শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ ।। ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫


মুহাদ্দিস রফিকুল্লাহ আফসারীর ‘মাছের পোনা অবমুক্তকরণ’ উদ্যোগ প্রশংসা কুড়াচ্ছে সর্বমহলে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।কাউসার লাবীব।।

দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন জলাশয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত করছেন আলোচিত ইসলামি বক্তা মুহাদ্দিস রফিক উল্লাহ আফসারী। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় মাছের পোনা অবমুক্ত করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রখ্যাত সুরকার ও নাশিদ শিল্পী মশিউর রহমান। মাছের পোনা অবমুক্তকরণ শেষে মশিউর রহমান, মুহাদ্দিস রফিক উল্লাহ আফসারী এবং তাদের সঙ্গী-সাথীরা উপস্থিত মানুষদেরকে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ বিষয়ে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন গীতিকাব্য উপস্থাপন করেন।

মাওলানা রফিক উল্লাহ আফসারির এই কার্যক্রম ইতোমধ্যেই প্রশংসা কুড়িয়েছে দেশজুড়ে। তার এই উদ্যোগ দেশের খাল-বিল নদী-নালায় আবারো মাছের জোয়ার বয়ে আনবে বলে আশা করছেন অনেকে।

মাছের পোনা অবমুক্তকরণ কার্যক্রম ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা বিষয়ে জানতে মাওলানা রফিক উল্লাহ আফসারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এলাকার বিভিন্ন নদী, খাল-বিলে আগের মতো এখন আর দেশীয় মাছ পাওয়া যায় না। দাদা-নানাদের কাছ থেকে গল্প শুনতাম নদী ভরা মাছের। কিন্তু এগুলো এখন গালগল্প মনে হয়। এর অনেক বড় কারণ হল আমরা মাছ ধরে খাই, কিন্তু এই মাছ কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে দৃষ্টি দেই না। সরকারের বিভিন্ন প্রজেক্ট এর মাধ্যমে দেশব্যাপী পোনা অবমুক্ত করা হয়ে থাকে। কিন্তু সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয় দেশের প্রতিটি খাল-বিল নদী-নালায় পর্যাপ্তভাবে পোনা অবমুক্ত করা। আমরা যদি যার যার অবস্থান থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী অল্প কিছু পরিমান হলেও খাল-বিল-নদী-নালায় পোনা ছাড়ি তাহলে দেখা যাবে কয়েক মাসের ব্যবধানে এর সুফল আমরা নিজেরাই ভোগ করব।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমাদের জন্য তিনি ‘লাহমান তরিয়্যা’ অর্থাৎ তাজা গোশত তিনি রেখে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি নদীনালা খালবিলে থাকা মাছের প্রতিও ইঙ্গিত করেছেন। আল্লাহ তালায়া আমাদেরকে এত বড় জলাশয় দিয়েছেন। আমাদের একটু চেষ্টার মাধ্যমে যদি এই জলাশয়গুলোকে কাজে লাগাই তাহলে দেখা যাবে সময়ের ব্যবধানে এগুলো আগের মত মাছে ভরে গেছে। আমরা আবারও মাছে ভাতে বাঙালি হয়ে উঠব। এখন বর্ষার সিজন। আমরা যদি কয়েক শ' টাকায় এক হাজার পোনা কিনে নদীতে ছাড়ি তাহলে দেখা যাবে কার্তিক মাসের দিকে এগুলো কয়েক টন মাছে দাঁড়াবে। যার বাজার মূল্য ৩০ লাখ টাকারও বেশি। আমাদের অনেকের পক্ষেই সম্ভব না ৩০ লাখ টাকার মাছ গরিব দুঃখীদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার। কিন্তু যদি কয়েক শত টাকার পোনা আমরা খাল-বিল-নদী-নালার ছেড়ে দেই আমাদের কোনো তেমন যত্ন করতে হবে না। প্রতিটি মাছ এমনিতেই একসময় কয়েক কেজিতে রূপান্তরিত হবে। -বলেন  ‍মুহাদ্দিস রফিক উল্লাহ আফসারী।

তিনি বলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে এবং দেশের আমিষের ঘাটতি পূরণ করতে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ এর কোন তুলনা হয় না। তাছাড়া মাছ সব সময় আল্লাহর যিকির করে। আপনি যদি নদীতে পোনা ছাড়েন তাহলে তার জিকিরের সাওয়াব আপনি অবশ্যই পাবেন। আর এই মাছ যখন কোন দরিদ্র জেলে ধরে তার সংসার চালাবে তখন এর ছাওয়াব তো পাবেনই।

তিনি জেলেদের প্রতি অনুরোধ করে বলেন, আপনারা খাল-বিল নদী-নালা থেকে ওইসব মাছ আধা কেজির কম বড় হলে ধরবেন না যেগুলো কয়েক কেজি বড় হয়। তাহলে আপনাদের এই ধৈর্য আপনাদেরকে সুন্দর সুফল এনে দিবে।

তিনি মানুষের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আপনারা যারা শহরে থাকেন কিংবা যাদের বাড়ির উঠোন নেই তারা ইচ্ছে করলেই মনের মাধুরী মিশিয়ে ছাদের মধ্যে একটি বাগান করতে পারেন। বিভিন্ন সবজির চারা লাগাতে পারেন। এগুলো আপনার দৈনন্দিন বাজার খরচ কমাবে পাশাপাশি সবুজ শ্যামল বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। বারান্দায় অথবা ছাদে পালতে পারেন কবুতর। কবুতর দেখে দৃষ্টি জুড়াবে। পাবেন কবুতরের নির্ভেজাল গোশত যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর