মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ৮ পৌষ ১৪৩২ ।। ৩ রজব ১৪৪৭


কুরবানি উপলক্ষ্যে মরোক্কোয় প্রস্তুত সাত লক্ষ ভেড়া: বেচাকেনা হচ্ছে অনলাইনে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি মুহাম্মাদ শোয়াইব

সারা বিশ্বের মুসলমানেরা কয়েকদিন পরই ঈদুল আজহা উদযাপন করবে। যে দিনটিতে হজরত ইব্রাহীম আ. নিজ সন্তান হজরত ইসমাইল আ. কে কুরবানির জন্য গলায় ছুরি চালিয়েছিলেন, সেই দিনটিকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে প্রতি বছর স্মরণ করা হয় ইদুল আজহার মাধ্যমে। এই উৎসব হজের কার্যক্রমের শেষ অংশ। প্রতিবছর বছর হজে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ সমবেত হয় মক্কা-মদিনায়। আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিল করার জন্য তারা হজের অন্যান্য কার্যক্রমের সঙ্গে কোরবানিও আদায় করে থাকেন।

মরোক্কোতে আসন্ন কুরবানিকে কেন্দ্র করে প্রায় সাত লক্ষ ভেড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। গত বছরও এই পরিমাণ ভেড়া জবাই হয়েছে কোরবানির ঈদে। মরোক্বোবাসী সাধারণত ভেড়া দিয়ে কুরবানি করে থাকেন। গুরু-ছাগলের তুলনায় তারা ভেড়ার গোস্তই বেশি পছন্দ করে।

মরোক্কোর জাতীয় মেষ ও ছাগল রক্ষক অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান মোবারক ফিনিরি বলেন, ভেড়ার এই বিরাট সরবরাহের কারণে আশা করা যায় চাহিদা পূর্ণরূপেই পূরণ হবে। কুরবানির সময় ছাড়াও মরোক্কোতে ভেড়ার গোস্ত খুবই জনপ্রিয়। সাধারণ সময়ে প্রতি কেজি ভেড়ার গোস্ত চার থেকে পাঁচ ডলারে বিক্রি হয়।

কখনো কখনো কোরবানির চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম হওয়ায় বাজারে ভেড়া সংকট দেখা দেয়।। তবে এ বছর সরবরাহ গত বছরের তুলনায় পর্যাপ্ত পরিমাণ রয়েছে। তাই এ বছর কোরবানির পশুর দাম গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন মোবারক ফিনিরি।

মরোক্কোতে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে পশুর হাটগুলো। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। সাধারণত শহরের উপকুলে সাপ্তাহিক হাট বসে কোরবানির পশু বিক্রির জন্য। তবে অধিকাংশ ক্রেতা হাটে না গিয়ে খামার থেকেই কোরবানির পশু খরিদ করতে পছন্দ করেন। কেননা খামারে বিশেষ পদ্ধতিতে মেডিসিন কিংবা ইনজেকশন ছাড়াই মোটাতাজা করা হয় কোরবানির পশুকে। খৈল, চাল, ডাল, খড়, ছুলা, চাষকৃত ঘাস, ভুষি খাইয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করেন তারা।

তাছাড়া খামার থেকে কুরবানির পশু কেনাতে রয়েছে ওজন মেপে কেনার সুবিধা। কেনার সময় খামারিরা নিজস্ব পশু চিকিৎসক দ্বারা পশু যাচাই বাছাই করতে সাহায্য করেন। বিক্রয়োত্তর চিকিৎসা সেবাও দিয়ে থাকেন কোনো কোনো খামার। তবে চিকিৎসককে পারিশ্রমিক দিতে হয়। আবার ক্রেতার বাড়িতে বা প্রত্যাশিত স্থানে বিনামূল্যে পশু পৌঁছে দেওয়ার সুবিধাও দিয়ে থাকেন তারা।

এ বছর কুরবানির পশুর দাম নিয়ে বেশ হতাশায় আছেন খামারিরা। কেননা খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় পশুর পেছনে খরচ হয়েছে অনেক। সেই তুলনায় বাজারের দাম এবার কম। সরবরাহ বেশি হওয়ার কারণে এ বছর পশুর দাম কমে গেছে। তারপরও আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে খামারিদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। মরোক্কোতে যারা খামার ব্যবসা করেন তারা সাধারণ পিতৃ সূত্রে পাওয়া পেশা হিসেবেই করেন। অনেকে আছেন এটিকে পেশা হিসেবে না দেখে নেশা হিসেবে দেখেন। অনেক সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও তারা খামারকে টিকিয়ে রাখেন। রাতদিন কঠোর পরিশ্রম করে আশার আলো দেখার আশায় স্বপ্ন বুনেন।

মরোক্কোতে বিভিন্ন হাট ঘুরে পছন্দসই পশু কেনার ঝামেলা এড়াতে আত্মপ্রকাশ করেছে বিভিন্ন ওয়েবসাইট। এসব সাইট থেকে কেনা যায় পছন্দের পশু। আগ্রহীগণ ঘরে বসে তার কোরবানির পশু খরিদ করতে পারেন এবং অনলাইনে মূল্য পরিশোদ করতে পারেন।

সূত্র: আল আইয়্যাম ২৪ ও আল আরাবি আল জাদিদ


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ