বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫ ।। ১৬ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ১০ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
ভারতে ড. ইউনূসকে অসুররূপে উপস্থাপন অশোভন: ধর্ম উপদেষ্টা . বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মিডিয়া সেলের বৈঠক  ড. ইউনুসের নেতৃত্বেই ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান  খুলনা-৩ আসনে হাতপাখার প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বৈঠক ইসলামি রাষ্ট্র দর্শনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী নেজামে ইসলাম পার্টির দাওয়াতি মাসের উদ্বোধন সিলেটে কওমি কনফারেন্স আগামীকাল আস-সুন্নাহর পুঁজিতে সেলুন ব্যবসায় সাবলম্বী হওয়া নওমুসলিম মুজাহিদের গল্প ইসলামী যুব আন্দোলনের দাওয়াতি মাস উদ্বোধন ফরিদাবাদ মাদরাসায় ২০১৯ ব্যাচের ছাত্রদের মিলনমেলা ৪ অক্টোবর

লেখকদের পৃষ্ঠপোষকতায় পদক পেলেন মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: রাকিবুল হাসান

বাংলাদেশ ইসলামি লেখক ফোরাম এবার তিনজন গুণী লেখককে পদকে ভূষিত করেছে। শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর সেগুনবাগিচার কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচা মিলনায়তনে ফোরামের যুগপূর্তি অনুষ্ঠানে এই পদক প্রদান করা হয়।

তিনজনের মধ্যে লেখকদের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য পদক পেয়েছেন মাদরাসা দারুর রাশাদের প্রিন্সিপাল, সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.-এর খলিফা এবং বিশিষ্ট লেখক মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান।

অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি উপস্থিত হতে না পারায় তাঁর পক্ষ থেকে মাদরাসা দারুর রাশাদের শিক্ষক মাওলানা কামাল উদ্দীন ফারুকী পদকটি গ্রহণ করেন।

নিচে তাঁর বিস্তারিত পরিচয় তুলে ধরা হলো-

দেশে ইসলামি শিক্ষাধারায় নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন, আকাবিরের জীবন ও কর্মের ওপর স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের ধারা চালু এবং লেখক-চিন্তক তৈরির প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের সূচনা করেন মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান। সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নলতা গ্রামে ১৯৫০ সালে জন্ম এই আলেমের। বাবার নাম বাহাদুর গাজী, মায়ের নাম ভাগ্য বিবি। ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত পড়াশোনা করার পর জেনারেল শিক্ষা ছেড়ে মাদরাসায় চলে আসেন। তাঁর স্বপ্নপুরুষ মুজাহিদে আজম মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী রহ.। সান্নিধ্য না পেলেও প্রচণ্ডভাবে তাঁর দ্বারা প্রভাবিত। এজন্য মাওলানা মুহাম্মাদ সালমানের মাদরাসাজীবনের সূচনা হয় গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গায়। সেখানে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে দারুল উলুম দেওবন্দে চলে যান। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সেখানেই হাসিল করেন। দেওবন্দে থাকাকালেই যাতায়াত শুরু হয় বিংশ শতাব্দীর মহান সংস্কারক সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.-এর সান্নিধ্যে। পরে তাঁর হাতে বায়াত হন এবং খেলাফত লাভ করেন। এভাবেই বিখ্যাত দুই মনীষীÑ মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী এবং সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রাহিমাহুমাল্লাহর চিন্তাধারা ও মিশনকে নিজের জীবনের মিশনে পরিণত করেন। দীনি দরদ ও যুগোপযোগী চিন্তাধারা লালনের ক্ষেত্রে তিনি উল্লিখিত দুই মনীষীর সুযোগ্য উত্তরসূরি।

মাওলানা সালমান কর্মজীবন শুরু করেন খুলনা খালিশপুর দারুল মোকাররম মাদরাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে। আশির দশকে ঢাকায় চলে আসেন এবং মিরপুর আরজাবাদ মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে তিনি নিজেই এক নতুন শিক্ষাধারার সূচনা করেন। যারা স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করে মাদরাসায় পড়তে চায় তাদের জন্য স্বতন্ত্র কোনো প্রতিষ্ঠান এর আগে ছিল না। তিনি নিজেও এর ভুক্তভোগী ছিলেন। এজন্য সূচনা করেন নতুন ধারার এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বরে প্রতিষ্ঠা করেন মাদরাসা দারুর রাশাদ। জেনারেল শিক্ষিতদের জন্য তাঁর প্রণীত সংক্ষিপ্ত কোর্স ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এছাড়াও তিনি সাধারণ ও দীনি শিক্ষার সমন্বিত প্রতিষ্ঠান জামেয়াতুর রাশাদ গড়ে তোলেন। সেখানকার শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে দীনি ও সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে এখন সমাজের নানা পর্যায়ে খেদমতে নিয়োজিত আছেন।

মাওলানা সালমান সময়োপযোগী চিন্তাচেতনার অধিকারী যুগসচেতন একজন আলেম। বিগত শতাব্দীর ষাটের দশকে একঝাঁক যুগসচেতন ও মেধাবী আলেমের হাতে সূচিত ‘ইদারাতুল মাআরিফ’ তিনি পুনরুজ্জীবিত করেন। মাদরাসা দারুর রাশাদে চালু করেন সাহিত্য-সাংবাদিকতা বিভাগ। পরবর্তী সময়ে যুগচাহিদা অনুযায়ী দাঈ গড়ে তুলতে প্রতিষ্ঠা করেন সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ. এডুকেশন সেন্টার। এই দুই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি একদল কলম সৈনিক গড়ে তোলেন, যারা আজ এই অঙ্গনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মূলত লেখালেখির একজন দরদি মালী এবং বলিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান। মাওলানা শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের মাধ্যমে তিনিই প্রথম আকাবিরের জীবন ও কর্মের ওপর স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের ধারা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মনীষীর জীবন ও কর্মের ওপর তিনি গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। নদওয়াতুল উলামাকেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক সংগঠন রাবেতা আদবে ইসলামীর তিনি ঢাকা ব্যুরোর প্রধান। পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি তিনি নিজেও একজন লেখক। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ত্রিশটির বেশি।

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ