ইরানের কিশ দ্বীপে এক দৌড় প্রতিযোগিতায় হিজাব ছাড়া নারীদের অংশগ্রহণের ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর অনুষ্ঠানটির দুই আয়োজককে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির বিচার বিভাগ।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত ওই দৌড়ে অংশ নেওয়া বহু নারীর হিজাববিহীন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ১৯৮০-এর দশকের শুরুর দিকে ইরানে হিজাব বাধ্যতামূলক করা হয় এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ আইন মানতে নারীদের অনীহা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিচার বিভাগের ওয়েবসাইট মিজান জানিয়েছে, পরোয়ানার ভিত্তিতে গ্রেপ্তার দুজনের একজন কিশ মুক্তাঞ্চল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা এবং অন্যজন দৌড় প্রতিযোগিতা আয়োজনকারী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী।
স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, প্রতিযোগিতাটিতে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। এর আগে আয়োজকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়। অভিযোগ, বাধ্যতামূলক হিজাব আইন প্রয়োগে তারা ব্যর্থ হয়েছেন এবং সামাজিক শালীনতা লঙ্ঘন করেছেন। যদিও কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই আয়োজকদের আইন ও ধর্মীয় নীতিমালা মেনে চলার জন্য সতর্ক করেছিল।
রক্ষণশীল সংবাদমাধ্যম তাসনিম ও ফার্স দৌড় প্রতিযোগিতাটিকে আগেই “অশালীন” ও “ইসলামি মূল্যবোধবিরোধী” বলে সমালোচনা করেছিল।
ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর নারীদের পোশাকে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। জনপরিসরে নারীদের মাথার চুল ঢেকে রাখা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরা বাধ্যতামূলক।
২০২২ সালে হিজাব না পরার অভিযোগে তেহরানে গ্রেপ্তার হওয়া কুর্দি নারী মাশা আমিনির পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর পর দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এতে কয়েক শ বিক্ষোভকারী নিহত ও হাজারো মানুষ গ্রেপ্তার হন। এরপর থেকে হিজাব আইন অমান্যকারীদের সংখ্যা বেড়ে যায়।
সম্প্রতি ইরানের সংসদ বাধ্যতামূলক হিজাব আইন লঙ্ঘনকারীদের কঠোর শাস্তির বিধান রেখে একটি বিল পাস করলেও প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সরকার তা অনুমোদন করতে অস্বীকৃতি জানায়।
এর আগে ২০২৩ সালে শিরাজ শহরের এক ক্রীড়া ইভেন্টে হিজাববিহীন নারীদের অংশগ্রহণের ঘটনায় দেশটির অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের প্রধানকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
এনএইচ/