বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫ ।। ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১৩ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী আইন হবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ জুলাই সনদ ও পিআর নিয়ে সুরাহা না করেই নির্বাচন আয়োজনে উদ্বেগ: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের আহ্বান ওসমান বিন হাদীর ফ্যাসিবাদ নির্মূল ও পূর্ণ সংস্কারের জন্য ঐক্যের আহ্বান: বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন বিএনপি কোনো দক্ষিণপন্থি বা উত্তরপন্থি দল নয়: সালাহউদ্দিন আহমদ রমজানের আগে নির্বাচন দিয়ে সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেছে : রিজভী নির্বাচনের আগে সংস্কার, বিচার ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে: খেলাফত মজলিস জিম্মিদের প্রাণহানির আশঙ্কায় গাজা দখলের বিরোধিতা করলেন ইসরায়েলের সেনাপ্রধান সবার আগে ডাকসু নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন কানাডায় ইসলামবিদ্বেষ ও ঘৃণাজনিত অপরাধ বেড়েছে ১৮০০ শতাংশ

কাশ্মির নিয়ে লেখা ২৫ বই নিষিদ্ধ করল ভারত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কাশ্মির ইস্যুতে লেখালেখির ওপর আরও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার। কাশ্মির নিয়ে লেখা ২৫টি বই নিষিদ্ধ করেছে নয়াদিল্লি।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বুধবার জম্মু ও কাশ্মিরের দিল্লি-শাসিত স্বরাষ্ট্র দপ্তর ২৫টি বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এসব বইকে ‘সন্ত্রাসবাদকে গৌরবান্বিত’ ও ‘ভারতের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদে উসকানিমূলক’ বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। এসব বইয়ের লেখকরা ভারতের, কাশ্মিরের ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত ব্যক্তিত্ব।

নিষিদ্ধ বইগুলোর তালিকায় রয়েছে— অরুন্ধতী রায়ের ‘আজাদি’, এজি নূরানির ‘দ্য কাশ্মির ডিসপিউট ১৯৪৭-২০১২’, ভিক্টোরিয়া স্কোফিল্ডের ‘কাশ্মির ইন কনফ্লিক্ট’ এবং ক্রিস্টোফার স্নেডেনের ‘ইন্ডিপেডেন্ট কাশ্মির’।

এছাড়া সুমন্ত্র বোস, হাফসা কানজোয়াল, অনুরাধা ভাসিন, রাধিকা গুপ্তা, এসার বতুল, আথার জিয়া, পঙ্কজ মিশ্র, হ্যালি ডুশিনস্কি, মোনা ভান, পিয়ত্র বালসেরোভিচ এবং আগনিস্জকা কুশেভস্কার বইও নিষিদ্ধের আওতায় পড়েছে।

ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বইগুলো ‘অভিযোগ, ভুক্তভোগী ব্যক্তির সংস্কৃতি এবং সন্ত্রাসবাদীদের বীর বানানোর ধারা’ তৈরি করে, যা ইতিহাসকে বিকৃত করে এবং সেনাবাহিনীকে অপমান করে উগ্রপন্থা বাড়ায়। এসব বইকে দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার জন্য হুমকি বলেও উল্লেখ করা হয়।

২০২৩ সালের ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা আইনের ৯৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই বইগুলো বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হাফসা কানজোয়াল বলেন, “কাশ্মির নিয়ে যারা গবেষণা করেছেন, তাদের কাছে এটা অবাক হওয়ার কিছু নয়”। তিনি বলেন, ভারতের দীর্ঘ দখলদারি শুরু থেকেই তথ্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে আসছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং কাশ্মিরবাসী—  দু’পক্ষের কাছেই। তার নিজের বই ‘কলোনাইজিং কাশ্মির: স্টেট-বিল্ডিং আন্ডার ইন্ডিয়ান অকুপেশন’-ও নিষিদ্ধ হয়েছে।

‘দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব কাশ্মির আফটার আর্টিকেল ৩৭০’ বইয়ের লেখক অনুরাধা ভাসিনও সরকারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “সব বই-ই গবেষণালব্ধ। একটিও সন্ত্রাসবাদকে গৌরবান্বিত করে না। সরকারের মিথ্যা আখ্যানকে চ্যালেঞ্জ করলেই যদি ভয় হয়, তাহলে সেই ভয়ই অনেক কিছু বলে দেয়।”

গত কয়েক মাস ধরেই জম্মু ও কাশ্মিরে বইয়ের দোকানে হানা, বই বাজেয়াপ্ত করার মতো পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে শ্রীনগরের দোকানগুলো থেকে অন্তত ৬৬৮টি বই জব্দ করা হয়, যার বেশিরভাগই ছিল আবুল আ'লা মওদুদীর লেখা বই।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ কাশ্মিরের বিতর্কিত ইতিহাস ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিকল্প বয়ানগুলো দমন করারই অংশ।

উল্লেখ্য, কাশ্মির নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েক দশকের বিরোধ চলছে। দুই পক্ষই পুরো কাশ্মির নিজেদের দাবি করলেও আলাদা অংশ নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। ১৯৮৯ সাল থেকে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে শুরু হয় সশস্ত্র প্রতিরোধ, যেখানে অনেক মুসলিম স্বাধীনতা কিংবা পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পক্ষে। ভারত পাকিস্তানের ওপর এই বিদ্রোহে মদদের অভিযোগ করলেও ইসলামাবাদ বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছে। অন্যদিকে কাশ্মিরিরা এই আন্দোলনকে বৈধ স্বাধীনতা আন্দোলন হিসেবেই দেখে।

এই দীর্ঘ সংঘাতে এখন পর্যন্ত লাখো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেসামরিক, যোদ্ধা ও সেনাসদস্যও রয়েছেন। জাতিসংঘ একাধিকবার এই অঞ্চলে গণভোটের আহ্বান জানালেও তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ