শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ১১ পৌষ ১৪৩২ ।। ৬ রজব ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামপন্থীদের ‘একবাক্স নীতি’ কি মুখ থুবড়ে পড়ছে? শহীদ হাদির আদর্শ সামনে রেখে মিশরে 'আজহার আফকার'র যাত্রা আবারও বাংলাদেশি সন্দেহে ভারতে মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা তারেক রহমানের দেশে ফেরা গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ অর্জন: হাসনাত ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা ইসলামী আন্দোলনের এভারকেয়ার থেকে গুলশানের বাসার উদ্দেশে তারেক রহমান সাহিত্য সভায় বিশেষ সম্মাননা পেলেন কবি ও লেখক মোহাম্মদ কুতুবউদ্দিন মহানবী (সা.)-এর ন্যায়পরায়ণতার আলোকে দেশ পরিচালনা করবো: তারেক রহমান ১ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে যা বললেন পীর সাহেব চরমোনাই

ইজতেমায় আলেমদের ওপর হামলা: বর্তমান প্রেক্ষাপট ও ভাবনার দিকনির্দেশনা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মুহাম্মাদ শোয়াইব ||

গত রাতে টঙ্গীর ময়দানে ওলামা-পন্থীদের উপর সংঘটিত ভয়াবহ আক্রমণ দেশের সচেতন মহলে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এটি শুধু একটি হামলার ঘটনা নয়; বরং দ্বীনি কাজের নামে সংঘটিত এক গভীর সংকটের প্রতিফলন। ২০১৮ সালেও একই ময়দানে ওলামায়ে কেরাম মারাত্মক জুলুমের শিকার হয়েছিলেন। তাদের রক্তের দাগ এখনো শুকায়নি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, তখনকার মতো এবারও তারা রাষ্ট্র বা প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো সুবিচার পাচ্ছেন না। 

ওলামাপন্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী নেতৃত্ব প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক কাঠামোতে খুবই দুর্বল। তাদের পক্ষে কোনো ধরনের সঠিক লবিং বা কূটনৈতিক তৎপরতা সফল হতে দেখা যায়নি। এমনকি তারা কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করবেন, কার সাথে বসবেন বা কীভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করবেন, সেগুলোও সম্ভবত পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারছেন না। 

এছাড়া, মূলধারার গণমাধ্যমেও তাদের প্রতিনিধিত্ব নেই বললেই চলে। বেশিরভাগ গণমাধ্যমে ওলামাপন্থীদের বক্তব্য বা অবস্থান সঠিকভাবে তুলে ধরা হচ্ছে না বরং একপাক্ষিক রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে হামলাকে সাধারণ মারামারি হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। 

তাবলীগের দাওয়াতি কাজে দিল্লির সাদের ভুল ভূমিকা বহুবার সমালোচিত হয়েছে। তার সিদ্ধান্ত ও কর্মকাণ্ডের কারণে দারুল উলুম দেওবন্দ ইতোমধ্যেই তার বিরুদ্ধে ফতওয়া জারি করেছে। ওলামায়ে কেরাম সাদকে বারবার সতর্ক করেছেন এবং তার ভুল শুধরে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি তা করায় কোনো আগ্রহ দেখাননি। এ অবস্থায় টঙ্গীর ময়দানে ওলামায়ে কেরামের উপস্থিতি ও নেতৃত্ব থাকা স্বাভাবিক ও ন্যায়সংগত। কারণ তাবলীগের এই দাওয়াতি কাজের নেতৃত্ব বরাবরই ওলামায়ে কেরামের অধীনেই ছিল। 

সরকার সাদপন্থীদেরকে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তুলেছে। অথচ এটি একটি দ্বীনি বিষয়ে ওলামায়ে কেরামের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু প্রশাসনের একতরফা পদক্ষেপ দ্বন্দ্ব বাড়িয়ে তুলেছে এবং উগ্রপন্থীদেরকে উসকে দিয়েছে। 

 

বিশেষ করে ছাত্রনেতা সার্জিস আলম ও হাসানাত আব্দুল্লাহর ভূমিকা এই সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। তাদের পক্ষপাতমূলক অবস্থান সাদপন্থীদেরকে আগ্রাসী হতে উৎসাহিত করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

টঙ্গীর ময়দানে সংঘটিত এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা জরুরি। তাবলীগের দাওয়াতি কাজ ওলামায়ে কেরামের নেতৃত্বেই থাকা উচিত, কারণ এটি সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত একটি কাজ। দ্বন্দ্ব নিরসনে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে এবং ওলামায়ে কেরামের প্রস্তাবকে গুরুত্ব দিতে হবে। 

আমরা আশা করি, এ ধরনের আক্রমণ যেন দ্বীনি কাজের শান্ত পরিবেশকে আর ক্ষতিগ্রস্ত না করে এবং ওলামায়ে কেরামের ন্যায্য দাবি সম্মানের সাথে প্রতিষ্ঠিত হয়।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ