আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহায়তায় লিবিয়ার বেনগাজীর গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১৭০ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন।মঙ্গলবার ( ১৮ নভেম্বর) সকালে তারা বুরাক এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ইউজেড২২২-এর মাধ্যমে দেশে ফিরেছেন।
বিমানবন্দরের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে এরইমধ্যে বিমানবন্দর ত্যাগ করেছেন প্রত্যাবাসিতরা।
আইওএম-এর সহায়তায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) বেনগাজীর গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১৭০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আইওএম-এর সহায়তায় দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়।
লিবিয়ায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার গানফুদা ডিটেনশন সেন্টারে উপস্থিত থেকে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম তদারকি করেন এবং প্রত্যাবাসিতদের বিদায় জানান। এ সময় লিবিয়ার অভিবাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ফরেন অফিসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এবং দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত প্রত্যাবাসন কার্যক্রমে সহযোগিতার জন্য লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইওএম-এর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান এবং ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
অভিবাসীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বৈধ ও নিরাপদ পথই একমাত্র সঠিক উপায়। তিনি প্রত্যেককে দেশে ফিরে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন, সরকারি প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং বৈধ প্রক্রিয়া বিদেশ গমনের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানান।
তিনি উল্লেখ করেন, অবৈধ অভিবাসন শুধু ঝুঁকিপূর্ণই নয়, বরং ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও জাতীয়ভাবে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, দেশে ফিরে শুধু চাকরির অপেক্ষায় না থেকে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সরকারের বিভিন্ন সুবিধা, ঋণ সহায়তা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশের অর্থনীতিতে সক্রিয় অবদান রাখার সুযোগ এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি। মান্যবর রাষ্ট্রদূত অভিবাসীদের আইনগত অধিকার সম্পর্কেও অবহিত করেন এবং মানবপাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে দেশে ফিরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন। এই প্রক্রিয়ায় তিনি দূতাবাসের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান।
উল্লেখ্য, পূর্ববর্তী সময়ে বাংলাদেশ দূতাবাস আটক অভিবাসীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ গ্রহণ ও পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের পর তাদের অনুকূলে ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও আইওএম-এর সার্বিক সহযোগিতায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়। এ ছাড়া আগামী ৩০ নভেম্বর ত্রিপলীর তাজুরা ডিটেনশন সেন্টার থেকে আরও ১৭৫ জন বাংলাদেশিকে প্রত্যাবাসনের জন্য দূতাবাসের প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে।
লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়া স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও আইওএম নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।