মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫ ।। ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ৬ মহর্‌রম ১৪৪৭


মসজিদ হবে জ্ঞানের কেন্দ্র, ইমাম হবেন নেতৃত্বের দিশারি: ধর্ম উপদেষ্টা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইসলামের অপব্যাখ্যা রোধ, সঠিক ব্যাখ্যার প্রচার এবং সমাজে শান্তি-সম্প্রীতি ও সহনশীলতা প্রতিষ্ঠায় ইমামদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

তিনি বলেন, “আমরা চাই, একটি শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ—যেখানে মসজিদ হবে জ্ঞানের কেন্দ্র, আর ইমাম হবেন নেতৃত্বের দিশারি। ইমামগণ সমাজে অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। জনগণের সঙ্গে তাদের সরাসরি সংযোগ রয়েছে। নৈতিকতা ও আদর্শিক মূল্যবোধের বিকাশে তাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ইমামদের সংগঠিত ও প্রশিক্ষিত করা গেলে সমাজ পরিবর্তনের ধারা আরও বেগবান হবে।”

রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় হিফজুল কোরআন ও সিরাত প্রতিযোগিতা এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের জাতীয় সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, “প্রতি বছর আমাদের প্রতিযোগীরা আন্তর্জাতিক হিফজ ও ক্বিরাত প্রতিযোগিতায় যে সাফল্য অর্জন করছে, তা পুরো জাতির জন্য গর্বের বিষয়। এটি প্রমাণ করে, আমাদের সন্তানেরা কোরআনের আলো ধারণ করছে। এখন প্রয়োজন এই আলোর সঠিক ব্যবস্থাপনা, আর সেই জায়গাতেই ইমামদের প্রশিক্ষণ ও উৎসাহ অপরিহার্য।”

ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৬৩ হাজার ১৯৭ জন ইমাম ও মুয়াজ্জিনের মাঝে ৩৭ কোটি ৯২ লাখ ৭৩ হাজার টাকার সুদমুক্ত ঋণ ও অনুদান বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে উদ্যোক্তাদের ঋণ হিসেবে এবং ২০ কোটি ৯১ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে এককালীন অনুদান হিসেবে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরেও ৪ কোটি ১১ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক। সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খান।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক, ড. খলিলুর রহমান মাদানী, দেশের বিশিষ্ট ওলামায়ে কেরাম, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীরা।

অনুষ্ঠান শেষে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বাইতুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।

সম্মেলনে হিফজুল কোরআন ও সিরাত প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ী তিনটি গ্রুপের ৯ জন করে প্রতিযোগী এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে ৩ জন শ্রেষ্ঠ ইমাম, বিভাগীয় পর্যায়ে ২৪ জন, জেলা পর্যায়ে ১৯২ জন এবং ৬৪ জন শ্রেষ্ঠ খামারি ইমামকে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার ২ লাখ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার দেড় লাখ টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার ১ লাখ টাকা দেওয়া হয়। সিরাত প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার ৫০ হাজার, দ্বিতীয় ৪৫ হাজার এবং তৃতীয় পুরস্কার ৪০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়। একইভাবে শ্রেষ্ঠ ইমাম ও শ্রেষ্ঠ খামারি ইমামদেরও নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ