পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের জোরাল হচ্ছে ‘মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা’র গুঞ্জন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে রাজনীতি থেকে সরানোর গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ তুলেছে তার দল। এই পরিকল্পনাকে তারা সরাসরি পাকিস্তানের গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এবং ‘অবশ্যই ব্যর্থ’ ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছে।
খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ইমরান খানকে বাদ দিয়েই খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলে গভর্নর শাসন চাপানোর ছক চলছে। বাজেট প্রণয়নের সময় ইমরানের মতামত উপেক্ষা করাও সেই পরিকল্পনারই অংশ বলে দাবি করেন তিনি। তার ভাষায়, "ইমরান খানকে বাদ দিয়ে পাকিস্তানের রাজনীতি কল্পনাই করা যায় না।"
অন্যদিকে, সরকার সমর্থিত পিএমএল-এনের নেত্রী আজমা বুখারি পাল্টা অভিযোগে বলেন, ইমরান খানকে সরানোর মূল ষড়যন্ত্র আসছে তার নিজের পরিবার ও দলের ভেতর থেকেই। তিনি দাবি করেন, ইমরানের বোন আলীমা খান নিজ দলের মুখ্যমন্ত্রী গান্দাপুরের বিরুদ্ধে কাজ করছেন। তার মতে, পিটিআই এখন অন্তঃকলহে জর্জরিত, বিভক্ত কয়েকটি গ্রুপে।
আজমা বুখারি আরও বলেন, খাইবার পাখতুনখোয়া দীর্ঘ ১২ বছর ধরে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে, যেখানে পাঞ্জাবে নাকি সুশাসনের ধারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পিটিআই মুখপাত্র শেখ ওয়াকাস আক্রম বলেন, "পুরো সরকার এখন একটাই এজেন্ডা নিয়ে ব্যস্ত— ইমরান খানকে সরাতে হবে। অথচ তারা বুঝছে না, ইমরান খানকে বাদ দেওয়ার অর্থই দেশের জনগণকে বাদ দেওয়া।"
ওয়াকাস আরও বলেন, গত তিন বছরে পিটিআইকে ভাঙার যত চেষ্টা হয়েছে, সবই ব্যর্থ। যারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, একদিন জনতার আদালতে তাদের জবাব দিতে হবে। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ইমরান খান শুধু পিটিআইয়ের নেতা নন, তিনিই পাকিস্তানের মানুষের শেষ আশার প্রদীপ।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী গান্দাপুরও বলেন, "ইমরান খান চাইলে এই অবৈধ সরকার এক মিনিটও টিকবে না। বাজেটে তার অনুমোদন না থাকলেও প্রয়োজন হলে তা সংশোধন করা হবে।"
পিটিআই অভিযোগ করেছে, খাইবার পাখতুনখোয়ার নিয়ন্ত্রণ নিতে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা ও গভর্নর শাসনের নামে চক্রান্ত চলছে, যার মূল লক্ষ্যই হলো ইমরানকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা।
শেষ দিকে ওয়াকাস আক্রম আরও বলেন, যারা ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, তাদের দুর্নীতির অঙ্ক এখন ১ ট্রিলিয়ন রুপির ঘরে পৌঁছেছে। জনগণ জানে, ইমরান খানই তাদের প্রকৃত নেতা ও শেষ ভরসা।
তথ্যসূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
এসএকে/