মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৮ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনানী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ খুলনায় হাতপাখার সংসদ সদস্য প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির জরুরি বৈঠক সার্বিক উন্নয়ন ও ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চাই: হাফিজ ফখরুল ইসলাম ফরিদপুরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর প্রচারণার গেট ও ব্যানার ভাঙচুর  জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য নভেম্বরেই গণভোট দিতে হবে: এ টি এম মাছুম জামায়াত আমিরের আসনে বিএনপির প্রার্থী হলেন যিনি খালেদা জিয়াসহ ৯ নারী পেলেন বিএনপির মনোনয়ন ২৩৭ আসনে বিএনপির ধানের শীষ পেলেন যারা নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলায় মতিউর রহমান আকন্দ নিন্দা বস্ত্রহীন ঘুমানোর হুকুম কী ?

ভাইরাল বক্তা লাগবেই!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

||যুবায়ের আহমদ||

কিছুদিন আগে এক ভাই মাহফিলের একটি ডেটের জন্য ফোন দিলেন। ডায়েরি খুলে দেখি, সুযোগ নেই। বলল, আরেকজনকে দিন! আমি একজন আলোচককে রেফার করলাম, যিনি মুহাদ্দিস, বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় পারদর্শী, মাশাআল্লাহ, ভাষাও চমৎকার, কণ্ঠও ভালো, টাকা-পয়সা কখনো চেয়ে নেন না। নিয়মিত হাদিস পড়ান। কিন্তু দু-চারটি আলোচনার ভিডিও নেটে থাকলেও তিনি ভাইরাল নন।

কর্তৃপক্ষ তার আলোচনার ভিডিও দেখে জানাল, 'চলবে'। তারাই ফোন করে দাওয়াত কনফার্ম করল। কিন্তু দুদিন পরই আবার আমাকে ফোন করে জানাল, আপাতত মাহফিলটি হচ্ছে না। আমি যেন ওই হজরতকে 'না' করে দিই। আমি তা-ই করলাম।

কিন্তু মাহফিলের তারিখের আগের দিন আবার ওই লোকের ফোন। জোর রিকোয়েস্ট, যেন ওই মুহাদ্দিস সাহেবকে প্রোগ্রামটাতে যেতে বলি। আমি বললাম, আপনারা না বললেন প্রোগ্রাম হবে না! এখন আবার ওই তারিখেই তাকে চাচ্ছেন কেন?

ক্ষমা চেয়ে সে জানাল, আয়োজকদের একজন হঠাৎ এক ভাইরাল বক্তার ডেট পায়। নাম বলতেই চিনে ফেললাম। সে মূলত তার নিকটাত্মীয় বড় বক্তার স্টাইল নকল করে প্রচুর বুস্ট করে ভাইরাল। দুএকটা উর্দু ফার্সি কবিতার দুতিন মিনিটের ভিডিও শুধু বুস্ট করে। ভাইরাল দেখে অতিউৎসাহী পাবলিক দাওয়াত করলেও আলোচনার মান না থাকায় কয়েক মিনিটে মাঠ ফাঁকা হয়ে যায়।

যাক, ওই বক্তা নাকি গতকাল জানিয়েছে, আসতে পারবে না। তাকে কিছু টাকাও অগ্রিম দেওয়া হয়েছে। তারা নাকি জানতে পেরেছে অন্য অঞ্চলে আরেক বড় মাহফিলে সে যাবে। অভিযোগ অনেক! এজন্য এখন ওই হুজুরকে লাগবেই। যেকোনোভাবেই যেন তাকে ম্যানেজ করে দিই।

আমি শুধু একটি কথা জিজ্ঞেস করলাম, 'তোমাদের লজ্জা করে না, এতবড় একজন আলেমকে দাওয়াত করে 'না' করে দিয়ে এভাবে  আমাকে অপমান করে আবার কোন সাহসে তার জন্য ফোন দিলে?' ফোন কেটে দিলাম।

আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলি, একদম শীর্ষ সারির বক্তা না হলে দ্বিতীয় বা তৃতীয় সারির ভাইরাল বক্তা দিয়ে শ্রোতার সংখ্যা তেমন বেশি হয় না। এদের বেশিরভাগের আলোচনায়ই কোনো খোরাক থাকে না। শুধু শুধু অনেক টাকা গুনে আযোজকরা। এদের অনেকে প্রচুর মাহফিল মিস করে। বেশি টাকা পেয়ে অন্যত্র চলে যায়। তবুও একটা শ্রেণি ওদের পেছনেই ছুটে।

আলহামদুলিল্লাহ, অনেক বড় বড় ভাইরাল বক্তা ওয়াজ করে চলে যাওয়ার পর স্থানীয় মুহাদ্দিস শাইখুল হাদিস পর্যায়ের বড় আলেমদের শেষে বক্তব্য রাখতে দেখেছি, শ্রোতার সংখ্যায় তেমন কমবেশি হয় না। তাহলে ভাইরালের পেছনে কেন অহেতুক ঘুরবে? অনেক মাহফিলে তো দেখেছি আমি অধমকে প্ল্যান করে শেষে রাখতে। তাদের ধারণা, তাহলে শেষ পর্যন্ত লোক থাকবে। আলহামদুলিল্লাহ, এমন হয়ও।

এজন্য আয়োজকদের প্রতি পরামর্শ, ভাইরালের পেছনে অহেতুক না ছুটে স্থানীয় আলেমদের গুরুত্ব দিন! কিশোরগঞ্জে জামিয়া ইমদাদিয়ায় অনেক বড় বড় আলেম আছেন না? হয়বতনগর মাদরাসায় নেই? তাদের সুযোগ দিন, আস্তে আস্তে তারা অনেক ভালো বক্তা হয়ে ওঠবেন! সুখে-দুঃখে, ধর্মীয় বিভিন্ন সংকটে তাদেরই তো কাছে পাবেন!

লেখক: কলামিস্ট, খতিব, পাবলিক স্পিকার ও শিক্ষক

এলএইস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ