শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৬ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
জাকির নায়েক ইস্যুতে ভারত সরকারের মন্তব্যের জবাব দিল ঢাকা ৭২-এর সংবিধান বাতিল করতে হবে : ইবনে শায়খুল হাদিস রিটার্নিং কর্মকর্তারা ভোটগ্রহণ স্থগিত করতে পারবেন: ইসি আনোয়ারুল গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ভারতীয় জেলে আটক করেছে পাকিস্তান জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন মানবে না জনগণ : মামুনুল হক ইসলামিক দলগুলো ছাড়া অন্য দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় নেই : হাসনাত আবদুল্লাহ খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলন সফল করতে গোপালগঞ্জে ওলামা-মাশায়েখ  সম্মেলন অনুষ্ঠিত সৌদির শাসকদের নিয়ে যা বললেন গ্র্যান্ড মুফতি কওমি শিক্ষার্থীদের দেশ-জাতির সেবায় নিয়োজিত করার বিষয়টি কোথায় আটকে আছে? ৪ দিনের কর্মসূচির ঘোষণা প্রাথমিক শিক্ষকদের

ইসরায়েল কীভাবে সত্যকে আগুনে পুড়িয়ে মারে? 

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মাদ  শোয়াইব

গাজায় ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স এবং রেড ক্রিসেন্ট দলের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞের কয়েকদিন পার হতে না হতেই, সোমবার ভোরে খান ইউনুসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের পাশে সাংবাদিকদের একটি তাবু লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা থেকে পাওয়া সংবাদ সূত্রগুলো জানিয়েছে, এই হামলায় সাংবাদিক হেলমি আল-ফাকআউয়ি ও তরুণ ইউসুফ আল-খাজানদার আগুনে পুড়ে শহীদ হয়েছেন।

এছাড়াও একাধিক সাংবাদিক আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন: হাসান ইসলাইহ, আহমাদ আল-আঘা, মোহাম্মদ ফায়েক, আবদুল্লাহ আল-আত্তার, ইহাব আল-বারদিনি, মাহমুদ আওয়াদ, মাজেদ কাদীহ, আলী ইসলাইহ এবং আহমাদ মানসুর।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এক হৃদয়বিদারক ভিডিও—যেখানে দেখা যায়, সাংবাদিক আহমাদ মানসুরের শরীরে আগুন জ্বলছে, তম্বুর ওপর ইসরায়েলি হামলার পর। এই দৃশ্য নিয়ে সাংবাদিক আনাস আল-শরীফ লেখেন, “তাকে পুড়িয়ে দিল ইসরায়েল”, তার সহকর্মী মানসুরের কথা উল্লেখ করে, যিনি স্থানীয় সংবাদ সংস্থা “ফিলিস্তিন টুডে”-র প্রতিবেদক।

আনাস আরও বলেন, “আহমাদ একজন বাবা, যিনি একটি পরিবার চালান। তিনি এখন চরম গুরুতর আহত অবস্থায়, ডাক্তাররা তাঁর জীবন রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করছেন।”

এক হৃদয়বিদারক বর্ণনায় আনাস বলেন, “আমাদের সহকর্মী হেলমি আল-ফাকআউয়িকে আগুনে পুড়ে যাওয়ার সেই দৃশ্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এমন এক বিপর্যয়ে আমাদের শব্দরাও ব্যর্থ।”

অনেকে বর্ণনা করেছেন আরও গভীর যন্ত্রণায়: “সাংবাদিক হেলমি আল-ফাকআউয়ি আগুনে পুড়ে গেলেন জীবন্ত, সরাসরি সম্প্রচারে! তাঁর হাতে অস্ত্র ছিল না, ছিল কেবল ক্যামেরা… তিনি গুলি চালাননি, বরং সত্য তুলে ধরেছিলেন। যেন তারা সত্যকে হত্যা করতে চায়, এবং প্রতিটি গণহত্যার সাক্ষীকে চুপ করিয়ে দিতে চায়। কী ভাষায় তা বোঝানো যায়? আর কোন বিবেক এই দৃশ্য দেখে ভাঙে না?”

একজন লিখেছেন, “সাংবাদিক হেলমি আল-ফাকআউয়ি শহীদ হয়েছেন সাংবাদিকদের তাবুতে... নাসের হাসপাতালের সামনে। তাঁর হাতে অস্ত্র ছিল না, ছিল ক্যামেরা। তিনি গুলি ছোড়েননি, বরং সত্যকে তুলে ধরেছিলেন। ‘প্রেসের স্বাধীনতা’? এটি কেবল সম্মেলনের মঞ্চে উচ্চারিত এক মিথ্যা, বাস্তবে যাকে হত্যা করা হয় ময়দানে। হাসপাতালের পবিত্রতা? জাতিসংঘের এক জীর্ণ ব্যানারে লেখা স্লোগান মাত্র! আর এই বিশ্ব? এক মিথ্যাবাদী সাক্ষী— বধির, অন্ধ, গণহত্যার সহযাত্রী।”

গাজার সাংবাদিকেরা সামাজিক মাধ্যমে একটি ছবি শেয়ার করেছেন—সাংবাদিক আহমাদ মানসুরের হাসপাতালের বেডে শোয়ানো একটি দৃশ্য। তাঁর মুখ এবং আগুনে পোড়া দেহ সাদা ব্যান্ডেজে মোড়ানো, যেন আগুন নিজেই তাঁর শরীরে নিজের সাক্ষর রেখে গেছে—এক নীরব সাক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়ে আছে দখলদারদের নিষ্ঠুরতা এবং বিশ্ব বিবেকের নির্লজ্জ ব্যর্থতার বিরুদ্ধে।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ