আসক্তিতে পরিণত হয়েছে ‘স্ক্রলিং। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের অনেকেই বলতে পারবেন না যে আমরা দিনে কতটুকু, সপ্তাহে কতক্ষণ আর মাসে কত ঘণ্টা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ক্রল করি, অর্থাৎ কর্মঘণ্টা নষ্ট করি। এই বিষয়ে আমাদের অনেকেরই সচেতনতার অভাব রয়েছে।
স্ক্রল করতে করতে একসময় ক্ষণস্থায়ী ‘নেশায়’ পেয়ে বসে।
সম্প্রতি মার্কিন ওয়েবসাইট মিডিয়াম ডটকমে প্রকাশিত হয়েছে ‘দ্য এডিকশন নো ওয়ান টকস অ্যাবাউ’ শিরোনামের একটা লেখা। সেখানে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে লেখা হয়েছে, ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, স্নাপচ্যাটের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো কম-বেশি একই ধরনের নিউরাল সার্কিট তৈরি করে, যা জুয়া খেলা ও মাদক গ্রহণে তৈরি হয়। এই অনুভূতি আমাদের আরও বেশি করে স্ক্রল করতে বলে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ফলে এমন সব রাসায়নিকের বিক্রিয়া হয়, যা কোকেনের মতো মাদক আমাদের নিউরন সেলে উৎপন্ন করে। এমনকি নিউরোসায়েন্টিস্টরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে শরীরে সিরিঞ্জের মাধ্যমে ডোপামিন ইনজেক্ট করার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
আপনি এক হাতে স্ক্রলিং করেন, আরেক হাতে খান, নেটফ্লিক্স দেখেন, টেলিভিশন দেখেন, আরও স্ক্রল করেন, চ্যাট করেন, গ্রুপ কলে কথা বলেন, ভিডিও কল করেন, পোস্ট করেন, নোটিফিকেশন চেক করেন, মন্তব্য করেন, যা দেখে ভালো লাগল বন্ধুদের শেয়ার করেন, সেটা নিয়েই চলতে থাকে আলাপ, আবারও স্ক্রল করেন, এভাবেই আপনি একসময় ক্ষণস্থায়ী ডোপামিনের ‘নেশায়’ ঘুম, খাওয়া, কাজ, পড়াশোনা, পরিবারকে সময় দেওয়া—এসবের ভারসাম্য হারাতে থাকেন। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন থেকে দূরে সরে যান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নেশায় বাস্তবের সম্পর্কগুলোও হয়ে পড়ে ভঙ্গুর
এভাবে আপনার ‘অ্যাটেনশন স্প্যান’ (একটানা কোনো কিছুতে মনোযোগ ধরে রাখার সময়) কমতে থাকে। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। আপনি জীবনে কিছু করার উদ্দীপনা হারাতে থাকেন। আপনার নিউরনে ডোপামিন রিসেপটরের ধরন বদলাতে থাকে। অন্যান্য মাদকের মতোই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও এভাবে আপনার জীবন ধ্বংস করে ফেলে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে আপনার নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে
আউটলুকে প্রকাশিত ‘হাউ মাচ টাইম ইজ টু মাচ টাইম অন সোশ্যাল মিডিয়া’ শিরোনামে প্রকাশিত লেখায় বলা হয়েছে, প্রতিদিন আধা ঘণ্টা আপনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাটাতেই পারেন। আপনি কেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছেন, সেই বিষয়ে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে। কতটুকু সময় কাটাবেন, সেখানে আপনার নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। হয়তো ভাবছেন, আপনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করছেন। অথচ বাস্তবতা হলো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই আপনাকে আপনারই অজান্তে ব্যবহার করছে!
আরএম/
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                          
_original_1695093828.jpg) 
                        
                                                  
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                         
                               
                               
                              _medium_1759904896.jpg)