প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ভবনে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ইসলামপন্থী জনতা, আলেম সমাজ ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ওপর দোষ চাপানো এবং নির্বিচারে হয়রানি ও বেআইনি আটকের অভিযোগ তুলে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ আব্দুল আজিজ এবং সভাপতি পরিষদ সদস্য আশরাফুল ইসলাম সাদ ও মাহদী হাসান শিকদার বলেন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ভবনে হামলার মতো কোনো সহিংস বা আইনবিরোধী কর্মকাণ্ডকে আমরা কিংবা ইসলামপন্থী জনতা কখনোই সমর্থন করি না। এ ধরনের কর্মকাণ্ড আমাদের আদর্শ, নীতি ও রাজনৈতিক শালীনতার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।
তারা বলেন, বিগত সময়ে উক্ত দুই গণমাধ্যমের গণবিরোধী অবস্থান ও ফ্যাসিবাদী শাসনামলে জঙ্গি টার্ম উৎপাদনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাংবাদিকতার ভূমিকা আজ প্রমাণিত বাস্তবতা। তা সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে প্রেস কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। দীর্ঘদিন বিচারহীনতায় ভোগা ভুক্তভোগী জনতার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে উক্ত ঘটনার সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনকে অবশ্যই দায়িত্বশীল ও বিচক্ষণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
তারা আরও বলেন, তবে আমরা লক্ষ্য করছি—এই ঘটনাকে অজুহাত বানিয়ে নিরপরাধ আলেম, মাদরাসা শিক্ষার্থী ও ইসলামপ্রিয় জনতাকে টার্গেট করে সাদা পোশাকে তুলে নেওয়া, গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি ও অগ্রহণযোগ্য।
বিবৃতিতে বলা হয়, মুফতি আইনুল হক কাসেমীসহ একাধিক আলেম ও নিরপরাধ ব্যক্তিকে যে প্রক্রিয়ায় আটক করা হয়েছে, তা ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়কার গুম, নিপীড়ন ও ভয়ভিত্তিক শাসনব্যবস্থার দুঃসহ স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে। আমরা এই দমনমূলক ও বেআইনি কালচারের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি চাই।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কেউ অপরাধ করলে তাকে অবশ্যই যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তদন্ত ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। অনুমান, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কিংবা মতাদর্শিক বিদ্বেষের ভিত্তিতে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করা রাষ্ট্রের আইন, সংবিধান ও ন্যায়বিচারের মৌলিক চেতনার সরাসরি লঙ্ঘন।
বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিস আলেম সমাজ, মাদরাসা শিক্ষার্থী ও ইসলামপ্রিয় জনতার নিরাপত্তা, সম্মান ও নাগরিক অধিকার রক্ষায় আপসহীন থাকবে। অবিলম্বে বেআইনি আটক বন্ধ, আটককৃত নিরপরাধদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল তদন্ত নিশ্চিত করার জোর দাবি জানানো হচ্ছে।
ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ছাড়া কোনো রাষ্ট্রে স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়—এই বাস্তবতা সংশ্লিষ্ট সকলকে উপলব্ধি করতে হবে।
এনএইচ/