বিশিষ্ট দাঈ শায়খ আহমাদুল্লাহ প্রতিষ্ঠিত আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অনেকেই উদ্যোক্তা হয়ে উঠছেন। বদলে যাচ্ছে তাদের জীবনের গল্প। এমনই একজন মুজাহিদ। তিনি নওমুসলিম। বিদেশফেরত এই যুবক কীভাবে আস-সুন্নাহর পুঁজি দিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন এবং এখন কীভাবে মাসে ৩৫-৪০ হাজার টাকা উপার্জন করছেন সেই গল্প তুলেছেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। ফেসবুকে দেওয়া শায়খ আহমাদুল্লাহর পোস্টটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো-
একটা সেলুন থেকে মাসে ৩৫-৪০ হাজার টাকা উপার্জন—বিস্ময়কর ব্যাপারই বটে।
সেলুনটির মালিক নওমুসলিম মোহাম্মদ মুজাহিদ। পূর্বনাম হিরনচন্দ্র শীল।
অমুসলিম অবস্থায় ইন্টারমিডিয়েট শেষ করে জীবিকার তাগিদে তিনি পাড়ি জমান মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে। সেখানেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
এর আগে থেকেই কুরআন, হাদিস ও সাহাবিদের জীবনী পড়ে তিনি নিজেকে ইসলামের জন্য প্রস্তুত করছিলেন।
ওমানে মুজাহিদের দিন ভালোই কাটছিল। আকস্মিক ভিসা জটিলতায় তাকে দেশে ফিরতে হয়। পড়েন আর্থিক সংকটে।
এদিকে ইসলাম গ্রহণের খবরে পরিবারও তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। বাধ্য হয়ে তিনি মাত্র আট হাজার টাকা বেতনে একটি কোম্পানিতে চুল কাটার কাজ নেন। এই সময়, ২০২১ সালে বিয়ে করেন এক হাফেজা নারীকে।
চাকরির মেয়াদ শেষ হলে ফিরতে হয় নিজ এলাকায়। সেখানে অন্য একটি সেলুনে কাজ নেন তিনি। মাসে উপার্জন করেন ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা।
এই সামান্য বেতনে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে টিকে থাকা ছিল অনেক কঠিন।
এ সময় দক্ষতাভিত্তিক উদ্যোক্তা তৈরি প্রকল্পের খোঁজ পান তিনি। আবেদন করেন একটি সেলুনের জন্য। যাচাই-বাছাইয়ের পর গৃহীত হয় তার আবেদন।
৬ ধাপে মোট ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা সহযোগিতা করা হয় তাকে। এই টাকায় লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের জনবহুল চর লরেন্স বাজারে গড়ে তোলেন একটি সেলুন দোকান। এই সেলুনের মাধ্যমে তিনি আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছেন।
বর্তমানে তিনি প্রতি মাসে আয় করছেন প্রায় ৩৫-৪০ হাজার টাকা। সেলুনে তার সহকারী হিসেবে কাজ করছেন আরো একজন।
মুজাহিদ তার সেলুনে দাড়ি কাটেন না, ক্লিন শেভ করেন না। তারপরও সেলুনের এই আকর্ষণীয় আয় প্রমাণ করে—কেউ গুনাহ থেকে বাঁচতে চাইলে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।
আরএইচ/