নেপালে আবার নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। গত সেপ্টেম্বরে যে রক্তাক্ত জেন জি বিক্ষোভের জেরে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সরকার উত্খাত হয়েছিল। তার সমর্থকদের সঙ্গেই বুধবার সংঘর্ষে জড়ায় জেন জিরা।
এই সংঘর্ষের ফলে নেপালের বারা জেলার সিমরায় নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় বারা জেলায় কারফিউ জারি করতে বাধ্য হয়েছে সরকার। সভা-সমাবেশ এবং জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (গতকাল) স্থানীয় সময় রাত ৮টা পর্যন্ত এই কারফিউ বলবত্ থাকবে।
সিমারা বিমানবন্দরের কাছেও কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ‘জেন জি’দের। নেপথ্যে ওলির দলের দুই নেতার সিমারায় আগমন। দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে বিমানে কাঠমান্ডু থেকে সিমারা আসেন ওলির দলের দুই নেতা মহেশ বসনেট এবং শঙ্কর পোখারেল। মহেশ-শঙ্কর জুটির সিমারায় আগমনের বিষয়টি জানা মাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেন ‘জেন জি’ জেলা সমন্বয়ক সম্রাট উপাধ্যায়। বুধবার দুই ইউএমএল নেতা বিমানবন্দরে নামতেই খুনিদের সরকার বলে বিক্ষোভ শুরু করে ‘জেন জি’ প্রতিবাদীরা। এরপর ইউএমএল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা। সংঘর্ষে আহত হয় ছয় জন ‘জেন জি’ বিক্ষোভকারী।
বিক্ষোভকারীরা ছয় জন ইউএমএল কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করে। যদিও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি এই অভিযোগ ফের বিক্ষোভ আন্দোলনে নামেন ‘জেন জি’ বিপ্লবীরা। নতুন করে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এমনকি বিক্ষোভের জেরে সিমারা বিমানবন্দরে বেশ কিছুক্ষণ বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আপাতত সিমারা এবং সংলগ্ন এলাকায় কারফিউ জারি হয়। বার্তা সংস্থা এএফপিকে নেপাল পুলিশের মুখপাত্র আবি নারায়ণ কাফলে বলেন, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। কেউ গুরুতর আহত হয়নি।
এদিকে নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নেপালে নির্বাচন হওয়ার কথা। তার আগে সকল পক্ষকে অবাঞ্ছিত রাজনৈতিক উসকানি থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর আস্থা’ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরো জানিয়েছেন, সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা যাতে নিরাপদ চলাচল করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে এবং নির্বাচনের জন্য একটি সুষ্ঠু ও ভয়মুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে চান তিনি। তিনি বলেছেন, আমরা চাই, এই দেশটি একটি নতুন প্রজন্মের হাতে থাকুক এবং দূরদর্শী ব্যক্তিরা এই দেশ পরিচালনা করুক। —নেপাল টাইমস ও কাঠমান্ডু পোস্ট
এনএইচ/