রবিবার, ১৮ মে ২০২৫ ।। ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ২০ জিলকদ ১৪৪৬


আসছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট কমছে  ব্যাংকঋণ নির্ভরতা 

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

আগামী অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে যাচ্ছে সরকার। বাজেট-ঘাটতি কমাতে এবং বাজেটের আকার কিছুটা ছোট করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ব্যাংকঋণের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২৫ শতাংশ কমিয়ে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণের পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি অর্থবছরের বাজেট-ঘাটতিও কমে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকায় নেমে আসতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
 
অর্থমন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, আগামী বাজেটের ঘাটতি মোকাবিলায় সরকার দেশীয় উৎসের পরিবর্তে বিদেশি ঋণের ওপর বেশি নির্ভর করবে। কারণ বিদেশি ঋণের সুদের হার তুলনামূলকভাবে কম। আগামী বাজেটের আকার দাঁড়াতে পারে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রথম বাজেটের আকার সংকুচিত হতে যাচ্ছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাজেট-ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা কমানোর সঙ্গে ব্যাংকঋণ কমানো যুক্তিযুক্ত। সরকার যদি প্রচুর পরিমাণে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়, তাহলে বেসরকারি খাতের জন্য ঋণপ্রাপ্তি কঠিন হয়ে পড়ে। বর্তমানে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদের হার অনেক বেশি। ফলে ব্যাংকগুলো সরকারের কাছে ঋণ দিতে অগ্রহী হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, 'আমরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বা টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করব না। এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য হবে।' তিনি আরো জানান, বাজেটে বড় ঘাটতি থাকবে না এবং মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে ঋণ গ্রহণ থেকেও বিরত থাকবে সরকার। গত কয়েক বছর ধরে ব্যাংকঋণের মাধ্যমে বাজেটের আকার বেড়েছে, যদিও রাজস্ব আয় খুব একটা বাড়েনি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৪২ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা, যা ২০২১ সালের জুনে ছিল ৭ লাখ ২২ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা।

 

২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে, যার মধ্যে ২১ হাজার কোটি টাকা আসবে ব্যাংকবহির্ভূত উৎস থেকে; যেমন-সঞ্চয়পত্র এবং ব্যক্তি ও করপোরেটদের কাছে ট্রেজারি বন্ড বিক্রির মাধ্যমে।

চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে অভ্যন্তরীণ ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, যা কমিয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে ঋণের পরিমাণ ছিল মূল বাজেটে ১ লাখ ৩৭হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা সংশোধিত বাজেটে কমে ৯৯ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা, যা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক কম। এর প্রধান কারণ এডিপি বাস্তবায়নের ধীরগতি। এই সময়ে সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো ঋণ নেয়নি; বরং ৫৯ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ