বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫ ।। ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১৯ সফর ১৪৪৭


সিন্ধু নদের পানি ইস্যুতে ভারতকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়ার হুমকি শেহবাজের


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

ভারত যদি সিন্ধু নদের পানি স্থায়ীভাবে আটকে রাখার চেষ্টা করে, তবে দেশটিকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে ইসলামাবাদে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ হুমকি দেন।

শেহবাজ বলেন, “আমি স্পষ্টভাবে শত্রুদের বলতে চাই—আমরা আমাদের পানির এক ফোঁটাও কাউকে নিতে দেব না। যদি আপনারা পানি আটকে রাখার পরিকল্পনা করেন এবং তা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেন, তাহলে এমন শিক্ষা দেবো যে সারা জীবন মনে রাখবেন।”

গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৫ জন ভারতীয় ও একজন নেপালি পর্যটক নিহত হন। পাকিস্তানি কাশ্মিরভিত্তিক ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ হামলার দায় স্বীকার করে। এর পরপরই ভারত সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে, ফলে সিন্ধু, চেনাব ও ঝিলাম নদীর পানিপ্রবাহ ব্যাপকভাবে কমে যায় এবং পাকিস্তানের কৃষি উৎপাদন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ে।

পাকিস্তান বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতে (পিসিএ) মামলা করে। ৮ আগস্ট রায়ে আদালত চুক্তি সচল রাখা এবং ভারতকে এতে ফিরে আসার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি আদালত জানায়, ভারত যদি সিন্ধু নদের ওপর বাঁধ বা অন্য কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে চায়, তবে তা অবশ্যই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী হতে হবে।

ভারত এখনো এ রায়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে পাকিস্তান একে স্বাগত জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ভারতকে চুক্তিতে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে।

এর আগে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনির যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে বলেছিলেন, “ভারত বাঁধ নির্মাণ শেষ করুক, তারপর আমরা ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র মেরে তা ধ্বংস করব। সিন্ধু নদ ভারতের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, আর আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের কোনো অভাব নেই।”

সেনাপ্রধানের এই কঠোর অবস্থানের পর এবার প্রায় একই ভাষায় ভারতকে হুঁশিয়ার করলেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ।

সিন্ধু পানি চুক্তি সংক্ষেপে
১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বরে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান সিন্ধু পানি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এতে ভারতকে পূর্বাঞ্চলের ইরাবতী, বিপাশা ও শতদ্রুর পানি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয় এবং পাকিস্তানকে পশ্চিমাঞ্চলের সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাব নদীর অধিকাংশ পানি ব্যবহারের অধিকার দেওয়া হয়। চুক্তি একতরফাভাবে বাতিল বা স্থগিত করার সুযোগ নেই; বরং বিরোধ নিষ্পত্তির স্পষ্ট বিধান রয়েছে।

সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাবের প্রবাহ পাকিস্তানের কৃষি, শহর ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য অপরিহার্য। দেশটির সেচব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম, যা প্রায় পুরোপুরি এসব নদীর অবিচ্ছিন্ন পানিপ্রবাহের ওপর নির্ভরশীল।

সূত্র: ডন, আনাদোলু এজেন্সি

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ