স্বর্ণের বাজারে টানা তৃতীয় দিনের মতো পতন দেখা গেছে আজ সোমবারেও। ছয় মাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে ডলার শক্তিশালী হয়ে ওঠায় এ ধস আরও গভীর হয়েছে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সুদের হার কমানো নিয়ে অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে তুলেছে।
আজ সোমবার (বাংলাদেশ সময় সকাল) স্পট গোল্ডের দাম ০.৩ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ৪ হাজার ৫৫ দশমিক ৭৩ ডলারে নেমে আসে। খবর রয়টার্সের।
ডিসেম্বরে সরবরাহের জন্য নির্ধারিত মার্কিন স্বর্ণ ফিউচারও ০.৭ শতাংশ কমে দাঁড়ায় প্রতি আউন্স ৪ হাজার ৫২ দশমিক ৪০ ডলারে।
বাজার বিশ্লেষক জিগার ত্রিবেদি জানান, “ডলার ইনডেক্স ছয় মাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে। সূচকটি যদি ১০০-এর ওপরে স্থিত থাকে, তাহলে স্বর্ণের ওপর আরও চাপ তৈরি হবে।”
ডলার শক্তিশালী হওয়ায় অন্যান্য মুদ্রাধারীদের জন্য স্বর্ণের দাম তুলনামূলক বেশি পড়ে যাচ্ছে। ফলে বাজারে স্বর্ণের চাহিদা কিছুটা কমে এসেছে।
সোমবার ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) পরবর্তী বৈঠকে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা নেমে এসেছে ৬৯ শতাংশে, যা আগের সেশনে ছিল ৭৪ শতাংশ। নিউইয়র্ক ফেডের প্রেসিডেন্ট জন উইলিয়ামসের নরম মন্তব্যের পর শুক্রবার এই সম্ভাবনা দ্রুত বেড়েছিল। তবে অন্য কর্মকর্তারা সুদের হার কমানোর বিষয়ে সতর্ক অবস্থান বজায় রেখেছেন। ডালাস ফেডের প্রেসিডেন্ট লরি লোগান বলেছেন, “বর্তমান সুদের হার কিছুদিন স্থিত রাখাই যুক্তিযুক্ত।” শিকাগো ও ক্লিভল্যান্ড ফেড প্রধানরাও এখনই সুদ কমানোর ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেছেন।
সুদের হার কম থাকলে স্বর্ণের মতো ফলনহীন সম্পদের মূল্য সাধারণত বাড়ে। কিন্তু বর্তমানে তেমন কোনো শক্তিশালী প্রণোদনা নেই।
জিগার ত্রিবেদি আরও বলেন, “আগামী তিন থেকে পাঁচ সপ্তাহ স্বর্ণের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল বা নিম্নমুখী থাকতে পারে। কারণ ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা না থাকায় ক্রেতাদের জন্য বড় কোনো সহায়তা নেই।”
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন সোমবার রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে নতুন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বসছে। আগের প্রস্তাবটি মস্কোর পক্ষে বেশি সুবিধাজনক হওয়ায় তা সংশোধনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর বাজারেও মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। স্পট সিলভারের দাম অপরিবর্তিত থেকে প্রতি আউন্স ৪৯ দশমিক ৯৯ ডলার ছিল। প্লাটিনামের দাম ১.৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৩৫ দশমিক ৮৫ ডলারে। প্যালাডিয়ামের দামও ১.১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে হয় ১ হাজার ৩৯০ দশমিক ১৩ ডলার।
এলএইস/