অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই চট্টগ্রাম বন্দর হৃদপিণ্ড শুধু বাংলাদেশের জন্য না, আশপাশের দেশগুলোর জন্যও সংযুক্ত। বন্দরের সঙ্গে যুক্ত হলে নেপাল, ভুটান ও সেভেন সিস্টার্সও লাভবান হবে।
ড. ইউনূস আজ বুধবার চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন এবং বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বন্দর শিপিং সার্কেল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে একথা বলেন।
এ সময়ে তিনি বলেন, নেপালের কথা বললাম, ভুটানের কথা বললাম, সেভেন সিস্টার্সের কথা বললাম। সবার জন্য হৃদপিণ্ড একটাই। নেপালের জন্য হৃদপিণ্ডই নেই। কাজেই আমাদের হৃদপিণ্ড দিয়ে তাদেরও চলতে হবে। আমরা তাকে সংযুক্ত করতে চাই। আমাদেরই লাভ। তাদেরও লাভ। এমন নয় যে এটা মেহেরবানি করছি, মেহেরবানির বিষয় নয়। এ হৃদপিণ্ডে যদি সংযুক্ত হয় সেও লাভবান হবে আমরাও লাভবান হবো। ভুটান সংযুক্ত হলে সেও লাভবান হবে আমরাও লাভবান হবো। সেভেন সিস্টার্স যদি সংযুক্ত হয় তারাও লাভবান হবে আমরাও লাভবান হবো। এ হৃদপিণ্ডকে বাদ দিলে চললে যারা এটাকে বাদ দেবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রক্ত সঞ্চালন হবে না সেখানে, অর্থনীতির গতি সঞ্চালন হবে না। এটা তাদেরও কাম্য নয় আমাদেরও কাম্য নয়। আমরা চাই সবাই মিলে এ বন্দর থেকে সঞ্চালনটা পাই। অর্থনৈতিক শক্তিটা পাই।
সবকিছু বদলায়, কেন চট্টগ্রাম বন্দর বদলায় না, কেন গতি শ্লথ, হৃদপিণ্ড কেন রোগাক্রান্ত এই প্রশ্ন করে ড. ইউনূস বলেন, আমি সংশ্লিষ্টদের বললাম, আর কথা শুনতে চাই না। অমুক তারিখের মধ্যে বন্দর ব্যবস্থাপনায় পৃথিবীর সেরা যারা তাদের হাতে দিয়ে দিতে হবে, যেভাবেই হোক। মানুষ যদি রাজি না থাকে তাদের রাজি করাতে হবে। মানুষকে গররাজি করে করার দরকার নাই। কারণ এমন একটা বিষয়, পুরো জিনিসটা শুনলে গররাজি হওয়ার কারণ নাই। সবাই চায় তার ভালো হোক। না বোঝার কারণে আমার ক্ষতি হবে, এটা হলে ভালো হবে না, এটা তো আমাদের ছিল, ওদের কেন দিচ্ছেন এসব কথা আসবে। তিনি বলেন, বন্দর নিয়ে চিন্তার কারণ হলো বাংলাদেশের অর্থনীতি পাল্টাতে হবে।এটাকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির নতুন কোনো পাতা, নতুন কোনো অধ্যায়ে প্রবেশ করার কোনো সুযোগ নেই। এ পথ খুলে দিলে বাংলাদেশের অর্থনীতির পথ খোলে। এ পথ না খুললে বাংলাদেশের অর্থনীতির পথ যতই লাফালাফি করো, ঝাপাঝাপি করো কিছুই হবে না। আমরা যদি একমত হই বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃদপিণ্ড হলো চট্টগ্রাম বন্দর। তাহলে যে সাইজের বন্দর আছে, যে সাইজের হৃদপিণ্ড আছে ওই সাইজের চলে না। এ হৃদপিণ্ড বিশ্ব সাইজের হতে হবে।
আমরা বললাম পৃথিবীর সেরা বন্দর ব্যবস্থাপক যারা আছে তাদের ডাকো।আমাদের যে সুযোগ আছে হৃদপিণ্ডকে (বন্দর) যে সাইজের কল্পনা করি এটা বিশ্বমানে পরিবর্তন না করে বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিবর্তন সম্ভব না।
এমএইচ/