বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫ ।। ২১ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
জোটে ভোট কাটে রাজনীতির ঠোঁট ভারতের প্রেসক্রিপশনে আন্দোলন সফল হতে দেবে না জনগণ: মাওলানা ইউসুফী ‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রতিটি স্কুল-কলেজে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা করব’ বিএনপি-জামায়াতের বাইরে নতুন রাজনৈতিক জোটের উদ্যোগ এনসিপির  মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের কারণ পাইলটের উড্ডয়ন ত্রুটি পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র উদ্ধারে আবারও পুরস্কার ঘোষণা বিশাল স্বর্ণ ভান্ডার মিলল পাকিস্তানে একীভূত হওয়া ৫ ব্যাংকের অর্থ ও আমানত সুরক্ষিত থাকবে : গভর্নর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত শিক্ষার্থী ফোরামের মানববন্ধন বৈষ্যমের বিরুদ্ধে সিলেটবাসীকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করতে হবে

আধুনিক ইতিহাসে অন্যতম নিষ্ঠুর গণহত্যাকারী ইসরায়েল: জাতিসংঘের বিশেষ দূত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ বলেছেন, গাজায় ফিলিস্তিনিরা যে বিপদ ও কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছে তা কল্পনাতীত। আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম নিষ্ঠুর গণহত্যাকারী দেশ হিসেবে তিনি ইসরায়েলকে চিহ্নিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তার সর্বশেষ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আলবানিজ।

এ সময় তিনি বলেন, “অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অবস্থা আরও বিপদজনক এবং খারাপ, যা সহজে কল্পনা করা যায় না। সরকারি পরিসংখ্যানে ২ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত বা আহত হয়েছেন। তবে শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা আরও বেশি।”

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মার্কিন-ইসরায়েল পরিচালিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’-এর ব্যাপারে আলবানিজ মন্তব্য করেন, এটি ‘একটি মৃত্যুফাঁদ’, যেখানে ক্ষুধার্ত এবং দুর্বল জনগণকে হত্যা বা পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।

তিনি যুদ্ধকালীন সময়ে বিভিন্ন মহলের ‘অর্থনৈতিক লাভ’ প্রসঙ্গে বলেন, গত ২০ মাসে অস্ত্র প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো গাজায় বোমা হামলার জন্য ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহ করে ‘প্রায় রেকর্ড মুনাফা’ অর্জন করেছে। তিনি আরও বলেন, “গাজা ধ্বংস করতে ৮৫ হাজার টন বিস্ফোরক - যা হিরোশিমার ছয় গুণ শক্তিশালী - ব্যবহার করতে ইসরায়েলকে অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ করে অস্ত্র কোম্পানিগুলো বিশাল মুনাফা অর্জন করেছে।”

এছাড়া, আলবানিজ অভিযোগ করেন, ইসরায়েল যুদ্ধকে বিভিন্ন নতুন অস্ত্র, কাস্টমাইজড নজরদারি, ড্রোন এবং রাডার সিস্টেম পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, “ফিলিস্তিনের প্রতিরক্ষাহীনতা ইসরায়েলি সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্সের জন্য একটি আদর্শ পরীক্ষাগারে পরিণত হয়েছে।”

তিনি ৪৮টি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করেন, যারা ইসরায়েলি রাষ্ট্রের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি বৃহত্তর ‘দখলদারিত্বের অর্থনীতি’ গঠনে সহায়তা করছে। এর মধ্যে অস্ত্র প্রস্তুতকারক, ব্যাংক, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, জ্বালানি জায়ান্ট এবং একাডেমিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়েছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে এবং সমস্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং বিনিয়োগ সম্পর্ক স্থগিত করতে হবে। পাশাপাশি, তিনি জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করার জন্য কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনের আওতায় আনার জন্য পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।

আলবানিজ বলেন, “বিশ্বব্যাপী এত নিষ্ক্রিয়তার জন্য শুধু অজ্ঞতা বা আদর্শগত কারণে আমি আর বিশ্বাস করি না। গণহত্যা এখন এতই স্পষ্ট এবং সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে, যে এসব ব্যাখ্যা যুক্তিহীন হয়ে পড়েছে।”

শেষে, তিনি নাগরিক সমাজকে গণহত্যা বন্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ট্রেড ইউনিয়ন, আইনজীবী, নাগরিক সমাজের সংগঠন, সাধারণ মানুষ এবং সরকারগুলোকে বয়কট, নিষেধাজ্ঞা এবং জবাবদিহিতার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আচরণগত পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা উচিত। এরপর কী হবে, তা আমাদের সকলের উপর নির্ভর করে।”

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ