রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫ ।। ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ৪ মহর্‌রম ১৪৪৭

শিরোনাম :
সকাল-বিকেল যে দোয়া পাঠে জাহান্নাম থেকে মুক্তি মেলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি: জমিয়ত একদিনে আরও ৩৮৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ নিহত ১৪ জন খামেনি মানবতার মুক্তির প্রতীক হয়ে থাকবেন: ইহুদি বিশ্লেষক ঢাকায় চালু হচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় ‘আগামী প্রজন্মকে সুন্দর শিক্ষা দিতে হলে শিক্ষকদের আন্তরিক হতে হবে’ এনবিআর কর্মকর্তাদের কঠোর বার্তা দিল সরকার নির্বাচনে ইসলামি মূল্যবোধ ও জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দেব: ইবনে শাইখুল হাদিস ফিলিস্তিনি এক পিতার চোখে যুদ্ধ ও ক্ষুধার ভয়ংকর বাস্তবতা

জামায়াতকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিলো ইসলামী আন্দোলন!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।। বিশেষ প্রতিনিধি।।

গতকাল শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীতে মহাসমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ব্যাপক প্রস্তুতির পর দলটি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই মহাসমাবেশের আয়োজন করে। নির্বাচনি আবহের মধ্যে নিজেদের শক্তির জানান দিতে আয়োজিত এই মহাসমাবেশে ১০ লাখের বেশি লোকের উপস্থিতির টার্গেট নিয়েছিল ইসলামী আন্দোলন। গতকাল রাজধানীতে যেভাবে দলটির নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছিল এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যে জনসমাগম হয়েছিল তাতে অনেকের ধারণা টার্গেট পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে দলটি।

ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে তোলা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লাখ লাখ মানুষের ছবিগুলো গতকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর আগেও এই ময়দানে সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন, তবে গতকালের উপস্থিতি ছিল যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এজন্য ভিন্ন ঘরানা ও মতাদর্শের অনেকে পর্যন্ত ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশের জনসমাগমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ তিন দফা দাবিতে আয়োজিত এই মহাসমাবেশ সফল বলেই মনে করছেন ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

এদিকে ঠিক একই স্থানে তিন সপ্তাহ পরে মহাসমাবেশ ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটি প্রথমে ২১ জুন মহাসমাবেশ ডাকলেও পরবর্তী সময়ে তা প্রায় এক মাস পিছিয়ে দেয়। আগামী ১৯ জুলাই জামায়াতের মহাসমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে। দলটি অনেক বছর পর ঢাকায় বড় কোনো শোডাউনের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যেই ইসলামী আন্দোলন নিজেদের মহাসমাবেশে বিপুল জনসমাগম ঘটিয়ে মোটামুটি জামায়াতকে একটা চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। যেহেতু ইসলামী আন্দোলনের চেয়ে বড় দল জামায়াতে ইসলামী, এজন্য তাদের অবশ্যই এর চেয়ে বেশি জনসমাগম ঘটিয়ে তা প্রমাণ করতে হবে। অন্যথায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুই দলের মহাসমাবেশের ছবি নিয়ে অনেকে তুলনা করতে পারেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

ইসলামী আন্দোলন এর আগেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনেক বার সমাবেশ করেছে। এমনকি আওয়ামী লীগের শাসনামলে প্রতিকূল অবস্থায়ও দলটি ব্যাপক জনসমাগম ঘটিয়ে আলোচিত হয়েছে বিভিন্ন বার। তবে এবার নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের শক্তির জানান দিতে একটু বেশি লোকের টার্গেট নেওয়া হয়েছিল। টানা কয়েক সপ্তাহ দেশজুড়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের একটি বড় অংশকে সোহরাওয়ার্দীতে উপস্থিত করাতে সক্ষম হয়।

এদিকে আওয়ামী লীগের পুরো মেয়াদকালে বিপর্যস্ত ছিল জামায়াতে ইসলামী। দলটি ৫ আগস্টের পর অনেকটা নতুন জীবন পেয়েছে। এরপর থেকে বাধাহীনভাবে সারাদেশে সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গত ১০ মাসে রাজধানীতে একাধিক সমাবেশ করেছে জামায়াত। তবে সেটা ছিল সীমিত পরিসরে, পল্টন মোড় বা শাহবাগ মোড়ে। রাজধানীর নেতাকর্মীদের নিয়েই এই সমাবেশ করে দলটি। তবে এবার অনেক বছর পর রাজধানীতে বড় কোনো মহাসমাবেশের ঘোষণা দিলো জামায়াতে ইসলামী। এজন্য দলটির পক্ষে জনসমাগম ঘটানো এক চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

অনেকের মতে, সারাদেশে জামায়াতের শক্ত সাংগঠনিক ভিত থাকলেও রাজধানীতে অপেক্ষাকৃত দুর্বল। তাছাড়া দল দীর্ঘদিন বিপর্যস্ত অবস্থায় থাকার ফলে ঢাকায় সেভাবে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে পারেনি জামায়াত। এই অবস্থায় ঢাকার বাইরের নেতাকর্মীদের সোহরাওয়ার্দীতে আনতে হবে। যদিও জামায়াতের কর্মীরা নিয়মিত ইয়ানত দেন, সাংগঠনিক কাজে অংশ নিয়ে থাকেন, তবে দলবদ্ধভাবে রাজধানীতে জড়ো করার পেছনে বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। যেহেতু ইসলামী আন্দোলন বড় শোডাউন করেছে, সুতরাং জামায়াতও চাইবে কোনো মতেই যেন জনসমাগম ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশের চেয়ে কম না হয়।

আরেকটি কারণেও জামায়াতকে বেশি শক্তি প্রদর্শন করতে হবে। সেটা হলো, ইসলামী আন্দোলনসহ অন্যান্য ইসলামি দলের সঙ্গে জামায়াতের একটি নির্বাচনী সমঝোতার আলোচনা জোরেশোরে চলছে। সেখানে আসন ভাগাভাগির ব্যাপার রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এই জোটে অন্যান্য দলের চেয়ে জামায়াত সামর্থে্যর বিচারে এগিয়ে। সুতরাং জনসমাগমের ক্ষেত্রে তারা নিজেদের সক্ষমতা পুরোপুরি দেখাতে না পারলে আসনভিত্তিক দেনদরবারে পিছিয়ে পড়বে। এজন্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জামায়াত যেকোনো মূল্যে চাইবে ইসলামী আন্দোলনের চেয়ে বেশি লোক সমাগম দেখাতে। তবে দলটি তা করতে কতটা সক্ষম হবে তা দেখতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ১৯ জুলাই (শনিবার) পর্যন্ত।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ