কাউসার লাবীব: সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গণশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি, দেওবন্দের সন্তান মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা করানোর জন্যে বাড়ি যাওয়ার পথেই সোমবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
সোমবার বিকালে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি-সাতগেছিয়া রোডে কামালপুর ব্রিজের কাছে মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তার গাড়ির সামনের ডান দিকের চাকা পাংচার হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারান চালক। তখনই উল্টোদিক থেকে আসা একটি বোলেরো পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে তার গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। গাড়ির গতি কম থাকায় মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। এই ঘটনায় তার গাড়ির চালক এবং পিকআপ ভ্যানের চালক আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই মেমারি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীকে উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করানো হয়। তারপর তাকে পৌঁছে দেওয়া হয় কাটোয়ার করজগ্রামের বাড়িতে।
মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মায়ের শরীর খারাপ। মায়ের চিকিৎসা করানোর জন্যে কারজগ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলাম। তখন চলন্ত অবস্থায় গাড়ির সামনের চাকা ফেটে দুর্ঘটনা ঘটে। বড়সড় কোনও আঘাত লাগেনি। হাতে চোট লেগেছে।’
মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একজন রাজনীতিবিদ। মুসলিমদের জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের (এআইটিসি) সদস্য। ভারতে জমিয়ত সরাসরি রাজনীতি ও নির্বাচন করে না। তবে জমিয়ত নেতারা নিজ সংগঠনের অনুমোদন সাপেক্ষে বিভিন্ন দলে যোগ দিয়ে সক্রিয় রাজনীতি করেন। এরই ধারাবাহিকতায় মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহর তৃণমুলে যোগদান।
সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময় ও ইন্ডিয়া রেগ এর সূত্রে জানা গেছে, বিধানসভা ভোটে নজরকাড়া সাফল্যের পর তৃতীয়বার মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রেও বড়সড় চমক দিতে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রের খবর, এ বারের মন্ত্রিসভায় অনেক নতুন মুখ পাওয়া যাবে। তবে অর্থমন্ত্রী কে হবেন, এই নিয়ে চলছে জল্পনা। গতবার অর্থমন্ত্রী ছিলেন অমিত মিত্র। এবছর তিনি অসুস্থতাজনিত কারণে নির্বাচণে অংশ নেননি।
এদিকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলানো নিয়ে বেশ ধন্দে রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। নতুন অর্থমন্ত্রীর ব্যাপারে কয়েকটি সম্ভাবনার কথা জানাচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তন্মধ্যে সাবেক গণশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরীর আলেঅচনা রয়েছে তুঙ্গে। তাকে বানানো হতে পারে অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রীর আলোচনায় এগিয়ে আছেন তিনি। কারণ টানা তিনবারের বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত মমতার খুব কাছের পরীক্ষিত নেতা মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। ধারণা করা হচ্ছে এবার অর্থমন্ত্রী করা হতে পারে তাকেই। এর আগে তিনি গণশিক্ষা মন্ত্রী ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী ছিলেন। তিনি ভারতের মঙ্গলকোট বিধানসভা আসন থেকে টানা তৃতীয়বারের মতো জয়লাভ করলেন। ভারতে দেওবন্দী আলেমদের সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ এর পশ্চিমবঙ্গের সভাপতিও তিনি।
২০১৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ জমিয়ত নির্বাচনী জোট গড়ে। তৃণমূলের টিকিটে পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট বিধানসভা আসনে নির্বাচনে জয়ী হন মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ। পরে তাকে রাজ্যের জনশিক্ষা প্রসার এবং গ্রন্থাগারবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এই মুসলিম নেতার উত্থান কংগ্রেসি রাজনীতির মাধ্যমে। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় যখন পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, তখন তিনি ছিলেন রাজ্য কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক। সোমেন মিত্র ও প্রণববাবুর বিশেষ পছন্দের মানুষ তিনি। মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি ১৯৮৪ ও ১৯৮৯ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে কাটোয়া আসন থেকে লোকসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। দলীয় স্তরে নানা মতবিরোধের জেরে কংগ্রেস ছেড়ে ২০০৬ সালে নিজেই পিপলস ডেমোক্র্যাটিক কনফারেন্স অফ ইন্ডিয়া (পিডিসিআই) নামে নতুন দল গড়েন। পরে নিজের দলকে মাওলানা বদরুদ্দিন আজমলের অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ)-এ যুক্ত করে রাজ্য সভাপতি হন এবং ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নিখিল ভারতীয় সংযুক্ত গণতান্ত্রিক মোর্চার প্রার্থী হিসাবে বসিরহাট আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
বহুল আলোচিত নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে। নন্দীগ্রামের বেশিরভাগ জমির মালিক মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। ২০০৭ সালে সিদ্দিকুল্লাহই প্রথম মুসলিমদের নিয়ে গড়েন নন্দীগ্রাম ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি। নিজে হন সভাপতি। পরবর্তীকালে সেই কমিটির রাশ চলে যায় তৃণমূলের হাতে। এমনকি মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহও যোগ দেন তৃণমুলে।
মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরির জন্ম ১৯৪৯ সালের ১০ জানুয়ারি। পিতা মো. আবু তালেব চৌধুরি। ভারতে বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে দাওরায়ে হাদিস পাস করেছেন। স্ত্রীর নাম রাজিয়া চৌধুরি। ২০১৬ সালের প্রথমবারের মতো বিধায়ক নির্বাচিত হন এবং মন্ত্রীত্ব লাভ করেন।
৭২ বছর বয়সী এই নেতা পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের মাঝে তুমুল জনপ্রিয়। তাকে ‘নন্দীগ্ৰাম আন্দোলনের মহানায়ক’ বলা হয়। নিজ রাজ্যের পাশাপাশি জাতীয় ইস্যুতেও তিনি বেশ সরব। তাকে দেখা যায়, দিল্লির গাজীপুর সীমান্তে আন্দোলনরত কৃষকদের জন্য খোলা লঙ্গরখানার স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে খাবার বিতরণ করছেন। আবার মেদিনীপুরে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বেলুড় মঠ মন্দিরের প্রমানন্দ মহারাজকে পাশে বসিয়ে বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করছেন। রামমন্দির নির্মাণ কাজ শুরুর দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করে দরাজ গলায় ঘোষণা দেন, ‘অযোধ্যায় মন্দির না, কিয়ামত পর্যন্ত মসজিদই থাকবে।’
২০১৬ সালের আগস্ট মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাক নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর তীব্র বিরোধীতা করে মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ বলেন, ‘এটি ইসলামের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।’ তিনি সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘অসংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ইসলামি আইনে হস্তক্ষেপের জন্য সমালোচনা করে বলেন, ‘মুসলমানরা শরিয়া অনুসরণ করবে (ইসলামিক আইন)।’
মোদি সরকারের কঠোর সমালোচক মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত জনসভায় ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও এনআরসি জোর করে চাপিয়ে দিলে বাংলায় এমন বিপ্লব হবে যা পৃথিবী কোনোদিন দেখেনি।’
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে মুসলিম ভোট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোট আছে রাজ্যে। ২৯৪ আসনের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় প্রায় ১০০টি আসনের ভবিষ্যৎ ঠিক করে মুসলিম ভোট। ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ২৯৪ সদস্য আসনবিশিষ্ট বিধানসভার নির্বাচনে শাসক-বিরোধী মিলিয়ে ৫৬ জন মুসলিম প্রার্থী জয়ী হয়। তন্মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকেটে জয় পেয়েছেন মোট ২৯ জন, জাতীয় কংগ্রেসের ১৮ জন, সিপিআইএমের আটজন এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের একজন মুসলিম প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। এর আগে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে জয়ী মুসলিম বিধায়কের সংখ্যা ছিল ৫৯ জন।
তৃণমূলের জয়ী বিধায়কদের মধ্যে ৭ জন মন্ত্রীত্ব পান। তারা হলেন- জাভেদ খান, ফিরহাদ হাকিম, আবদুর রাজ্জাক মোল্লা, মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি, গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, গোলাম রব্বানি ও জাকির হোসেন।
মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি মন্ত্রী ও বিধায়ক হিসেবে যতটা পরিচিত, তার চেয়ে বেশি পরিচিত জনদরদি সমাজসেবক হিসেবে। করোনা পরিস্থিতি এবং আমপান পরবর্তী পরিস্থিতিতে মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহর নেতৃত্বে রাজ্য জমিয়ত নানা জায়গায় প্রায় তিন কোটি টাকার ত্রাণসামগ্রী বিলি করেছে। এ ছাড়া প্রচুর মসজিদ-মাদরাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালন করে রাজ্য জমিয়ত।
সামাজিক নানাবিধ কর্মকাণ্ড পরিচালনাসহ হিন্দু-মুসলিমদের সম্প্রীতি রক্ষায় জমিয়তের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এই সংগঠনটি সারা বছর নানা ধরনের ইতিবাচক কাজ করে থাকে। আর এসবের নেতৃত্ব দেন মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ। ফলে তার জনসভাগুলো ব্যাপক পরিমাণে লোক সমাগম ঘটে। নিজ রাজ্য ছাড়িয়ে আসাম, ত্রিপুরা ও বিহারের মুসলমানদের মাঝেও তার ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে দেওবন্দি ধারার আলেমদের কাছে তিনি বেশ সম্মানের পাত্র।
মন্ত্রী হিসেবেও তিনি সফল। যেখানে পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার মাত্র দেড় শতাংশ নাগরিক সরকারী গ্রন্থাগার ব্যবহার করত। তার নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগে এ সংখ্যা প্রায় ১০ শতাংশে পৌঁছেছে। সাধারণ মানুষকে বই এবং গ্রন্থাগারের দিকে ফিরিয়ে আনতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ। যেগুলো প্রশংসা পেয়েছে বোদ্ধামহলে।
২০১১ সালে বাংলার ক্ষমতায় আসার আগেই মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক নিজের পক্ষে টেনেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বামফ্রন্ট থেকে মুখ ঘুরিয়ে মুসলিমরা মমতাকে সমর্থন করে। এর পেছনে মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহর বিশাল ভূমিকা রয়েছে। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে নানা অঙ্ক কষা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরগুলোতে। এরমধ্যে মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরির ফের প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে শাসক শিবিরে। মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ আদৌ আবার ভোটে দাঁড়াবেন কি না বা দাঁড়ালেও তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি না, এ সব প্রশ্ন মাথাচাড়া দিচ্ছে। তৃণমূল এখনও এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না নিলেও সংশয় তৈরি করেছে মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহর মূল সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ।
সামাজিক সংগঠন জমিয়তে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে না। তাদের কোনো পদাধিকারী রাজনীতির ময়দানে নামলে বা সাংসদ-বিধায়ক হতে গেলে সংগঠনের ওয়ার্কিং কমিটির সম্মতি লাগে। তৃণমূলের বিধায়ক এবং রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ এখন জমিয়তের রাজ্য সভাপতি। সেই জমিয়তের রাজ্য ওয়ার্কিং কমিটি আলোচনা করে এ বার ৭ সদস্যের বিশেষ কমিটি গড়েছে মাওলানা সিদ্দিকুল্লারহ ‘ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথ’ নির্ধারণের জন্য। জমিয়তের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
জমিয়তের প্রভাব রাজ্যের নানা জায়গার মুসলমানদের মধ্যে ছড়িয়ে আছে, তাই বিজেপি বিরোধিতার ময়দানে মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহর উপস্থিতি তৃণমূলের পক্ষে লাভজনক। এমতাবস্থায় তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে সেই অঙ্কে তৃণমূলের অস্বস্তির কারণ হতে পারে। তবে এটা ঠিক যে, ক্ষমতায় এসে মমতা মুসলমানদের জন্য বেশ কিছু যুগান্তকারী ও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ কারণে মুসলিম ভোটের একাংশ তিনি এমনিতেই পাবেন। এটা অবশ্য ভিন্ন প্রসঙ্গ।
ব্যক্তিগত জীবনে সাদামাটা জীবনের অধিকারী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি। সত্য কথা বলতে দ্বিধা করেন না। রাজনীতিবিদ হলেও রাজনীতির মারপ্যাচে তিনি নেই। তার চিন্তায় শুধু মানুষের কল্যাণ। প্রায় পাঁচ বছর মন্ত্রী হিসেবে কাটিয়েছেন, কিন্তু তার আচার-আচরণে এর কোনো প্রভাব দেখা মেলে না। ফন্দি-ফিকির করে দলের ফান্ড বাড়ানোর চেষ্টা করেননি। নিজেও অনৈতিক কোনো সুবধিা নিয়ে সম্পদ গড়েননি।
এখনও তার দলের যাবতীয় কর্মসূচি পালন করা হয়, নেতা-কর্মীদের চাঁদার টাকায়। বিধায়ক ও মন্ত্রী হয়েও ব্লক পর্যায় থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত কমিটিতেও কোনো প্রভাব দেখাননি। এটাই মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহর ব্যক্তিত্ব। এটাই একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক নেতার পরিচয়। এর চেয়ে গর্বের বিষয় আর কি হতে পারে?
আমরা মনে করি, শুধু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ নয় বিশ্বের প্রতিটি জনপদে মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহদের মতো মানুষের আরও বেশি প্রয়োজন। যারা যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে মুসলমানদের সঠিক অবস্থান তুলে ধরবেন। জাতিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবেন। দমবন্ধ অসহনীয় এই দুঃসময় কাটিয়ে উঠার জন্য মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরির মতো নেতৃত্ব ভীষণ দরকার।
-কেএল
                              
                          
                              
                          
                        
                              
                          
                        
                                                 
                     
