অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে ১৯ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে খেলাফত মজলিস।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সাথে সংলাপের মধ্য দিয়ে প্রস্তাবনাগুলো পেশ করা হয়।
নির্বাচন কমিশনের অডিটরিয়ামে এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিস সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলী ও অধ্যাপক আবদুল জলিল এবং নির্বাচন কমিশনারবৃন্দ।
খেলাফত মজলিসের প্রস্তাবসমূহ
১. নির্বাচনে পেশীশক্তি, কালো টাকার ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে। এ জন্যে অবিলম্বে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রদত্ত লাইসেন্সকৃত অস্ত্র জমা নিতে হবে। কালো টাকার ব্যবহার রোধে নির্বাচন কমিশনের স্বতন্ত্র গোয়েন্দা নজরদারী ইউনিট গঠন করতে হবে।
২. নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দিন থেকে মাঠে সেনাবাহিনীকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রতিটি ইউনিয়ন ও মহানগরভুক্ত ওয়ার্ডে সেনাক্যাম্প স্থাপন করতে হবে। নির্বাচনের কমপক্ষে ৩ দিন পূর্বে প্রত্যেকটি ভোট কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে গঠিত যৌথবাহিনীর কঠোর নিরপেক্ষ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
৩. নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব জনবল থেকে নির্বাচনী কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে। এ জন্য নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব জনবল বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া।
৪. নির্বাচনী কাজে নিযুক্ত মাঠ প্রশাসন সহ সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিরপেক্ষতা সুনিশ্চিত করতে হবে।
৫. একজন সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর জামানত ২০ হাজার টাকা পুন:নির্ধারণ করা।
৬. নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণকারী ও অন্যের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৭. অনলাইনে অপপ্রচার রোধে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ সেল সক্রিয় থাকতে হবে।
৮. রেডিও, টেলিভিশন সহ সকল রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে সকল দল ও প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
৯. প্রবাসী বাংলাদেশীদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দানে উদ্বুদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও হাইকমিশনের মাধ্যমে ভোট দানে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি চালু করা।
১০. দেশের ভিতরে চাকুরিজীবিদের (যেমন আর্মি, পুলিশ, বিডিআর- যারা ছুটি পান না) এবং নির্বাচনী কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করা। এদের মধ্যে কারো ব্যাপারে ইসি ইতোমধ্যেই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অতিবয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের মধ্যে যিনি ইচ্ছে করবেন তিনিও পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন- এ ব্যবস্থা করা।
১১. ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকরা যাতে অবাধে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন- তা নিশ্চিত করতে হবে।
১২. নির্বাচন কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
১৩. সকল ভোট কেন্দ্রের প্রতিটি বুথে (সিল মারার স্থান ব্যতীত) ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
১৪. সকল প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ ও নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে।
১৫. সুস্পষ্ট ছবি সহ ভোটার তালিকা পোলিং এজেন্টদেরকে যথাসময়ে সরবরাহ করতে হবে।
১৬. আগামী নির্বাচনে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী ও অনুসারীদের অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
১৭. দুর্নীতিবাজদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
১৮. মহিলা ভোটারদের জন্য সম্পূর্ণ আলাদা ভোট কেন্দ্র থাকবে। নারী ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা, কর্মচারী ও এজেন্টগণ হবেন নারী।
১৯. নির্বাচনের সময়ে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়সহ নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিশেষত: মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন যারা নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করবেন তাদেরকে নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকতে হবে।
এনএইচ/