শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ।। ৫ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিরোনাম :
শিক্ষক ও বাবুর্চি নিয়োগ দেবে রাজধানীর আল্লামা শামসুল হক রহ.মাদরাসা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে কি ইসলামি দলগুলো? পাঠ্যপুস্তকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে স্মার্ট জেনারেশন সৃষ্টি সম্ভব নয়: শিক্ষামন্ত্রী বিচ্ছিন্নভাবে দে‌শের স্বার্থ অর্জন করার সুযোগ নেই : সেনা প্রধান স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ করব : স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাত্রাবাড়ীতে দুই বাসের মাঝে পড়ে ট্রাফিক কনস্টেবল আহত আ.লীগের মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা; অমান্য করলে ব্যবস্থা ফকিহুল মিল্লাত রহ. এর পরামর্শ -‘ফারেগিন কার সঙ্গে পরামর্শ করবে’ ঢাকায় চালু হলো চীনা ভিসা সেন্টার ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়া নিয়ে ভোট শুক্রবার

ডাকসু নির্বাচনে লড়ছে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রকিব মুহাম্মদ
আওয়ার ইসলাম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ২০১৯ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চলেছে দেশের অন্যতম ইসলামী ছাত্র সংগঠন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন (ইশা ছাত্র আন্দোলন)।

আসন্ন নির্বাচনে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে মনোনয়ন পেয়েছে ভিপি পদে মনোনয়ন সংগ্রহকারী আতায়ে রাব্বী এবং জিএস পদে মাহমুদুল হাসান এবং এজিএস পদে মুহাম্মদ শরিয়তুল্লাহ প্রার্থীতা পেয়েছেন বলে ডাকসুর ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়।

গতকাল বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০১৯ এর রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

প্রার্থীদের ব্যাপারে ইসলামি শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মাসউদ আওয়ার ইসলামকে বলেন, আমাদের প্যানেলে প্রার্থী হিসেবে যাদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, তারা সবাই ঢাবি ক্যাম্পাসে দলের জন্য কাজ করেছেন। আমরা সাংগঠনিক পরিচয়ের বাইরে এসে তাদের মনোনয়ন দিয়েছি।

দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল যে ডাকসু নির্বাচনে ইসলামি দলগুলোকে অংশ নিতে দেওয়া হয় না। তবে চলতি বছরে ইশা ছাত্র আন্দোলনের প্রচেষ্টায় অসাংবিধানিক সব জটিলতা দূর করে দলটিকে নির্বাচনে আসার অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে শেখ ফজলে বারি মাসউদ জানান, ইতিপূর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামি রাজনীতি আইনগত নিষিদ্ধ ছিল না এবং এখনো নেই।

তিনি বলেন, ৯০ শতকের দিকে ছাত্র সংগঠনগুলো পরিবেশ পরিষদ নামে একটি বোর্ড গঠন করে এবং তারা ইসলামি মৌলবাদের অভিযোগ এনে ইসলামপন্থীদের রাজনীতি নিষিদ্ধের হইহুল্লোড় করতো। কিন্তু তারা এমন কোনো আইন করতে পারবে বলে সাংবিধানিক কোনো বৈধতা ছিল না।

এ কারণে চলতি বছরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সবগুলো দলের সহাবস্থান নিশ্চিত করতেে ইশা ছাত্র আন্দোলনকে ডাকুস নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো ধরণের বাধা প্রদান করেনি বলেও জানান তিনি।

জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদি –এ প্রশ্নে ফজলুল করীম মাসউদ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন আর বামপন্থীদের অভায়ারণ্য নেই। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থী ইসলামি মূল্যবোধে বিশ্বাসী। এছাড়াও মাদরাসা থেকে অনেক ছাত্র ঢাবিতে সুনামের সাথে পড়ালেখা করছেন। আমরা আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ইশা ছাত্র আন্দোলন তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে।’

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী দীর্ঘ ২৮ বছর পরে আদালতের নির্দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) আগামী ১১ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সংসদ ডাকসুতে বৈধ প্রার্থী রয়েছেন ২৩১ জন। বাদ পড়েছেন ৭ প্রার্থী। এছাড়া হল সংসদে ৫৯৪ প্রার্থীর মধ্যে ২৪ জনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। ফলে ১৮টি হলে এখন বৈধ প্রার্থী ২৭৪ জন।

প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ১৯২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ’ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে পূর্বনাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’ গ্রহণ করা হয়।

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত মোট সাতবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ডাকসু নির্বাচন। সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯০ সালের জুলাই মাসে।

উল্লেখ্য, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশের একটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল। ১৯৮৭ সালে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন নামে প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নামেই এ দল নিবন্ধিত। এর নির্বাচনি প্রতীক হাতপাখা। এ দলটির বর্তমান প্রধান হচ্ছেন চরমোনাইয়ের পীর মাওলানা সৈয়দ রেজাউল করীম।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ১৯৮৭ সালে ১৩ মার্চ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়। সর্বপ্রথম এ সংগঠন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন নামে আত্মপ্রকাশ করে। তৎকালীন সময়ে সংগঠনটির আমির নির্বাচিত হন মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ ফজলুল করিম ও সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন ব্যারিস্টার কোরবান আলী।

বর্তমানে দলটির শীর্ষ নেতৃত্বে আছেন ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ এবং যুগ্ম-মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন। নির্বাচন কমিশনে এটি ৩৪ নম্বর নিবন্ধনভুক্ত দল। বাগেরহাট, খুলনা ও বরিশালে তাদের জনপ্রিয়তা রয়েছে।

এ দলটির লক্ষ্য, প্রচলিত জাহেলি সমাজব্যবস্থার পরিবর্তন সাধন করে ইসলামী আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে খেলাফতে রাশেদা নমুনায় বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করা। উদ্দেশ্য হচ্ছে, দুনিয়ায় শান্তি ও আখিরাতের মুক্তি লাভের জন্য আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জন।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ