|| মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ||
‘ব্লাড মুন’—নামটা শুনলেই এক ধরনের গা ছমছমে ভাব তৈরি হয়, মনে হতে পারে চাঁদ বুঝি রক্তে রাঙা! বাস্তবে এটি একটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সময় দেখা দেওয়া একটি স্বাভাবিক জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা, যেখানে চাঁদের রং লালচে বা তামাটে আভা ধারণ করে।
ব্লাড মুন কী?
চাঁদের ওপর সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে বলে আমরা পূর্ণচন্দ্র দেখি। কিন্তু চন্দ্রগ্রহণের সময় পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে এসে পড়ে, ফলে সূর্যের আলো সরাসরি চাঁদের গায়ে পৌঁছাতে পারে না। তখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল দিয়ে প্রতিসরিত হওয়া সূর্যালোকের লাল তরঙ্গদৈর্ঘ্য চাঁদের পৃষ্ঠে পড়ে, যা চাঁদকে লালচে রঙে রাঙিয়ে তোলে। এই দৃশ্যটিই ‘ব্লাড মুন’ নামে পরিচিত।
বিজ্ঞান বনাম বিশ্বাস
বিজ্ঞানীরা একে ব্যাখ্যা করেন একটি সাধারণ আলোক প্রতিসরণ প্রক্রিয়া হিসেবে। তবে বহু সংস্কৃতিতে এই লালচে চাঁদকে নানা পৌরাণিক ও অলৌকিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। কোথাও একে অশুভ সংকেত মনে করা হয়, কোথাও যুদ্ধ বা দুর্যোগের পূর্বাভাস হিসেবে গণ্য করা হয়।
কখন দেখা যায়?
ব্লাড মুন কেবল তখনই দেখা যায়, যখন পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হয় এবং আকাশ পরিষ্কার থাকে। বছরে একবার বা দুইবার এই ধরনের ঘটনা দেখা যেতে পারে।
ব্লাড মুন একদিকে যেমন মহাকাশের রহস্যময় সৌন্দর্যের এক বিরল নিদর্শন, অন্যদিকে এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও সৌরজগতের পারস্পরিক সম্পর্কের এক চমৎকার নিদর্শন। আতঙ্কিত না হয়ে, এই অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যটি আমরা উপভোগ করতে পারি—একটু জ্যোতির্বিজ্ঞানের চোখ দিয়ে।
এসএকে/