রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫ ।। ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ৪ মহর্‌রম ১৪৪৭

শিরোনাম :
টিএসসি প্রাঙ্গণ ইসলামী ছাত্র আন্দোলন-এর ফ্রি ইন্টারনেট সংযোগ চালু সকাল-বিকেল যে দোয়া পাঠে জাহান্নাম থেকে মুক্তি মেলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি: জমিয়ত একদিনে আরও ৩৮৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ নিহত ১৪ জন খামেনি মানবতার মুক্তির প্রতীক হয়ে থাকবেন: ইহুদি বিশ্লেষক ঢাকায় চালু হচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় ‘আগামী প্রজন্মকে সুন্দর শিক্ষা দিতে হলে শিক্ষকদের আন্তরিক হতে হবে’ এনবিআর কর্মকর্তাদের কঠোর বার্তা দিল সরকার নির্বাচনে ইসলামি মূল্যবোধ ও জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দেব: ইবনে শাইখুল হাদিস

বিএনপি ও জামায়াত- দুই দলেই কদর ইবনে শাইখুল হাদিসের!


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

|| বিশেষ প্রতিনিধি ||

একটি বৃহৎ ইসলামি জোট বা নির্বাচনী সমঝোতার আলোচনা অনেক দিন ধরেই জোরেশোরে চলছে। সেই জোটে জামায়াতসহ প্রায় সব ইসলামি দল থাকার ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত এই জোটে কোন দল থাকবে, কোন দল থাকবে না- সেটা এখনই নিশ্চিত করে কেউ বলছে পারছে না। তবে ত্রয়োদশ নির্বাচন সামনে রেখে ইসলামি দলগুলো ঘিরে নানা হিসাব-নিকাশ চলছে। অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এবার ইসলামি দলগুলোর কদর বেড়েছে। ভোটের সময় যত ঘনিয়ে আসবে ইসলামি দলগুলো নিয়ে টানাটানি আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। 

ইসলামপন্থীদের সব ভোট একবাক্সে ফেলার বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা নানা মহল থেকে আলোচিত হচ্ছে। ইসলামি দলগুলোর শীর্ষ নেতারা সেই কথা বারবার বলছেন। তবে বাস্তবে তা কতটা সম্ভব হবে সেটা নিয়ে রয়েছে সংশয়। এজন্য ইসলামি দলগুলো একদিকে জোটবদ্ধভাবে ভোটের প্রস্তুতি যেমন নিচ্ছে তেমনি ভেতরে ভেতরে বড় দলগুলোর সঙ্গেও একটা যোগাযোগ রাখছে। শেষ পর্যন্ত কে কার সঙ্গে যাবে এটা এখনই হলফ করে বলা যাচ্ছে না। সবকিছুর পরও ‘রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই’ সেই বিষয়টি রয়ে যায়। 

কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং নিবন্ধন স্থগিত হওয়ায় আওয়ামী লীগ যে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না সেটা প্রায় নিশ্চিত। আওয়ামী লীগের সহযোগী কিংবা দোসর হিসেবে পরিচিত দলগুলোও দৃশ্যপটের বাইরে। এমনকি জাতীয় পার্টিও ভোটের দৌড়ে তেমন আলোচনায় নেই। রাজনীতির মাঠে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত তিনটি দল- বিএনপি, জামায়াত এবং এনসিপি। এর মধ্যে বিএনপির সঙ্গে ছোট ছোট কিছু দল রয়েছে। তারা শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা করে ভোটে যাবে। এর বাইরে জামায়াত একটি আলাদা বলয় গড়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। সে লক্ষ্যেই দলটি অন্যান্য ইসলামি দল নিয়ে বৃহৎ জোট বা নির্বাচন সমঝোতা গড়ে তোলার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া ছাত্রদের নেতৃত্বাধীন নতুন দল এনসিপি কোন বলয়ে ভিড়বে নাকি নিজেরা স্বতন্ত্র বলয় গড়ে তুলবে তা এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। 

রাজনীতির মাঠে এই সময়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বলয় কর্তত্ব প্রতিষ্ঠায় মরিয়া। এজন্য দুটি দলই তাদের পাল্লা ভারী করতে চায়। ফলে অন্যান্য ছোট দলকে তাদের সঙ্গে ভেড়াতে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এতে কওমি মাদরাসাভিত্তিক ইসলামি দলগুলোর কদর বেশ বেড়েছে। একদিকে বিএনপি যেমন ইসলামি দলগুলোকে নিজেদের পাশে চাচ্ছে, তেমনি জামায়াতও চাচ্ছে তাদের সঙ্গে নিতে। তবে কে কার পক্ষে যাচ্ছে সেটা এখনো পরিষ্কার হয়নি। 

বিএনপি তাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বেশ কয়েকটি দলকে নিজেদের সঙ্গে নেওয়ার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত করেছে। ছোট দলের বড় কয়েকজন নেতাকে ইতোমধ্যে আসন দেওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার করেছে। এর বাইরে ইসলামি দলগুলোকেও বিএনপি তাদের সঙ্গে চায়। বিশেষ করে যারা বিভিন্ন সময় বিএনপির সঙ্গে ছিল তাদের আবারও দলটি নিজেদের সঙ্গে চাচ্ছে। এর মধ্যে বিএনপির বিশেষ নজর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির (ইবনে শাইখুল হাদিস) মাওলানা মামুনুল হকের ওপর। দলের চেয়ে ব্যক্তি মাওলানা মামুনুল হককে নিজের পক্ষে নিতে বিএনপির আগ্রহ বেশি। 

৫ আগস্টের পর থেকেই মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে বিএনপি একটি যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পরপর বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে দেখা করেছেন মাওলানা মামুনুল হক। এরপর থেকে নানাভাবে মামুনুল হককে নিজেদের বলয়ে ভেড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বিএনপি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে কিংবা ঢাকায় বিএনপি আয়োজিত তারুণ্যের সেমিনারে তাঁকে বিশেষ মেহমান হিসেবে দাওয়াত দেওয়াই সেটা প্রমাণ করে। 

সূত্র জানায়, মাওলানা মামুনুল হকের মতো একটি ভয়েসকে নিজেদের পক্ষে চায় বিএনপি। দলটি মনে করছে, এর মাধ্যমে এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের আরও কাছাকাছি যেতে পারবে তারা। এজন্য মাওলানা  মামুনুল হককে বিশেষ ছাড় দিতে প্রস্তুত বিএনপি। দলটি ঢাকার অন্তত দুটি আসনের যেকোনো একটি মাওলানা  মামুনুল হককে ছাড়তে চায়। এর একটি ঢাকা-১৩ (মোহাম্মদপুর-ধানমন্ডি) আরেকটি ঢাকা-৭ (লালবাগ-হাজারীবাগ)। বিএনপি অন্যান্য আসনে প্রাথমিক প্রার্থী বাছাই করলেও আসন দুটি ফাঁকা রেখেছে। যদিও মাওলানা মামুনুল হকের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সবুজ সংকেত পায়নি দলটি। তবে বৃহৎ ইসলামি জোট বাস্তবায়ন না হলে শেষ পর্যন্ত হেফাজতে ইসলামের আলোচিত এই নেতা বিএনপি শিবিরেই ভিড়তে পারেন। বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা করলে মাওলানা মামুনুল হক ছাড়াও আরও কয়েকটি আসনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ছাড় পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর বিএনপি সরকার গঠন করলে মন্ত্রিপরিষদে মাওলানা মামুনুল হকে দেখা গেলেও বিস্ময়ের কিছু থাকবে না। 

এদিকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও একটা যোগাযোগ আগে থেকেই আছে মাওলানা মামুনুল হকের। জামায়াত তাঁকে অন্যান্য ইসলামি নেতাদের তুলনায় বিশেষ গুরুত্ব দিতে থাকে। জামায়াতও নিজেদের সঙ্গে চায় মাওলানা মামুনুল হককে। অন্যান্য ইসলামি দলের সঙ্গে জোট হলে মাওলানা মামুনুল হকের দলেরও সেখানে থাকার কথা রয়েছে। এই জোটের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত এনসিপিও মিলতে পারে। তখন বিএনপির বিপরীতে একটি শক্তিশালী জোটে রূপ নেবে এই প্লাটফর্মটি। তবে সব আলোচনাই প্রাথমিক পর্যায়ে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে এসব বিষয় ততই পরিষ্কার হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ