনো হয় না। অনেক সেমিনারে বক্তাদের চাইতে শ্রোতা অনেক বেশি জানে। তাহলে সেখানে বক্তা কীভাবে বক্তৃতা দেয়? সুতরাং যিনি বয়ান করবেন, তিনি সব বিষয়ে ভালোভাবে জানবেন তা জরুরি না। তিনি যতটুকু জানেন ততটুকু বয়ান করবেন। হ্যা তিনি যেনো নাজানা বিষয়ে বয়ান না করেন এ বিষয়টা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

আওয়ার ইসলাম : দাওয়াত ও তাবলিগ এবং ইসলামের যে অন্যান্য খেদমত হচ্ছে তার মধ্যে কোন পার্থক্য খুঁজে পান কী?

মাওলানা লিয়াকত আলী : পার্থক্য নেই, সম্পর্ক আছে। দাওয়াত ও তাবলিগ দ্বারা দাওয়াত হচ্ছে। মাদরাসাগুলোর দ্বারা তালিম হচ্ছে, সেবামূলক সংগঠনগুলো দ্বারা সেবা হচ্ছে, রাজনৈতিক সংগঠনগুলো দ্বারা রাজনীতি হচ্ছে। একটা আরেকটার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। পরস্পরের মাঝে পার্থক্য নাই। তাবলিগের দ্বারা যে কাজ হচ্ছে মাদরাসার দ্বারা তা হচ্ছে না। আবার মাদরাসার দ্বারা যে কাজ হচ্ছে তাবলিগ দ্বারা তা হচ্ছে না।

আওয়ার ইসলাম : বর্তমান বিশ্বে দাওয়াত ও তাবলিগের অবদান কি?

মাওলানা লিয়াকত আলী : যথেষ্ট অবদান। এক. অবদান যারা নামে মুসলিম তাদের মধ্যে এই অনুভূতি জাগানো সম্ভব হয়েছে যে, দীনের উপর আমলকরা জরুরি।

দুই. মুসলমান যখন দীনের ওপর আমল করে, তখন আমুসলিমের ওপর প্রভাব পরে। অমুসলমানরা মুসলমানের দীনের সৌন্দর্য এবং তাদের জীবনাচার দেখে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে এবং মুসলমান হচ্ছে। এ কারণেই ইউরুপ-আমেরিকায় ইসলামের ব্যাপক প্রসার হচ্ছে। কোনো রাজনৈতিক সংগঠন দ্বারা এটা হয় নি। অহিংস ইতিবাচক কাজ দ্বারা তাবলিগ ইসলামের প্রচার ও প্রসার করছে।

আওয়ার ইসলাম : দাওয়াত ও তাবলিগ দ্বারা ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা কী সম্ভব?

মাওলানা লিয়াকত আলী :  ইসলামী রাষ্ট্র শুধু দাওয়াত ও তাবলিগ দ্বারা সম্ভব না, শুধু মাদরাসা দ্বারা সম্ভব নয়। ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সমন্বিত ব্যাপক ভিত্তিক পরিকল্পনা নিতে হবে। তাবলিগ দ্বারা একটা অংশ হতে পারে, মাদরাসা দ্বারা একটা অংশ হবে, মিডিয়া দ্বারা একটা হবে। আর সব মিলিয়ে ইসলামি রাষ্ট্রের স্বপ্নপূরণ হবে। সমস্ত শাখাকে সমন্বিত করে যদি আগানো যায়্ তাহলেই ইসলামী রাষ্ট্র হবে।

এআরকে


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ