মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫ ।। ৪ ভাদ্র ১৪৩২ ।। ২৫ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
বিএনপি কি ইসলামপন্থীদের আস্থা হারাচ্ছে?  নোয়াখালীতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৩০০ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা গণতন্ত্রকামী দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হলে ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসন হবে: তারেক রহমান ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী ৬৫৮ জন, হল সংসদে ১ হাজার ৪২৭ মাইলস্টোনের তিন শিক্ষক জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন জুমার নামাজে না গেলে দুই বছরের দণ্ড হতে পারে  রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য নির্বাচন জরুরি: মির্জা ফখরুল সৌদি আরবে নতুন হজ কাউন্সেলর কামরুল ইসলাম তাওয়াফের সময় হাজরে আসওয়াদের সামনে দাঁড়িয়ে না থাকার নির্দেশ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ১০০০ বৃক্ষরোপণ

ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধ সময়ের দাবি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

Medicineমোস্তফা ওয়াদুদ : আমাদের শারীরিক অসুস্থতার জন্য আমরা ওষুধ সেবন করে থাকি। ক্যাপসুল, সিরাপ ও অন্যান্য ট্যাবলেট ভক্ষণ করি। যাতে আমাদের রোগের আরোগ্য হয়। আমরা মুক্তি পাই জটিল কঠিন ব্যাধি থেকে।

এখন রোগ মুক্তির অন্যতম  পাথেয় যদি ভেজালময় হয় তাহলে তো আমাদের শরীরের রোগ ক্রমাহত  বৃদ্ধি পাবে। শারীরিক অসুস্থতা মহামারী আকার ধারণ করবে। তাই ভেজাল ও নকল ওষুধ প্রতিরোধে এখনি ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

রাজধানীতে একশ্রেণির ওষুধ কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে জীবন রক্ষাকারী ওষুধে ভেজাল মিশিয়ে আসছে। এর মাধ্যমে তারা একটি জঘণ্য অপরাধ করে আসছে। এই ভেজাল ও নকল ওষুধগুলো বিশেষ করে রাজধানীর মিটফোর্ডসহ দেশের বৃহত্তর ওষুধ বাজারে এমনভাবে ঢুকে পড়ছে যা যাচাই-বাছাই করা দুষ্কর হয়ে পড়ছে। এতে দেশের সাধারণ ভোক্তার পাশাপাশি ওষুধ ফার্মেসি বা ওষুধের ক্ষুদ্র দোকানগুলো  মারাত্মক বিপদে পড়ছে। অনেকক্ষেত্রে তাদের পক্ষে আসল ও ভেজাল ওষুধ চেনা খুবই দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে।  এতে করে সময় সময় ঐ সকল ওষুধের ফার্মেসি বা ওষুধ বিক্রেতাকে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। হতে হচ্ছে অপমানিত। দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও  তৎসংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের নজরদারী, তদারকি ও পরিদর্শনের অভাবে দেশের নামিদামি ওষুধ কোম্পানিগুলোর নাজুক অবস্থা হচ্ছে ।

অত্যন্ত উদ্বেগজনক হচ্ছে, দেশের অনেক ওষুধ কোম্পানিগুলো নিম্মমানের ওষুধ তৈরির পাশাপাশি নামিদামি কোম্পানির উন্নতমানের ওষুধ নকল করা শুরু করেছে। এতে যেমনি ক্ষুন্ন হচ্ছে কোম্পানির  মান। তেমনি মানুষও হচ্ছে প্রতারিত। বেড়ে যাচ্ছে রোগের পরিধি। কষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষের। বিপদে পড়ছে ভোক্তামহল।

সুতরাং রোগীকে বাঁচাতে হলে, সাধারণ জনগণকে সঠিক ওষুধ প্রদান করতে হলে ওষুধের গুণগত মান রক্ষার্থে সরকারকে কঠোর হতে হবে। কোম্পানির ওষুধ তৈরি থেকে  নিয়ে বাজারজাত করা পর্যন্ত পর্যাপ্ত নজরদারি করতে হবে। এবং যথাযথ ব্যবস্থা নিতে। এক্ষেত্রে  শুধু লাইসেন্স বাতিল নয়, কালক্ষেপণ না করে নকল, বিষাক্ত ও ভেজাল বা নিম্মমানের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

সরকারি নজারদারির পাশাপাশি ভেজাল ও নকল ওষুধ বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ওষুধের ফার্মেসিগুলোকে সচেতন হতে হবে। বাড়তি অর্থের লোভে কোন ওষুধের দোকান বা ফার্মেসিগুলো জড়িত হয়ে না পড়ে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে ‘বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ও ড্রাগিস্ট সমিতি’ কে। তাদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। রক্ষা করতে হবে সাধারণ রোগীদের। জনস্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

মূলত ওষুধ নকল করা কিংবা প্রয়োজনীয় উপাদানের ভেজাল দেয়ার ঘটনা নীরবে মানুষ হত্যা করা। কারণ, এ সকল ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কেউ কেউ ক্যান্সারের মতো রোগের ওষুধেও ভেজাল দিচ্ছে। দিক নির্দেশনা না মেনে অনেক কোম্পানি তৈরি করছে নিম্মমানের এন্টিবায়োটিক।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ওষুধ ব্যবসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন যাবৎ ‘ড্রাগ লাইসেন্স’ বন্ধ করে রাখা হযেছে। কর্মসংস্থান ও ওষুধে ব্যবসা সামাজিকভাবে ভদ্র ও ভালো অবস্থানে থাকায় আজকাল শিক্ষিত লোকজন এই ব্যবসার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। সেবামূলক ব্যবসা হওয়া সত্ত্বেও ড্রাগ লাইসেন্স ওষুধ ব্যবসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ফার্মাসিস্টদের জন্য স্বল্পমেয়াদী কোর্সটিও বন্ধ রয়েছে। পুনরায় ড্রাগ লাইসেন্স চালুর মাধ্যমে সরকার অনেক রাজস্ব আয় করবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। রোগী ও মানুষের জীবন বাঁচাতে ওষুধের গুণগত মান রক্ষার্থে সরকারকে কঠোর হবার পাশাপাশি দেশের সকল ওষুধ বিক্রেতা ও ফার্মেসিগুলোকে নকল ও ভেজাল ওষুধ বিক্রি পরিহার করে দেশের মানুষের জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানাচ্ছি।

বারিধারা, ঢাকা -১২১২


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ