সকালের নাশতা বা ব্রেকফাস্ট দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কিন্তু কর্মব্যস্ততা বা অবহেলার কারণে অনেকেই দিনের শুরুতে নাশতা করা এড়িয়ে যান। এতে শরীর ও মনের ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত নাশতা না করলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, কর্মক্ষমতা কমে যায় এবং দীর্ঘমেয়াদে নানা রোগের ঝুঁকি তৈরি হয়।
ডায়েটিশিয়ান ও পুষ্টিবিদদের মতে, ঘুমের পর শরীর দীর্ঘসময় খাবার ছাড়া থাকে। সকালে পুষ্টিকর নাশতা শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে। এতে মস্তিষ্ক সচল থাকে, মনোযোগ বাড়ে এবং সারাদিন কাজের প্রতি আগ্রহও বৃদ্ধি পায়।
নাশতা বাদ দিলে কী হয়: বিশেষজ্ঞরা জানান, নাশতা না করলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে কমে যেতে পারে। এতে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, মনোযোগের ঘাটতি এবং মেজাজ খারাপের সমস্যা দেখা দেয়। পাশাপাশি দীর্ঘদিন নাশতা বাদ দিলে ওজন বেড়ে যাওয়া, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিদ ডা. রুমানা সুলতানা বলেন, ‘অনেকে মনে করেন নাশতা বাদ দিলে ওজন কমবে। এটি ভুল ধারণা। বরং এতে বিপাক ক্রিয়া (Metabolism) ধীর হয়ে যায় এবং পরে অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।’
সঠিক নাশতা কেমন হওয়া উচিত: বিশেষজ্ঞদের মতে, নাশতায় অবশ্যই প্রোটিন, শর্করা, আঁশ ও স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকা উচিত। এতে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে এবং দেহ প্রয়োজনীয় শক্তি পায়।
পুষ্টিকর নাশতার মধ্যে থাকতে পারে: ডিম, ওটস বা চিড়ার মতো স্বাস্থ্যকর শস্য, ফলমূল,বাদাম, টোস্ট বা রুটি, দুধ বা দই,
শিশু-কিশোরদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ: বিশেষ করে শিশু ও শিক্ষার্থীদের জন্য সকালের নাশতা অত্যন্ত জরুরি। কারণ সকালে না খেয়ে স্কুলে গেলে তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ নষ্ট হয়, স্মরণশক্তি দুর্বল হয় এবং শরীরও দুর্বল হয়ে পড়ে।
নিয়মিত নাশতার উপকারিতা: সারাদিন কাজের শক্তি বাড়ায়। মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখে। মনোযোগ ও স্মরণশক্তি বাড়ে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। অতিরিক্ত ক্ষুধা ও ওজন বৃদ্ধির প্রবণতা কমায়।
সকলের নাশতা কোনো বিলাসিতা নয়, এটি দৈনন্দিন স্বাস্থ্য রক্ষার অপরিহার্য অংশ। নিজের শরীর ও মনের সুস্থতার জন্য সবাইকে সময়মতো এবং সঠিক পদ্ধতিতে নাশতা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এনএইচ/