খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের মাসিক বৈঠকে নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানে পরাজিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির সুযোগে আবারো সংগঠিত হতে শুরু করেছে। গত বুধবার গোপালগঞ্জে তারা ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অপতৎপরতা চালায়, যা উদ্বেগের বিষয়। দলের নেতৃবৃন্দ জানান, এদেরকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যারা পদক্ষেপ নিতে ভয় পাচ্ছে কিংবা সমীহ করছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
গতকাল (১৬ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় নির্বাহী বৈঠকে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, ফ্যাসিবাদী অপশক্তি যাতে দেশের মানুষের জানমাল ও নিরাপত্তার ক্ষতি করতে না পারে, সরকারকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। পতিত ফ্যাসিস্ট-খুনীদের বিরুদ্ধে সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা আবারো রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে না পারে।
সংবাদ সম্মেলনে খেলাফত মজলিসের নেতারা সম্প্রতি ইসলামী রাজনীতির সাথে যুক্ত কয়েকজন ব্যাক্তিত্বকে জঙ্গিবাদের অভিযোগে হেয় করার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, উগ্র ও তাকফিরী গোষ্ঠীকে এদেশের আলেম সমাজ বরাবরই প্রত্যাখ্যান করেছে। ঢালাও অভিযোগের তদন্ত করার পূর্বেই কারো ব্যাপারে এমন গুরুতর অভিযোগ নতুন বাংলাদেশে তাওহীদি জনতা মেনে নেবে না।
দলটি জানায়, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের যে অনুমোদন সরকার দিয়েছে তা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। তারা আরও দাবি করে, বাংলাদেশের ধর্মীয় মূল্যবোধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করার কোনো অপচেষ্টা সফল হবে না। মার্কিন শুল্কারোপ হ্রাসে চলমান দরকষাকষিতে বাংলাদেশের সামরিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ লঙ্ঘিত হওয়ার মত প্রকাশ্য কিংবা গোপন কোনো চুক্তি বরদাশত করা হবে না।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়, সংবিধানে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আকাঙ্ক্ষা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতিফলন থাকতে হবে। মূলনীতিতে ‘মহান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন করতে হবে। নতুন কোনো কর্তৃত্ববাদী শাসন আসন গেড়ে বসতে না পারে, সে জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্বাচনী ব্যবস্থায় অর্থ ও পেশী শক্তির দাপট বন্ধ করতে হবে এবং স্থায়ী বন্দোবস্ত রাখতে হবে। এই মাসের মধ্যেই ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে হবে।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী। পরিচালনা করেন মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের।
কেন্দ্রীয় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর মাওলানা সাইয়্যেদ ফেরদাউস বিন ইসহাক, যুগ্ম-মহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো: জহিরুল ইসলাম, প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রিফাত হোসেন মালিক, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মাওলানা শায়খুল ইসলাম, খন্দকার শাহাবুদ্দিন আহমদ, মুফতি আবদুল হক আমিনী, জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হক, মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার, আলহাজ্ব নুর হোসেন, হাফেজ নুরুল হক, আবুল হোসেন, মাওলানা আজিজুল হক, আলহাজ্ব আমির আলী হাওলাদার, এডভোকেট মাওলানা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এমএইচ/