শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ।। ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬


যেসব অভ্যাস নীরবে মস্তিষ্কের ভয়াবহ ক্ষতি করে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক অভ্যাস থাকে, যেটা জীবনের অংশ হয়ে যায়। আর অনেক সময় অজান্তেই এই অভ্যাস আমাদের ক্ষতি করে। মূলত এসব অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্কের ওপর ধীরে ধীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। মস্তিষ্ক আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি। অথচ আমরা অনেক সময় বুঝতেই পারি না যে, আমাদের কিছু অভ্যাস নীরবে মস্তিষ্কের ক্ষতি করে। বিভিন্ন গবেষণার পর বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই বিষয়টা।    

অতিরিক্ত ফোনের ব্যবহার: বর্তমান সময়ে আমরা ফোনে অনেক বেশি সময় ব্যস্ত থাক। প্রতিনিয়ত দেখা যায় আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রোল করছি, মেসেজ চেক করছি কিংবা খবর পড়ছি। এই দীর্ঘ স্ক্রীন টাইম মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে।  ফ্রন্টিয়ার্স ইন সাইকোলজি জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত ফোন ব্যবহার মনোযোগের সমস্যা করে। এমনকি দীর্ঘ স্ক্রিন টাইম, বিশেষ করে ঘুমানোর আগে, ঘুমের গুণমানকেও প্রভাবিত করতে পারে। এটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং মানসিক স্বচ্ছতাকে প্রভাবিত করে। আপনার মনকে বিরতি দেওয়ার জন্য ঘন ঘন বিরতি নেয়ার চেষ্টা করুন, ফোন-মুক্ত সময় সেট করুন এবং স্ক্রিন ছাড়াই ঘুরে আসুন।

পুষ্টিকর নয় বরং অস্বাস্থ্যকর লোভনীয় খাবারের আসক্তি: লোভনীয় খাবার মজাদার তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেটা অস্বাস্থ্যকর। নিয়মিত এসব খাবার খেলে দীর্ঘমেয়াদে আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে। চিনিযুক্ত খাবার, ভাজা খাবার এবং প্রক্রিয়াজাত আইটেম রক্তে শর্করার বৃদ্ধি ঘটায়, যা নানান রোগের কারণ হতে পারে। আর এর প্রভাব পড়ে আমাদের মস্তিষ্কে। ২০১৫ সালে নিউট্রিয়েন্টস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় জানা যায় চিনি এবং ট্রান্স চর্বিযুক্ত খাবারের সঙ্গে নিম্নস্তরের স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগের সম্পর্ক আছে। তাই লোভনীয় খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণে রেখে আমাদের মস্তিষ্ককে পুষ্টি জোগাতে সবুজ শাক-সবজি, বাদাম এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ মাছের মতো উপকারী খাবার খেতে হবে।

নতুন কিছু না শেখা: আমাদের মস্তিষ্ক চ্যালেঞ্জ, কৌতূহল এবং নতুন তথ্যের মাধ্যমে নিজেকে আপডেট রাখে। আর যখন আমরা শেখা বন্ধ করি, তখন মস্তিষ্কের জানা এবং বিশ্লেষণের ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।  ক্রমাগত মানসিকভাবে উদ্দীপক ক্রিয়াকলাপ স্নায়বিক সংযোগকে শক্তিশালী করে। পড়া, নতুন ভাষা শেখা, এমনকি মস্তিষ্কের গেমগুলোও  আপনার ব্রেইনকে অ্যাক্টিভ রাখে।

দীর্ঘ সময় বসে থাকা: এটা শুনতে কিছুটা অবাক লাগলেও সত্যি এক দীর্ঘ সময় বসে থাকার অভ্যাস থাকলে সেটা মস্তিষ্কের ক্ষতি করে। অনেকেই দেখা যায় লম্বা সময় একইভাবে বসে থাকেন, এই অভ্যাসে বদল আনুন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত নড়াচড়া মস্তিষ্কে রক্ত ​​​​প্রবাহ বাড়ায়, স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ এবং মেজাজ ভালো রাখে।  দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার অভ্যাস বিশেষ করে বিরতি ছাড়া, ব্রেইনের স্বচ্ছতা হ্রাস করতে পারে।

প্রতিনিয়ত মাল্টিটাস্কিং: আমরা প্রায়ই মনে করি মাল্টিটাস্কিং আমাদের আরও দক্ষ করে তোলে। কিন্তু বাস্তবে এটি মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত চাপের। একসঙ্গে একাধিক কাজ করার চেষ্টা মনোযোগ বিভক্ত করে এবং তথ্য ধরে রাখার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে। ব্রাউন হেলথ ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, ক্রমাগত মাল্টিটাস্কিং দীর্ঘমেয়াদে উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয় এবং মানসিক কার্যক্ষমতার ক্ষতি করে। এর পরিবর্তে, একসঙ্গে একটি কাজে মনোনিবেশ করার চেষ্টা করুন। পুরোপুরি সেই কাজে ডুবে যান এবং আপনার মস্তিষ্ককে মানসিক স্বচ্ছতা দিন, যা তার সেরা কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ