|| মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ||
ভোরে ক্লাস, বিকেলে আড্ডা, রাতে স্ক্রলিং—এই চক্রেই বন্দি আমাদের অনেকের জীবন। চোখের নিচে ক্লান্তির ছায়া, মাথায় ভার, মনোযোগ ছুটে যায় বারবার। অথচ আপনি কি জানেন, প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিট আগেই ঘুমিয়ে পড়া আপনার মস্তিষ্ককে করে তুলতে পারে আরও সক্রিয়, বিশ্রামপ্রাপ্ত ও কর্মক্ষম?
সম্প্রতি চীন ও যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৩,২২২ জন কিশোর-কিশোরীর উপর একটি গবেষণা চালিয়ে আশ্চর্যজনক ফলাফল পেয়েছেন। গবেষণায় দেখা যায়, যারা গড়ে ৭ ঘণ্টা ২৫ মিনিট ঘুমিয়েছে, তারা যারা ৭ ঘণ্টা ১০ মিনিট ঘুমিয়েছে তাদের তুলনায় অনেক উন্নত মস্তিষ্ক গঠন, মনোযোগ এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা দেখিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, বেশি ঘুমানো অংশগ্রহণকারীদের হৃদস্পন্দনও ছিল বেশি নিয়ন্ত্রিত ও শান্ত।
এই গবেষণা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়—ঘুম কোনো বিলাসিতা নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যতের ভিত গড়ে তোলার একটি মৌলিক হাতিয়ার।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর জীবনযাত্রা, পড়ালেখার চাপ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আসক্তি এই ঘুমে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভাবুন তো, যদি আপনি আজ রাতেই মাত্র ১৫ মিনিট আগে ঘুমিয়ে পড়েন—এ অভ্যাসটাই প্রতিদিন জমে জমে এক নতুন আপনাকে তৈরি করতে পারে। বেশি ঘুম মানে শুধু বিশ্রাম নয়, এটি নতুন শেখার শক্তি, আরও গভীর মনোযোগ, এবং মানসিক প্রশান্তির ভিত্তি।
স্মার্টফোনের স্ক্রল কখনোই শেষ হবে না, সিরিজও একদিন অপেক্ষা করতে পারে। কিন্তু মস্তিষ্ক যদি ঠিক না থাকে, আগামীকালটা আর গুছিয়ে উঠবে না। তাই আজ রাত থেকেই একটা ছোট পরিবর্তন আনুন—ঘুমের ঘাটতি নয়, ঘুমকে দিন অগ্রাধিকার। কারণ আপনার ভেতরের সুপার পাওয়ার—ঘুম—জেগে উঠলেই আপনি হতে পারবেন আগের চেয়ে আরও পরিপূর্ণ, দৃঢ় ও সফল।
এসএকে/