মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫ ।। ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ৬ মহর্‌রম ১৪৪৭

শিরোনাম :
‘জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে না পারা এই সরকারের বড় ব্যর্থতা’ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলেই মৃত্যুদণ্ড, ইরানে নতুন আইন ইসরাইলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের আহ্বান ইরানি সুন্নি আলেমদের মিশরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের গৌরবময় অর্জন আফগানিস্তানে অনৈসলামিক কার্যকলাপের অভিযোগে গুঁড়িয়ে দেয়া হল মাজার দুঃখ প্রকাশ না করা পর্যন্ত শান্তি পাবে না: আ. লীগকে শফিকুল আলম জুলাই বিক্রি হয়ে গেছে : আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান আলিম পরীক্ষায় শেখ মুজিবকে নিয়ে প্রশ্ন, ছাত্রদের ক্ষোভ প্রকাশ হাসিনা ও তার দলের প্রতি আপনাদের মনোযোগ যথাযথ না থাকলে ইনসাফ হবে না মুজিববাদী সংবিধান ফেলে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে: আখতার হোসেন

ঈদের সংস্কৃতি ও আমাদের ভাবনা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

eid mubarakআরশাদ ইলয়াস : মুসলিম হিসেবে ইসলামের উসীলায় আমরা দুটি ঈদ পেয়েছি। ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। ঈদ আল্লাহর দেয়া একটি বিশেষ নিয়ামত। এ নিয়ামতের অবশ্যই কদর করা উচিত। ইসলামী নিয়মে ঈদ পালন করলেই ঈদের যথার্থ কদর হয়। অন্যথায় ঈদের যথাযথ মূল্যায়ন হয় না।

নিছক আনন্দ উপভোগ ঈদের উদ্দেশ্য নয়। নিজের সুখ অপরকে বিলি করা, অন্যের দুঃখের অংশীদার হওয়া, ধনী-গরিবের ভেদাভেদ ভুলে সবাই এক কাতারে শামিল হওয়া ঈদের মূল উদ্দেশ্য। তাই ঈদ উপলক্ষে বিশেষ দান 'ফিতরা'র বিধান রয়েছে। যেন সবাই একই সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারে।

পবিত্র মাস রমাদানের অব্যবহিত পরেই আসেই ঈদুল ফিতর। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের নির্ধারিত দিনগুলোর পরে এই ঈদ আসার মানে হলো, আমরা যেনো পবিত্র হয়ে এই ঈদ উদযাপন করি। যাতে আমাদের ঈদ উদযাপন সার্থক হয়। ইসলামের নিয়মে ঈদ পালন করতে সহজ হয়। কিন্তু কিছু লোক তবুও পবিত্র হতে চায় না। তারা পুরো বছর মনমতো চলে। পবিত্র মাসেও, পবিত্র দিনেও তারা শুদ্ধ হতে চায় না। এরা ঈদকে শুধু আনন্দ উপভোগের মাধ্যম মনে করে।

ঈদের দিনে নতুন কাপড় পরা সুন্নাত। তবে যাদের নতুন কাপড় নেই তারা ব্যবহৃত কাপড় পরিস্কার করে পরিধান করবে। শুধু নতুন কাপড় পরলে হবে না, তা সুন্নাহসম্মত কিনা তাও দেখতে হবে। অন্যথায় গুনাহগার হতে হবে। পুরুষের জন্যে মেয়েলি স্বভাবের কাপড় পরা নিষেধ। আর নারীরা যেন পুরুষালি কাপড় না পড়ে। নারী-পুরুষ উভয়ের জন্যে টাইটফিট কাপড় বৈধ নয়। অতি পাতলা অথবা অঙ্গ প্রকাশ পায় এমন কাপড় পরা নারীদের জন্য অবৈধ। ঈদকে কেন্দ্র করে অনেককে এমন পোশাক পরিধান করতে দেখা যায়, যা ইসলামসম্মত নয়।

পারস্পরিক সম্পর্ক রক্ষা, সহানুভূতি প্রদর্শন, ভ্রাতৃত্ব স্থাপন, আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখা ঈদের অন্যতম উদ্দেশ্য। সে হিসেবে ঈদে আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশি, বন্ধুবান্ধব ও হিতাকাঙ্ক্ষীদের কাছে বেড়াতে যাওয়ার প্রচলন রয়েছে। এছাড়া লোকজন বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রেও বেড়াতে যায়। এতে কোনো আপত্তি নেই। আপত্তির বিষয় হলো, পর্দাহীন যুবক-যুবতীদের জুটিবদ্ধ হয়ে এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়ানো। বছরের প্রায় সময় এ দৃশ্য দেখা গেলেও ঈদ উপলক্ষে এই নীতিহীন অপ্রীতিকর দৃশ্য বেশি দেখা যায়। যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ অবস্থার পরিবর্তনে মা-বাবা ও অভিভাবকদের সচেতন হবে। নিজেদের সন্তানদের লাগামহীন ছেড়ে দেয়া থেকে বিরত থাকবে। সাবালিকা মেয়েদের ঘর থেকে মাহরাম ছাড়া একাকি বের হতে দেয়া যাবে না।

ঈদে টিভি-চ্যানেলগুলো বিশেষ কিছু অনুষ্ঠান প্রচার করে। অধিকাংশ অনুষ্ঠান নৈতিকতাবর্জিত, অশ্লীল হয়ে থাকে। আর এই অনুষ্ঠানগুলো অনেকে সপরিবারে দেখে। যার কারণে ছেলে-মেয়েরা অবৈধ কাজ করতে সংকোচবোধ করে না, যেহেতু তারা পারিবারিকভাবে এসব দেখার সুযোগ পায়। ফলশ্রুতিতে মা-বাবার সাথেও এরা বেয়াদবি করতে দ্বিধাবোধ করে না।

ঈদ মূলত ইসলামের নিজস্ব সংস্কৃতি। এটা ইসলামের স্বকীয় বিশেষ বৈশিষ্ট্য। কিন্তু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো এই ঈদকে এমনভাবে উপস্থাপন করে, যাতে ইসলামের কোনো নিয়ম অনুসরণ করা হয় না। মনে হয়, এ যেন ভিন্ন ধর্মের কোনো উৎসব। বিদেশি সংস্কৃতি বিশেষত ভারতীয় সংস্কৃতি চ্যানেলগুলোতে প্রাধান্য পায়। | ইসলামের ঈদ ইসলামের নিয়মে পালন করতে হবে। অন্য নিয়মে পালন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। যেহেতু ঈদের শিক্ষা নিছক নিয়মবহির্ভূত আনন্দদান নয়। যে উদ্দেশ্যে ঈদের প্রচলন হয়েছে, সে উদ্দেশ্য পূরণ হলেই আমাদের ঈদ উদযাপন সার্থক হবে। মুসলিম হয়েও যারা ইসলামের কিছু নিয়ম মানে, আর কিছু মানে না, তাদের শাস্তি হলো দুটি। এক. দুনিয়ায় চরম লাঞ্ছনা, দুই. পরকালে কঠিন শাস্তি। তাই আসুন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামের নিয়ম মেনে চলি। একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করি। আল্লাহ আমাদের সেই সুযোগ দান করুন।

আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম /আরআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ