শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৬ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
জাকির নায়েক ইস্যুতে ভারত সরকারের মন্তব্যের জবাব দিল ঢাকা ৭২-এর সংবিধান বাতিল করতে হবে : ইবনে শায়খুল হাদিস রিটার্নিং কর্মকর্তারা ভোটগ্রহণ স্থগিত করতে পারবেন: ইসি আনোয়ারুল গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ভারতীয় জেলে আটক করেছে পাকিস্তান জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন মানবে না জনগণ : মামুনুল হক ইসলামিক দলগুলো ছাড়া অন্য দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় নেই : হাসনাত আবদুল্লাহ খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলন সফল করতে গোপালগঞ্জে ওলামা-মাশায়েখ  সম্মেলন অনুষ্ঠিত সৌদির শাসকদের নিয়ে যা বললেন গ্র্যান্ড মুফতি কওমি শিক্ষার্থীদের দেশ-জাতির সেবায় নিয়োজিত করার বিষয়টি কোথায় আটকে আছে? ৪ দিনের কর্মসূচির ঘোষণা প্রাথমিক শিক্ষকদের

রাষ্ট্রপতির সম্মতি, ওয়াক্‌ফ বিল আইনে পরিণত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিক্ষোভ এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র আপত্তির মধ্যেই ওয়াক্‌ফ (সংশোধনী) বিলে সম্মতি দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এর মধ্য দিয়ে বিতর্কিত বিলটি আইনে পরিণত হলো।

গত শনিবার আইন মন্ত্রণালয়ের নোটিশে বলা হয়, ওয়াক্‌ফ (সংশোধনী) বিল ২০২৫ এবং মুসলমান ওয়াক্‌ফ (রহিতকরণ) বিল ২০২৫ দুটি বিলেই সম্মতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। পার্লামেন্টের বাজেট অধিবেশনে বিল দুটি পাস হয়।

গত বুধবার গভীর রাতে বিতর্কিত ওয়াক্‌ফ বিল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পাস হয়। বিলের পক্ষে ২৮৮ আর বিপক্ষে ২৩২টি ভোট পড়ে। পরদিন উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিলটি ১২৮–৯৫ ভোটে পাস হয়।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু ওয়াক্‌ফ (সংশোধনী) বিল উত্থাপনের পরপরই এ নিয়ে লোকসভা অধিবেশন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এনডিএর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন লোকসভায় কংগ্রেসের উপনেতা গৌরব গগৈ। তিনি বলেন, এই বিল সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর ওপরে আঘাত। এর মাধ্যমে সরকার সংবিধান দুর্বল, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মর্যাদাহানি, ভারতীয় সমাজকে বিভক্ত ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভোটাধিকারবঞ্চিত করতে চায়।

তবে ওয়াক্‌ফ বিল পাসের ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে মন্তব্য করেন বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, এটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপকারে আসবে, যারা নিজেদের চাওয়া ও সুবিধা উভয় থেকেই বঞ্চিত।

এই বিলের সমালোচনা করে গত বৃহস্পতিবার সকালে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী সংসদীয় দলের বৈঠকে বলেন, দেশকে বিজেপি ক্রমেই এক গভীর খাদের কিনারে দাঁড় করাচ্ছে। বারবার তারা সংবিধানের অমর্যাদা করছে।

এদিকে ওয়াক্‌ফ বিল পাস হতে না হতেই সুপ্রিম কোর্টে এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি মুসলিম সংগঠন থেকে মামলা করা হয়। সেই সঙ্গে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ড জানিয়েছে, এই আইনের বিরুদ্ধে তারা দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করবে। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ হয়েছে।

পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে বিলটি পাস হওয়ার পর গত শুক্রবার বিরোধী দল কংগ্রেস জানায়, তারা সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করবে। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই লোকসভার দলীয় নেতা মুহাম্মদ জাভেদ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। একই দিনে মামলা করেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) প্রধান ও লোকসভার সদস্য আসাউদ্দিন ওয়েইসি। তাঁরা দুজনেই ওয়াক্‌ফ বিল নিয়ে গঠিত সংসদের যৌথ কমিটির (জেডিসি) সদস্য ছিলেন।

জাভেদ তাঁর আবেদনে বলেন, হিন্দু ও শিখদের ধর্মীয় ট্রাস্ট স্বনিয়ন্ত্রিত, অথচ ওয়াক্‌ফে সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে। অমুসলিমদের সদস্য করা হচ্ছে। এই রীতি অন্য ধর্মের ক্ষেত্রে কিন্তু নেই।

ওয়াক্‌ফ বিল সমর্থন করায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জেডিইউতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। দুই দিনে পাঁচ নেতা তাঁর দল ত্যাগ করেছেন। ওই পাঁচ নেতার মধ্যে চারজন মুসলিম হলেও একজন হিন্দু। রাজু নায়ার নামে ওই হিন্দু নেতা তাঁর পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, ‘দলের ভূমিকায় আমি হতাশ। এটি আরেকটি কালা আইন। মুসলিমদের ওপর অত্যাচার ও অবিচার এতে আরও বাড়বে।’

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ